|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফুলের রাজ্যে বকুল ফুল তার মিষ্টি ঘ্রাণের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। দেখতে ছোট হলেও এর ঘ্রাণ থাকে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত। তাই প্রেয়সীর খোঁপা সাজিয়ে তুলতে কিংবা মিষ্টি সুবাসে চারপাশ ভরিয়ে রাখতে এক মুঠো বকুল ফুল তুলে রাখেন অনেকেই। শুকিয়ে যাওয়া ফুলের ঘ্রাণও থাকে লম্বা সময় পর্যন্ত। তাই কৈশোরের ভালোবাসায় পৃষ্ঠাবন্দি বকুল ফুল কিংবা পুরোনো চিঠির ভাঁজে ভাঁজে খুঁজে পাওয়া যায় বকুল ফুলের সুবাস। বর্ষা ঋতুর এ ফুল বৃষ্টিস্নাত সকাল যেমন তার মিষ্টি ঘ্রাণে মাতিয়ে রাখে তেমনি আবার সন্ধ্যার আলো ফুরিয়ে এলে রাতের চাঁদের সঙ্গেও সারা রাত জুড়ে বকুলতলা সাদা ফুলে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে সুবাসে সুবাসে। মূলত ছায়ার জন্যই বকুল ফুলের গাছ বাড়ির আঙ্গিনায় কিংবা বাগানের কোনায় রোপণ করা হয়। মাঝারি আকারের এ গাছে ফুল বড়জোর ১ সে.মি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর পাতা ঢেউ খেলানো সবুজের সমারোহে সারা গাছ ভরিয়ে রাখে স্নিগ্ধতায়। বকুল ফুল এক এক জায়গাতে এক এক নামে পরিচিত হয়ে থাকে। বহুল, বুকাল বাকুল, বাকাল কিংবা বকুল ফুল নামেও এ মিষ্টি ঘ্রাণের ফুল পরিচিত সবার কাছে। বকুল ফুলের পাশাপাশি এর ফলও হয়ে থাকে। দেখতে গোলাকার কিংবা বরইয়ের মতো এ ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ আর পাকা অবস্থায় লাল বর্ণের হয়ে থাকে। রং পরিবর্তনের এ ধারাটি দেখতে দারুণ লাগে পুরো সাদা ফুল ভর্তি বকুল ফুলের মাঝে। এ ফলের স্বাদ কিছুটা মিষ্টি সঙ্গে কষযুক্ত হয়ে থাকে। বকুল ফুলের নিজস্ব এই সৌন্দর্য ছাড়াও আছে ঔষধি নানা গুণাবলি। যাদের প্রচণ্ড মাথাব্যথার সমস্যা আছে তারা বকুল ফুল শুকিয়ে তার গুঁড়া নাকে নিশ্বাসের সঙ্গে নিলে মাথাব্যথা থেকে আরাম মিলে। কোথাও কেটে গেলে সেখানে বকুলের ছাল দিয়ে পরিষ্কার করে নিলে খুব সহজেই ক্ষত স্থান ভালো হয়ে ওঠে। এ ছাড়া পাকা বকুল ফুলের খোসা আমাশয়, কোষ্ঠকাঠিন্য সঙ্গে শরীরের শক্তি বাড়াতে বেশ উপকারী। এ ছাড়া বকুল ফুল, এ গাছে ছাল কিংবা ফলের বিভিন্ন অংশ জ্বর, সর্দি ঠান্ডা, দাঁতের গোড়া শক্ত করতে কিংবা যাদের দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে তাদের ক্ষেত্রেও বেশ উপকারী। অন্যদিকে বাড়ির আঙিনায় বকুলের ছায়া আপনার আশপাশে যেমন সুন্দর এক পরিবেশ সৃষ্টি করে তেমনি ফুলের মিষ্টি ঘ্রাণ দূর পর্যন্ত জানিয়ে দেয় বর্ষায় বকুলের আগমন বার্তা।
