Logo
Logo
×

ঘরে বাইরে

জেনে নিন

খেতে পারেন মিষ্টি আলু

Icon

মেজবাহ মুকুল

প্রকাশ: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

স্বাদ আর পুষ্টিতে ভরপুর মিষ্টি আলুকে পুষ্টিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা স্বাস্থ্যকর সবজি বলে উল্লেখ করেছেন। প্রায় সারা বছরই বাজারে পাওয়া যায় এ সবজি। তবে শীতে একটু বেশি পাওয়া যায়। পুড়িয়ে কিংবা সিদ্ধ খেতে দারুণ মজা। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতে কেন নিয়মিত খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কারণ শীতে লেগে থাকা সর্দি-জ্বর-কাশিসহ নানা রোগবালাই প্রতিরোধে মিষ্টি আলু খুবই কার্যকরী। শীতে জমে যাওয়া রোধ ও শরীরে উষ্ণতা ধরে রাখতে মিষ্টি আলু হতে পারে আদর্শ খাবার। তাহলে জেনে নেওয়া যাক শীতে মিষ্টি খাওয়ার আরও কি উপকারিতা? লিখেছেন-মেজবাহ মুকুল

শীতে কেন সুপারফুড : শীতের সুপারফুড হিসাবে খ্যাত মিষ্টি আলু শরীরের অনেক উপকারে আসে। ২০০ গ্রাম মিষ্টি আলুতে ১৮০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। আরও রয়েছে ৪ গ্রাম প্রোটিন, ফাইবার ৬.৬ গ্রাম এবং কার্বোহাইড্রেট ৪১.৪ গ্রাম। আরও রয়েছে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, কপার, নিয়াসিন ম্যাঙ্গানিজসহ খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এসব পুষ্টি শীতে শরীরকে সুস্থ রোগ থেকে রক্ষা করে। তাই সকাল সন্ধ্যা দুই পিস সিদ্ধ বা পোড়ানো মিষ্টি আলু খেতে হবে।

ইমিউন শক্তি বাড়ায় : শরীরকে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করার অন্যতম দুটি উপাদান হলো ক্যারোটিনয়েড এবং অ্যান্থোসায়ানিন। শরীরে ইমিউন শক্তি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর এ দুটি উপাদান রয়েছে মিষ্টি আলুতে। এ উপাদানগুলো ত্বক ও চুলের জন্যও বেশ উপকারী। পুষ্টিবিদরা বলেন, ‘মিষ্টি আলুর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতা শুধু এর ক্যারোটিনয়েডের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি অ্যান্থোসায়ানিনের একটি বড় উৎস।

হজম সমস্যা দূর : শীতের সময় মিষ্টি আলু খাওয়ার অন্যতম সুবিধা হচ্ছে হজম সমস্যা ভালো থাকা। এতে প্রচুর ফাইবার থাকায় সহজেই এ সমস্যা এড়ানো যায়। ফাইবারের পরিমাণ বেশি বলে এটি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায়ও উপকারী। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘শীতকালে প্রতিদিন এক থেকে দুই টুকরো মিষ্টি আলু খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাসিডিটি এবং পেট ব্যথার মতো সমস্যা হয় না।’

বলিরেখা ও শুষ্কতা রোধ : শীতল আবহাওয়ায় আমাদের ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। এ সমস্যা দূর করতে প্রয়োজন ভিটামিন এ, ই ও সি। এ তিনটি ভিটামিন ত্বকের গভীর থেকে পুষ্টি জোগায়। ফলে শুষ্ক ও রুক্ষভাব দূর হয়ে যায়। যা মিষ্টি আলুতে নিহিত আছে। এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ত্বকের বলিরেখা রোধ করে।

উচ্চরক্তচাপ : হৃদরোগের ঝুঁকিও দূর করতেও মিষ্টি আলুর জুড়ি নেই। এটির ফাইবার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয় এবং এতে থাকা পটাশিয়াম উচ্চরক্তচাপের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।

আয়রনের ঘাটতি মেটানো : আয়রনের ঘাটতি শরীরের ইমিউন শক্তির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এজন্য আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু মিষ্টি আলুতে আছে প্রচুর আয়রন। যা প্রতিদিন খেতে পারলে শরীরের আয়রনের ঘাটতি দূর হয়। জয়েন্টে ব্যথা নাশ করতেও মিষ্টি আলু বেশ কার্যকরী।

অ্যাজমায় স্বস্তি : শীতের সময় কাশি-সর্দি, ভাইরাল ফিভার হয়। এতে অ্যাজমা রোগীদের সমস্যা বেড়ে যায়। মিষ্টি আলু খেলে অ্যাজমা আক্রান্ত রোগীরা স্বস্তি পেতে পারেন। মিষ্টি আলুতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করতে পারে।

চোখের যত্নে

মিষ্টি আলুতে প্রচুর ভিটামিন ‘এ’ থাকায় আমাদের চোখ ভালো থাকে। পাশাপাশি রাতকানা রোগ ও বয়সজনিত কারণে চোখে ছানি পড়া রোধ করে।

ডায়াবেটিস হলে : মিষ্টি বলেই ডায়াবেটিস রোগীরা ভয় পাবেন না। মিষ্টি আলুর গ্লাসেমিক ইনডেক্স কম থাকে এবং প্রচুর ফাইবারও থাকে। এর স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট রক্ত প্রবাহে সুগারের মাত্রাও ধীর করে দেয়। আমেরিকান ডায়াবেটিস সোসাইটির তথ্য অনুসারে, ‘ডায়াবেটিসের জন্য মিষ্টি আলু এক ধরনের সুপার ফুড। এ সবজি ভিটামিন এ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ। সেইসঙ্গে আরও রয়েছে ভিটামিন সি এবং পটাশিয়াম।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম