|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বিয়ের মাঝেই পূর্ণতা পায় নতুন একটি সম্পর্ক। নতুন এ সম্পর্কের শুরুতেই তাই কনে চায় নিজেকে প্রিয় মানুষটির কাছে নতুন বেশে নতুন করে তুলে ধরতে। তাই সাজের কোনো দিকেই থাকে না কোনো কমতি। আর বিয়ের সাজ মানেই ভারী ভারী গহনা, ভারী কাজের শাড়ি, হাতভরা চুড়ি আর খোঁপা জড়ানো সুভাষ ছড়ান ফুলের মালা। এত কিছুর পরেও যখন সাজের রঙের আভায় ঘাটতি আছে বলে মনে হয় তখন সাজের সেই অপূর্ণতাকে পূর্ণতা দেয় হাতভরা রাঙা মেহেদি। কনে সাজের পুরো লালচে আভার এ ছোঁয়া বিয়েতে আলাদা এক রঙের পূর্ণতা ছড়িয়ে দেয়। তাই তো কনের গায়ে, হলুদের ছোঁয়া পেয়েই কনে যখন বিয়ে রঙে নিজেকে সাজিয়ে তোলে তখন তাতে আরও রঙের ছোঁয়া বাড়িয়ে তুলতে হাতভরা মেহেদি তা ফুটিয়ে তোলে। মেহেদি ব্যবহারের এ বিষয়টিও চলে আসছে তাই যুগ যুগ ধরে। বিয়ের কেনাকাটা কিংবা বিয়ের ডালায় তাই মেহেদির উপস্থিতি আবশ্যক। তবে বর্তমান সময়ের বিয়েতে যেমন মেহেদির প্রচলন আছে তেমনি আগেও মেহেদির ব্যবহার ছিল বিয়েতে। সেই ক্ষেত্রে অনেক আয়োজন করে কনের হাতে মেহেদি দেয়া হতো সময় নিয়ে আর যত্নসহকারে। তাই মেহেদি বাটার বিষয়েও রাখা হতো বাড়তি নজরদারি। ভালো মানের পাতা বাছাই করে তা পাটায় বেটে কনের হাতে মেহেদির আলপনা আঁকা হতো। তবে মেহেদি দেয়ার এ বিষয়ে তা লাল আভা কতটা নিয়ে কনের হাতে ফুটে উঠবে এ নিয়েই থাকত সবার ভাবনার বিষয়। বর্তমান সময়ে সেই রঙের ক্ষেত্রে কিংবা আলপনায় ভিন্নতা এলেও রঙের ক্ষেত্রে ভাবনার বিষটি রয়ে গিয়েছে একই। তবে মেহেদি মানেই যেখানে শুধু লাল রঙের বিষটি থাকত সেখানে এসেছে কিছুটা পরিবর্তন। বর্তমানে লাল টকটকে রঙের মেহেদির যেমন- প্রচলন বাড়ছে লালচে রং কিছুটা কালচে হয়ে যাতে মেহেদির আলপনা ফুটে ওঠে সে দিকে রাখা হচ্ছে কনে পক্ষের বাড়তি নজর। একটা সময় পর্যন্ত যখন গোল বৃত্তাকারে ভরাট তালু আর হাতের আঙুলজুড়ে মেহেদি থাকত এখনকার সময়ে তাতে জায়গা করে নিয়েছে নানা ডিজাইন আর কারুকাজ। এসব কারুকাজের মধ্যে এরাবিক, মিসরীয় সাজের চাহিদা তাই সবচেয়ে বেশি। এসব ডিজাইনের মেহেদির ফাঁকে ফাঁকে অল্প পরিসরের জায়গাগুলোতে আবার যুক্ত করা হয় নানা রঙের গ্লিটার। এসব গ্লিটারের থাকে নানা রং। এসব রং নির্বাচনের ক্ষেত্রে কনে কোন রঙের পোশাক কিংবা গহনা পরেছে তার সঙ্গে মিল রাখা হয়। অন্যদিকে বিয়েতে কনের হাতে মেহেদির আলপনা দেয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই দুই হাতজুড়ে মেহেদি দিয়ে থাকেন। কেউ আবার হাতে অল্প পরিসরে মেহেদির নানা ডিজাইন করিয়ে থাকেন। তবে বর্তমানে মেহেদির আলপনার ক্ষেত্রে হাতের ওপরের অংশে ভারি কাজের চাহিদাই বেশি চোখে পড়ছে। তবে মেহেদির এ ডিজাইনের ক্ষেত্রে কনের কেবল হাতের যে মেহেদি দেয়া হয় তা কিন্তু না। অনেকেই হাতের কবজি পর্যন্ত মেহেদি দিয়ে থাকেন আবার অনেকেই কনুই পর্যন্ত নানা ধরনের ডিজাইন করিয়ে থাকেন। এছাড়া মেহেদির এ আলপনার ক্ষেত্রে অনেক পিঠাও টুকিটাকি ডিজাইন করিয়ে থাকেন যাতে বিয়ের সাজ আলাদা রূপ পায় সব সময় থেকে। অনেক ক্ষেত্রে মেহেদির ডিজাইনের বদলে বর-কনে, পালকি কিংবা গোলাপ অথবা টিউলিপ, লোটাসের নকশাও করিয়ে থাকেন অনেকে। অনেকেই আবার নকশার পাশাপাশি মেহেদির এ সাজের ক্ষেত্রে প্রিয় মানুষটির নাম লিখে থাকেন মেহেদির ডিজাইনের মাঝে মাঝে। এক্ষেত্রে এক একটি অক্ষর আলাদা আলাদা আলপনার মধ্যে দিয়ে কনের হাতের মেহেদির সাজে ফুটিতে তোলা হয়। আর এভাবেই কনেকে সাজিয়ে তোলা হয় বিয়ের সাজে অতুলনীয় ভাবে। যাতে করে নতুন জীবনের পথচলা শুরু হয়ে মেহেদির মতোই রঙিনভাবে নানা কারুকাজে।
কোথায় পাবেন
যমুনা ফিউচার পার্ক, রাজলক্ষ্মী, আজমপুর, নিউমার্কেটসহ আপনার আশপাশের শপিংমলে পেয়ে যাবেন মেহেদি।
দাম
মেহেদি টিউব আকারে ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। এছাড়া যদি সেমি ব্রাইডাল মেহেদির ডিজাইন করতে চান সেই ক্ষেত্রে আপনাকে গুনতে হবে ২০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা পর্যন্ত, ব্রাইডাল মেহেদি ৩৫০০ থেকে ৫৫০০ টাকা পর্যন্ত।
