পুষ্টিগুণ
কাঁঠালের উপকারিতা
মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কাঁঠালের বার্গার ভালো না মন্দ, তা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হতেই পারে। তবে কাঁঠালের যে পুষ্টিগুণের কমতি নেই, সেটা জাতীয় ফল কাঁঠাল যারা পছন্দ করেন না, তারাও স্বীকার করবেন বৈকি। পুষ্টিগুণে ভরপুর কাঁঠাল। কাঁঠালে বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন এ, সি, বি-১, বি-২, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়ামসহ নানা রকমের পুষ্টি ও খনিজ উপাদান পাওয়া যায়। এসব উপাদান আমাদের শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি ভিটামিনের চাহিদাও পূরণ করে কাঁঠাল। কাঁঠালে সামান্য পরিমাণ প্রোটিনও পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম পাকা কাঁঠালে ১.৮ গ্রাম, কাঁচা কাঁঠালে ২০৬ গ্রাম ও কাঁঠালের বিচিতে ৬.৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়। এ প্রোটিন দেহ গঠনে সাহায্য করে। কাঁঠালে রয়েছে শ্বেতসার। পাকা কাঁঠালে ০.১ গ্রাম, কাঁচা কাঁঠালে ০.৩ ও কাঁঠালের বিচিতে ০.৪ গ্রাম শ্বেতসার পাওয়া যায়। কাঁঠালে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। এ ভিটামিন দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁঠালের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান চোখের রেটিনার ক্ষতি প্রতিরোধ করে। কাঁঠাল হজমে সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিহত করে। কাঁঠাল পাকা এবং কাঁচা দুই অবস্থায়ই খাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠালের পুষ্টিগুণও কম নয়। কাঁঠালের বিচির ভর্তা খুব সুস্বাদু। আবার বিচি ভেজেও খাওয়া যায়। কাঁঠাল খেলে ওজন বেড়ে যায়, এমনটি যারা ভাবছেন, তাদের জন্য সুখবর। কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ খুবই কম। সে কারণে ওজন বাড়ার শঙ্কা নেই। বরং কাঁঠাল বেশি খেলে পেট ভরে রেখে ওজন কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ কৃষি তথ্য সার্ভিসের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সর্বত্রই কাঁঠাল হয়। তবে লালচে মাটি ও উঁচু এলাকায় এর ফলন বেশি। কাঁঠালের রাজধানী বলা হয় গাজীপুর জেলাকে। কাঁঠাল উৎপাদনে বিশ্বের দ্বিতীয় বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশে ৭৬ হাজার ২৯৫ হেক্টর জমিতে কাঁঠাল চাষ হচ্ছে এবং মোট উৎপাদন ১৭ লাখ ৫১ হাজার ৫৪৯ টন (সূত্র : উদ্যানতত্ত্ব অনুবিভাগ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর)। কাঁঠাল দিয়ে রূপচর্চা করার সুযোগ আছে। কাঁঠালের বিচিতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি চুলের ফলিকলকে ফ্রি র্যাডিকেল নামের ক্ষতিকর অণুর হাত থেকে রক্ষা করে। এ ফ্রি র্যাডিকেল চুলকে খুব বাজেভাবে ড্যামেজ করতে পারে। মজবুত চুলের জন্য কাঁঠালের বিচিতে হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের কাঁঠাল খাওয়ায় কিছুটা বিধিনিষেধ আছে। যাদের রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি, তাদের কাঁঠাল ভেবে চিন্তে খাওয়াই ভালো। তবে যদি কোনো ডায়াবেটিস রোগী দিনে পাকা কাঁঠালের তিন থেকে চারটি কোষ খান, তাহলে ওইদিন অন্য কোনো মিষ্টি ফল খাবেন না। কিন্তু সবার রোগের তীব্রতা সমান নয়, তাই কাঁঠাল যদি খেতেই হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়াই ভালো।
