ওয়েস্টার্ন পোশাকে ঈদ
ফ্যাশনে আধুনিক আর আরামদায়ক হওয়ার কারণে ওয়েস্টার্ন পোশাক পরতে এখন পছন্দ করেন অনেকেই। তরুণী আর টিনেজাররা ঈদকে সামনে রেখে নিজেকে পার্টি লুকে সাজাতে এখন ঢুঁ মারছেন ওয়েস্টার্ন পোশাকের দোকানে। বাজার ঘুরে ঈদে পশ্চিমা পোশাকের খোঁজ জানাচ্ছেন- আফরোজা আক্তার
প্রকাশ: ১৩ আগস্ট ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ফ্যাশন এমন একটি বিষয় যা কোনো ভৌগোলিক সীমারেখায় বা সময় দিয়ে আটকানো যায় না। ইন্টারনেটের এ যুগে তাই তো আমাদের দেশের ফ্যাশনও ছুঁয়েছে পাশ্চাত্যের হাওয়া। যা আমাদের ফ্যাশন ট্রেন্ডে নতুনমাত্রা যোগ করেছে। বর্তমানে পশ্চিমা পোশাকের মধ্যে জনপ্রিয়তায় এগিয়ে আছে টি-শার্ট, টপস, লং স্কার্ট, কেইপ, জিন্স, ম্যাক্সিড্রেস, সামার জ্যাকেট, টিউনিক টপস, শার্ট টপস, গাউনসহ বিভিন্ন ধরনের ওয়েস্টার্ন পোশাক।
‘সাধারণত টপস, কুর্তি, গাউনের মতো ওয়েস্টার্ন পোশাকে ডিজাইন করা হয় দুই অংশে-বডি ও বটম এবং প্যাটার্ন। কোন ঈদে বডি কিংবা বটমের নকশা প্রাধান্য পায়, তো কোন ঈদে প্যাটার্ন। তারুণ্যের পছন্দের বিষয়টি মাথায় রেখে এ ঈদে বডি ও প্যাটার্ন দুটোতেই সমানভাবে বৈচিত্র্য চোখে পড়বে’ বলে জানান রঙ বাংলাদেশের সাব ব্র্যান্ড ওয়েস্ট রঙের সিনিয়র ডিজাইনার মোহাম্মদ ফয়সাল। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ওয়েস্ট রঙে একটু হালকা, ন্যুড কালারগুলোতে গুরুত্ব দিয়েছি। জর্জেট, সিল্ক, চায়না ফেব্রিকসহ বিভিন্ন ধরনের সিনথেটিক তবে আরামদায়ক ফেব্রিকে সাজানো হয়েছে ওয়েস্ট রঙের ওয়েস্টার্ন কালেকশন’।
টপস, গাউন, লং স্কার্ট, টিউনিক, কেইপ, ম্যাক্সিড্রেসে ঘুরে-ফিরে এবারও লং প্যাটার্ন দেখা যাবে। বেশি ঘেরের ফোলানো লং স্কার্ট আর সেমি লং টপস এখন দারুণ জনপ্রিয়। এবার ঈদে ফ্লোরাল প্রিন্টের লং স্কার্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কেইপ বেশ কয়েক বছর ধরে ফ্যাশনে ইন থাকলেও এ বছরও জনপ্রিয়। কেইপের গলায় স্টোনের কাজ এবং হাতার কাছটায় লম্বা ফাড়া নকশার চাহিদা বেশি। টিউনিক, টপস, পালাজ্জোতে এসেসট্রিক কাট অর্থাৎ পোশাকের পেছনে লম্বা এবং সামনের খাটো কাট এ ঈদের ট্রেন্ডি কাট হিসেবেও দেখা যাবে। পশ্চিমা পোশকের হাতাতেও এখন ব্যবহার হচ্ছে নানা ধরনের কাটছাঁট। কোল্ড শোল্ডার, অফ শোল্ডার, বেল বটমসহ আরও কত কী! নতুনত্ব এসেছে নেক লাইনেও। বড় গোল গলা থেকে শুরু করে বোট নেক, ব্যান্ড কলার, হাইনেক সবই দেখা যাবে। উৎসবধর্মী করে তুলতে কুর্তি, টপস, টিউনিক, গাউনে লেয়ার, ফ্লেয়ার এবং ফ্রিলের ব্যবহার বেড়েছে। এতদিন প্লেইন টিউনিক শার্ট দেখা গেলেও এবার উঁচু-নিচু, কোনা বের হওয়া, জ্যামিতিক কাট টিউনিক শার্ট জনপ্রিয়।
টপসের দৈর্ঘ্য আগের তুলনায় বেড়েছে। এখন হাঁটু সমান বা তার থেকে লম্বা টপসের প্রচলন বেশি দেখা যায়, যা অনেকটা দেশীয় এবং পাশ্চাত্যের ফিউশন। ওয়েস্টার্ন পোশাকের সঙ্গে চাইলে স্কার্ফ বা ফেন্সি ওড়না ব্যবহার করে নতুনত্ব আনতে পারেন এবং পরিবেশ উপযোগী করে তুলতে পারেন।
ঈদ পোশাকে এবার সামার জ্যাকেটও দেখা যাবে। জ্যাকেট বলে গরম লাগবে ভাবলে ভুল করবেন। জ্যাকেট হলেও আদলে পোশাকটি খুব পাতলা ও আরামদায়ক। সুতি, জর্জেট, শিফন, লিনেনের তৈরি সামার জ্যাকেট কুর্তি এবং ট্যাংক টপ কিংবা পালাজ্জোর সঙ্গে পরা যাবে। হাতাকাটা ম্যাক্সি ড্রেসের ওপরে জর্জেটের সামার জ্যাকেট কিংবা কেইপ স্টাইলে বৈচিত্র্য আনবে। ক্রপড, মিড লেংথ, লং বিভিন্ন ধরনের সামার জ্যাকেট পাওয়া যাবে ঈদ বাজারে। গাউনের চাহিদা কিছুটা কম থাকলেও ঈদে গাউনে বেশ কিছু নতুন ডিজাইন এসেছে। ভিন্নতা আনতে গাউনের ওপরে কটি পরতে পারেন।
ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরার আগে মনে রাখতে হবে এটা আমাদের রুচি, সংস্কৃতি ও সমাজের সর্বক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য কিনা এবং আমাকে মানাচ্ছে কিনা। ক্যাজুয়াল ড্রেস আর ফর্মাল ড্রেসের সাজ অবশ্যই ভিন্ন হবে। ফর্মাল প্যান্ট-শার্টের সঙ্গে একেবারেই লাইট সাজ আর ছোট অর্নামেন্টস ভালো লাগবে। ক্যাজুয়াল শার্টের সঙ্গে বড় মালা আর হাতে মোটা ব্যাঙ্গেলস মানাবে। প্যান্টের সঙ্গে টি-শার্ট পরলে কানে ও গলার গহনা নির্ভর করবে টি-শার্টের গলার ধরনের ওপর। হাই নেক টি-শার্টের গলা আড়ালে থাকে বলে গহনা মানানসই নয়। লো নেক টি-শার্টে গলায় লকেট বেশ মানিয়ে যায়।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, লং স্কার্ট ১,২০০-৫,০০০ টাকা। কেইপ, টপস ও টিউনিক ৬০০-৫,০০০ টাকা। গাউন ২,০০০-১০,০০০ টাকা, টি-শার্ট ৩০০-১,২০০ টাকা। ওয়েস্টার্ন পোশাকের তালিকায় সেইলর, ইনফিনিটি, গ্রামীণ উইনিক্লো,মার্জিন, রঙ বাংলাদেশের ওয়েস্ট রঙ, ইয়াংকে, ইয়োলো, লা-রিভসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউস এখন জনপ্রিয়।
