Logo
Logo
×

ঘরে বাইরে

বন্ধুত্ব সর্বজনীন

বন্ধুকে শুভেচ্ছা জানাতে নিশ্চয়ই সবাই বিশেষ আয়োজন করবেন। কিংবা আয়োজনে ঘনঘটা না থাকলেও প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে কাটাবেন কিছুটা সময়

Icon

তৌফিক অপু

প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যখন আকাশের ঘনকালো আঁধার করা মেঘের রাজ্যে ডানা ঝাঁপটাতে ওই পাখির আর ভালো লাগে না, তখন তৃষ্ণার্ত পায়েল পরা পাখির খুব সাধ জাগে রিমঝিম বৃষ্টির গানের সুরে ভিজতে কিংবা অপলক দৃষ্টিতে রোদ্দুর হাসি দেখতে। বৃষ্টি, রংধনু কিংবা রোদ নামধারী ওরা সবাই আসলে পাখির বন্ধু, কখনও বা আঁধার করা মেঘও। ‘বন্ধু’ হল এমনই একটা স্বচ্ছ আয়না যাকে বলতে হয় না, বোঝাতে হয় না, অনুরোধ করতে হয় না কিংবা প্রয়োজন হয় না উপদেশ দিয়ে মনের কথা প্রকাশ করার। পারস্পরিক সমঝোতা, শ্রদ্ধাবোধ এবং ভালোবাসার অগাধ বিশ্বাসের সেতুবন্ধন হল বন্ধুত্ব। বন্ধুত্বের দুয়ার এতটাই বিশাল যে, বয়স, ধর্ম, গোত্র হিংসা, স্বার্থপরতা, লোভ, সব কিছুর ঊর্ধ্বে পবিত্র এই সম্পর্ক হয়ে থাকে বাবা-মায়ের সঙ্গে, ভাই-বোনের সঙ্গে, সহপাঠীর সঙ্গে, সহকর্মীর সঙ্গে এমনকি তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে বিশ্বের অন্য প্রান্তে না দেখা কারও সঙ্গে। বন্ধুত্ব আকাশের মতোই অসীম আর সাগরের ঢেউয়ের মতো উচ্ছল যার কাছে গেলে সব কষ্ট ধুয়ে যায়। বন্ধুত্বের ভালোবাসার কাছে অনেক কিছুই ম্লান হয়ে যায়। আর তাই তো ভালোবাসা দিবস উদযাপিত হয় বন্ধুত্বের ভালোবাসায়।

নতুন অভিজ্ঞতা

ছেলেবেলা! কিংবা মেয়েবেলা! যা-ই বলি না কেন স্কুল শুরুর দিনগুলোতে আমাদের অনেকেরই নতুন অভিজ্ঞতার নাম হয়তো একটাই, বন্ধুত্ব! পরিবারের গণ্ডি ছাড়িয়ে চেনা জগৎটা যে এক লাফে অনেক দূর চলে গিয়েছিল সে তো বন্ধুদের হাত ধরেই। জীবনের পথে হাঁটতে হাঁটতে আজ যে যেখানেই থাকি না কেন চলার পথে বন্ধুত্ব নামের এই পাথেয়টির তুলনা বোধ হয় আর কিছুর সঙ্গেই চলে না। এ এমনই বিষয় যেন কিছু না থাকলেও বন্ধুত্ব থাকলে চলে আবার সব থাকলেও বন্ধুত্ব ছাড়া চলে না! নানা সংস্কৃতিতে, নানা দেশে বন্ধুত্বের রীতিনীতিতে আগেও যেমন ভিন্নতা ছিল, এখনও তেমনি ভিন্নতা আছে। কিন্তু বন্ধুত্ব তো তাই যাকে কোন নিক্তি দিয়ে মাপা যায় না, সংজ্ঞা দিয়ে বাঁধা যায় না। হয়তো তার প্রয়োজনও নেই। তবু মানুষ যুগে যুগে দেশে দেশে বন্ধুত্বকে যেমন উদযাপন করেছে তেমনি একে ব্যাখ্যা করারও চেষ্টা করেছে।

বন্ধু নিয়ে...

এমন এককাল তো ছিলই যখন ‘ছেলেতে-মেয়েতে’ বন্ধুত্ব হলে তা কেবল ভালোবাসা-প্রেমের সম্পর্ককেই বোঝাত! কিন্তু এই যুগ সেসব পেছনে ফেলে অনেক দূরই এগিয়েছে। তবু বিষয়টি আরও স্পষ্ট করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা দিয়ে শুরু করা যেতে পারে ‘বন্ধুত্ব বলিতে তিনটি পদার্থ বোঝায়। দুই জন ব্যক্তি ও একটি জগৎ। অর্থাৎ দুই জনে সহযোগী হইয়া জগতের কাজ সম্পন্ন করা।

বন্ধু মোতাহার হোসেন চৌধুরীকে লেখা চিঠিতে নজরুল নিজের আবেগকে এভাবেই প্রকাশ করেছিলেন, ‘আমার চোখের জলের মতিহার, বাদল রাতের বুকের বন্ধু। যেদিন এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর আর সবাই আমায় ভুলে যাবে, সেদিন অন্তত তোমার বুক বেঁধে উঠবে।

বন্ধুর জন্য উপহার

পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকে উৎসারিত হলেও বন্ধুত্ব সর্বজনীন। আজকের এই দিনে প্রাণের বন্ধুকে শুভেচ্ছা জানাতে নিশ্চয়ই সবাই বিশেষ আয়োজন করবেন। কিংবা আয়োজনে ঘনঘটা না থাকলেও প্রিয় বন্ধুর সঙ্গে নিশ্চয়ই মিলবেন। জানতে চাইবেন, বন্ধু কী খবর বল? কতদিন দেখা হয়নি...। সামাজিক ওয়েবসাইট ফেসবুক, টুইটার, মোবাইল ফোনে চলবে এসএমএস আদান-প্রদান। শুভেচ্ছা আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে নিত্যনতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হওয়ায় কার্ডের প্রচলন হারিয়ে যেতে বসেছে। পাশাপাশি ফুল, চকোলেট, অন্যান্য উপহার সামগ্রী দেবেন কেউ কেউ। কী দেবেন বন্ধুকে আপনার বন্ধু যদি মেয়ে হয়, তাহলে দিতে পারেন গয়না, হাতঘড়ি, সুগন্ধি, শুভেচ্ছা কার্ড, শোপিস, চকোলেট বক্স, মগ, কাঠের তৈরি গয়নার বাক্স, মোমদানি, ফুলদানি, পেইন্টিংস, ফটোফ্রেম, পোশাক, ডায়রি, নোটবুক, মিউজিক প্লেয়ার, মেকআপ বক্স, প্রসাধনী, বই, শপিং মল বা বিউটি পার্লারের ডিসকাউন্ড কুপন ইত্যাদি। আপনার বন্ধু যদি ছেলে হয়, তাহলে দিতে পারেন হাতঘড়ি, সুগন্ধি, শুভেচ্ছা কার্ড, মানিব্যাগ, পোশাক, রোমান্টিক গানের সিডি, বেল্ট, সিডি, ফটোফ্রেম, কলম, কোর্টপিন, টাই, অফিস ব্যাগ, জুতা ইত্যাদি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম