|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সম্প্রতি আকস্মিক বন্যায় দেশের অনেক এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন লাখ লাখ পরিবার। এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য এলাকা হলো-ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ ও রাঙামাটি। কিছু এলাকায় পানি কমতে শুরু করলেও বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। সব মিলিয়ে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের জীবনযাপন আছে বিপর্যয়ের মুখে।
বন্যায় করণীয় : বন্যার পানি বাড়ির কাছাকাছি আসার আগে স্থানীয় আশ্রয় কেন্দ্র বা উঁচু নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। আর বাড়িঘর ছেড়ে যাওয়ার সময় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দিন। বন্যা শেষে আবার যখন বাড়িতে ফিরবেন, তখন গ্যাস বা বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক আছে কি না পরীক্ষা করে নিন। সম্ভব হলে বন্যা মোকাবিলায় আগে থেকেই বাড়ির ভিটা, নলকূপ, টয়লেট উঁচুতে তৈরি করুন। প্রয়োজনে শস্য ও বীজ সংরক্ষণের জন্য নিরাপদ মাচা ও গৃহপালিত পশুর জন্য নিরাপদ স্থান নির্মাণ করুন।
বন্যার আভাস পেলে মুড়ি, চিড়া, গুড়, চিনি বা শুকনো জাতীয় খাবার সংরক্ষণ করুন। বিশেষ করে বিশুদ্ধ খাবার পানি সংরক্ষণের জন্য চৌবাচ্চার ব্যবস্থা করুন। এছাড়া সহজে বহনযোগ্য চুলা ও রান্না করার জন্য শুকনো জ্বালানির ব্যবস্থা রাখুন। বাড়ির বৃদ্ধ, শিশু, শারীরিক প্রতিবন্ধী বিশেষ করে গর্ভবতী নারীর দিকে বিশেষ নজর রাখুন। এছাড়া টাকা, জমির দলিল, শিক্ষা সনদসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিরাপদে রাখুন। পানিবাহিত বিভিন্ন রোগের ওষুধ ও প্রাথমিক চিকিৎসা সরঞ্জাম সংরক্ষণে রাখুন।
বিশুদ্ধ পানি পান : মূলত বন্যার সময় ময়লা-আবর্জনা, মানুষ ও পশুপাখির মলমূত্র ও পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা একাকার হয়ে যায় এবং এসব উৎস থেকে জীবাণু ছড়ায়। টিউবওয়েলের বিশুদ্ধ পানি পাওয়া না গেলে বিভিন্ন জলাশয়ের পানি পান ও ব্যবহার করা যেতে পারে।
ডায়রিয়া হলে করণীয় : বন্যার সময় ডায়রিয়া বেশি দেখা দেয়। ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। লবণ ও পানির অভাব পূরণ করাই এর একমাত্র চিকিৎসা। শরীর থেকে যে পরিমাণ পানি বেরিয়ে যায়, তা যদি দ্রুত ফিরিয়ে আনা সম্ভব না হয়, মানুষ তখনই অসুস্থ হয়ে পড়েন ও শরীরে লবণ পানির ঘাটতি দেখা দিলে মৃত্যু হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।
বন্যার সময় চর্ম রোগ : বন্যার পানি গোসল বা গায়ে লাগানো থেকে বিরত থাকুন। কেননা এ পানি বিভিন্ন জীবাণুর ধারক ও বাহক। তাই এ পানির সংস্পর্শে বিভিন্ন চর্ম রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। সব সময় পানির সংস্পর্শে থাকার জন্য হাতে-পায়ে স্যাঁতসেঁতে ও ভেজা আবহাওয়ার কারণে ত্বক বা ত্বকের খোসপাঁচড়া, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, প্যারনাইকিয়া, স্ক্যাবিস জাতীয় নানা ধরনের ত্বকের অসুখ হয়ে থাকে।
বন্যায় টিউবওয়েল ডুবে গেলে করণীয় : যেসব টিউবওয়েল বন্যায় ডুবে গেছে, সেগুলোর পানি ডিসইনফেকশন না করে পান করবেন না। নিজেরাই করতে পারেন এ কাজ। ১০০ গ্রাম ব্লিচিং পাউডারের সঙ্গে দেড় থেকে দুই লিটার পরিমাণ পানি একটি জগ বা পাত্রে ভালো করে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর টিউবওয়েলের মূল অংশটি পাইপ থেকে খুলে পাইপের মধ্যে সেই মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এরপর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। টিউবওয়েলের মূল অংশটি লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট, প্রয়োজনে আরও বেশি সময় ধরে হাতল চাপতে থাকুন।
