Logo
Logo
×

ঘরে বাইরে

জেনে নিন

বর্ষার পুষ্টিকর ফল

Icon

চয়ন বিকাশ ভদ্র

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চলছে বর্ষা মৌসুম। আষাঢ় শেষে এসেছে শ্রাবণ। এ সময়ের উল্লেখযোগ্য ফল হচ্ছে লটকন, আমড়া, জাম্বুরা, জামরুল, ডেউয়া, ড্রাগন, করমচা, কামরাঙা, কাউ, গাব ইত্যাদি। এ ফলগুলোতে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও পুষ্টি।

লটকন : লটকন এক ধরনের দেশীয় ও অপ্রচলিত ফল; যা অত্যন্ত পুষ্টি ও ঔষধিগুণে ভরপুর। ফলের খোসা ছাড়ালে ৩-৪টি রসালো অম্লমধুর স্বাদের বীজ পাওয়া যায়। বর্তমানে নরসিংদী জেলা সদর, শিবপুর, রায়পুরা ও বেলাব উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লটকন চাষ হচ্ছে।

লটকন ভিটামিন বি২ সমৃদ্ধ ফল। ভিটামিন বি২ শরীরের জন্য খুব প্রয়োজনীয় উপাদান। লটকনের যেমন পুষ্টিগুণ রয়েছে, তেমনি তার ঔষধিগুণও রয়েছে। এ ফল খেলে বমি বমি ভাব দূর হয় ও তৃষ্ণা নিবারণ হয়। এ ছাড়া পর্যাপ্ত আয়রন বা লৌহ উপাদান থাকায় দেহের রক্তশূন্যতা দূর হয়।

আমড়া : আমড়া টক বা টক মিষ্টি হয়; পাকলে টকভাব কমে আসে এবং মিষ্টি হয়ে যায়। বীজ কাঁটাযুক্ত। এ ফল কাঁচা ও পাকা রান্না করে বা আচার বানিয়ে খাওয়া যায়। আমড়া আগস্ট মাসে বাজারে আসে।

আমড়া কষ ও অম্ল স্বাদযুক্ত ফল। আমড়ায় ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-বি পাওয়া যায়। আমড়ায় যথেষ্ট পরিমাণ পেকটিনজাতীয় ফাইবার এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় উপাদান থাকে।

জাম্বুরা : এর আরেক নাম বাতাবিলেবু। এক ধরনের লেবু জাতীয় টক-মিষ্টি ফল। এর ভেতরের কোয়াগুলো সাদা বা গোলাপি রঙের। এর খোসা বেশ পুরু এবং খোসার ভেতর দিকটা ফোমের মতো নরম। জাম্বুরা ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল। এর পুষ্টিমান অনেক উন্নত। ঠান্ডা, সর্দি-জ্বরজনিত কারণে জাম্বুরা খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। এটি শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। নিয়মিত জাম্বুরা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় ও পেটের নানা রকম হজমজনিত সমস্যার প্রতিকার পাওয়া যায়।

কামরাঙা : কামরাঙা একটি টক-মিষ্টি ফল। কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং পাকলে হলুদ। কামরাঙা টক স্বাদযুক্ত বা টক-মিষ্টি হতে পারে। কোনো কোনো গাছে একাধিকবার বা সারা বছরই ফল পাওয়া যায়। এটি ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’-এর ভালো উৎস। কামরাঙা পাকার পরপরই খেতে সবচেয়ে ভালো; যখন হলদেটে রং ধারণ করে।

ড্রাগন ফল : এটি পিতায়া নামেও পরিচিত। অন্যান্য নাম হলো স্ট্রবেরি নাশপাতি বা নানেট্টিকা ফল। এ ফলটি একাধিক রঙের হয়ে থাকে। তবে লাল রঙের ড্রাগন ফল বেশি দেখা যায়। আমাদের দেশে এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ ফলের চাষ হয়। প্রফেসর ড. এমএ রহিম এ ফলের জাত নিয়ে আসেন থাইল্যান্ড, ফ্লোরিডা ও ভিয়েতনাম থেকে।

বেশকিছু প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেলে ড্রাগন ফল থেকে। এগুলো আমাদের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ মেলে ফলটি থেকে। নিয়মিত খেলে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

ডেউয়া : এ ফল দেখতে কাঁঠালের মতো, তবে আকারে ছোট, গোলাকার, অসমান, খসখসে ও একাধিক ভাঁজযুক্ত। ডেউয়া কাঁচা অবস্থায় সবুজ এবং জুলাই-আগস্ট মাসে পরিপক্ব ফল হলদে-সবুজ থেকে কমলা-লালচে বর্ণের হয়। এর প্রতিটি কোয়ার সঙ্গে বীজ থাকে। ফলের হলুদ পাল্পের মধ্যে বীজগুলো ছোট গোলাকার সাদাটে বর্ণের। ফল ক্ষুধা ও শক্তিবর্ধক।

জামরুল : জামরুল মাঝারি আকারের চিরসবুজ গাছ। ফল পাকে গ্রীষ্ম-বর্ষায়। ফল দেখতে নাশপাতির মতো। এর গঠন, আকৃতি ও গায়ের রং সবাইকে মুগ্ধ করে। এটি গ্রীষ্মের প্রচণ্ড দাবদাহে আমাদের তৃষ্ণা মেটায়। ফলের খোসা নেই, তার বদলে থাকে স্বচ্ছ মোমের মতো আবরণ। জামরুল বেশ রসালো একটি ভিটামিন বি-২ সমৃদ্ধ ফল। এ ফল বহুমূত্র রোগীর তৃষ্ণা নিবারণে উপকারী। জামরুল হালকা মিষ্টি স্বাদযুক্ত।

শরীরের নানা ধরনের ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়তে জামরুলের জুড়ি নেই। ভিটামিন ‘সি’ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ জামরুল হজমশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। যাদের পেটে হজমের সমস্যা তারা জামরুল খেতে পারেন। জামরুল ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম