গায়ে হলুদের গহনা
আবার আজকাল আসল ফুলের বদলে রকমারি ডিজাইনের কৃত্রিম ফুলের গহনা দেখা যায় কনেদের পরতে
রবিউল কমল
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সাধারণত বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় কনে-বরকে হলুদ লাগিয়ে। বিয়ের এ পর্বকে বলা হয় ‘গায়ে হলুদ’। বিয়ের দিনের মতো এদিনে খুব ঝামেলা না থাকলেও ছোট ছোট কিছু দিক সব সময় খেয়াল রাখতে হয়। যেমন বর-কনের ডালা সাজানো, ফুলের গহনা তৈরি, অতিথিদের জন্য উপহার কেনা, হলুদের স্টেজ সাজানো ইত্যাদি। তবে এগুলোর মধ্যে কনের গহনার বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এখন জেনে নিন গায়ে হলুদের গহনা কেমন হবে-
এক সময় গাঁদা আর রজনীগন্ধা ফুল দিয়েই হলুদবরণ কনে সাজানো হতো। তবে এখন ফুলের গহনায় এসেছে পরিবর্তন। এখন কেবল কাঁচা ফুল দিয়েই নয়, কখনও শুকনো ফুল আবার নানা রঙের ফুল দিয়ে করা হয় গায়ে হলুদের গহনার সাজ।
গায়ে হলুদের গহনা নিয়ে কাজ করেন এলিফ্যান্ট রোডের ‘বিয়ের সাজ’। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার আফরোজা বানু বলেন, ‘কাঁচা ও শুকনো দু’ধরনের ফুল দিয়েই গহনা তৈরি করছি। ক্রিসেনথিমাস আর বিভিন্ন রঙের অর্কিড দিয়ে হলুদের গহনা তৈরি করা হয়। এ দুই ধরনের ফুল আকারে ছোট, তাই গহনা বানালে দেখতে দারুণ লাগে। রঙের ক্ষেত্রে সাদা, সবুজ, বেগুনি, গোলাপি ও লালকে প্রাধান্য দেয়া হয়।’
ফুল ছাড়াও এখনকার সময়ে হলুদের গহনা তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে মুক্তা, ক্রিস্টাল, পাথর আর বিভিন্ন ধরনের পুঁতি। মুক্তার ব্যবহারে গহনা অনেক বেশি জমকালো দেখায়। এ ছাড়া কানের দুল, মাথার টায়রা, টিকলি, রতনচুর, আংটিসহ চেইন দিয়ে সংযুক্ত পায়ের অ্যাংকলেট, গলার বিভিন্ন ধরনের মালা, সীতাহার তো আছেই। আবার ক্রেতার ফরমায়েশ অনুযায়ী কণ্ঠ চিকও তৈরি করে দিচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। তবে হলুদের গহনাতে যে রঙের পোশাক পরানো হচ্ছে, এর সঙ্গে মিল রেখে, আবার কখনও বিপরীত রঙের ফুল নির্বাচন করতে হয়। আকারে ছোট শুকনো ফুলের গহনা একইভাবে বানানো হয়। তবে ফরমায়েশটা দিতে হয় হাতে সময় রেখে। যেমন গহনাই পরা হোক না কেন, ফুলের আকার ছোট হলেই ভালো। আর সাজে একটু ভিন্নতা আনতে চাইলে রুপা বা পুঁথির গহনাও পরা যেতে পারে। হাতে থাকতে পারে ফুলের গহনা। বাজুত ফুল এবং হাতভর্তি কাচের চুড়িও হলুদের সাজে আনতে পারে অনেকটা ভিন্নতা।
আবার আজকাল আসল ফুলের বদলে রকমারি ডিজাইনের কৃত্রিম ফুলের গহনা দেখা যায় কনেদের পরতে। ফেসবুকে এ সংক্রান্ত কিছু পেজ রয়েছে। যারা কাস্টমারদের পছন্দ অনুযায়ী অথবা নমুনা দেখে সুন্দর গহনা তৈরি করে দেয়। এ রকম একটি পেজ হল ওয়েডিং ডেকোর বাই নুসরাত। এ ছাড়া শাহবাগ, গাউসিয়া, এলিফ্যান্ট রোডের ফুলের দোকান এবং ডালার দোকানে স্যাম্পল অনুযায়ী অর্ডার দেয়া যায়। গুলশান ২-এর ওয়েস্টিন-এর পাশে কিছু ফুলের দোকান আছে। সেখানেও নান্দনিক সব হলুদের গহনা পাওয়া যায়।
হলুদের ফুলের গহনার সঙ্গে মিল রেখে কনের সাজের ক্ষেত্রেও কিছুটা বৈচিত্র্য আসে বলে জানান কাজী মেকওভারের কাজী আফরিন। তিনি বলেন, গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান মানেই কেবল লাল, ‘হলুদ আর সোনালি মেকআপ এমনটা মনে করা একেবারেই ঠিক নয়। বরং ভিন্ন ধাঁচের গহনার সঙ্গে মেকআপটা হবে আলাদা।’ চুল যেহেতু ঘোমটায় ঢাকা থাকে, তাই খোঁপা করা যেতে পারে। কিংবা বেণি করে এক পাশে সেট করে নেয়া যায়। বেণিতে ফুল পেঁচিয়ে নিলেও মন্দ লাগে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এসব গহনার দাম নির্ভর করে কী কী এবং কয়টা গহনা বানানো হল এসব বিষয়ের ওপর। বাজারে কাঁচা ফুলের গহনা কেনা যাবে সেটপ্রতি ছয় থেকে আট হাজার টাকা, আর শুকনো ফুলের গহনা কেনা যাবে চার থেকে আট হাজার টাকার মধ্যে।
