|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ঈদুল ফিতরের মতো পোশাক কিংবা অন্যান্য কেনাকাটা নিয়ে অত বেশি হইচই থাকে না এ ঈদে। বরং ঈদের কয়েকদিন আগে থেকেই মুখে মুখে ঘোরে শুধু একটাই প্রশ্ন-‘ভাই, কত নিল?’। অর্থাৎ, কুরবানির পশুর দাম নিয়েই যত জিজ্ঞাসা। তাই বলে কি এ ঈদে একটাও নতুন পোশাক হবে না? কেন নয়! সাধারণত ঈদুল আজহায় নতুন পোশাক নিয়ে মাতামাতি থাকে না। কারণ এ ঈদ কুরবানির। সবার সঙ্গে প্রিয় পশুর মাংস ভাগ করে খাওয়া। তবুও উৎসব বলে কথা। নতুন একটা পোশাক পরলে নিজের কাছে নিজেকে আরেকটু মূল্যবান লাগে, বাড়ে আত্মবিশ্বাসও। আপনার যদি সামর্থ্য থাকে, উৎসবের দিনটিকে কেন্দ্র করে নিজের ও প্রিয়জনের জন্য নতুন পোশাক কিনতে পারেন। এতে আত্মীয়তার বন্ধনও গাঢ় হবে।
ঈদুল ফিতরে নিশ্চয়ই একটু জমকালো পোশাক কিনেছিলেন? এবার উৎসব আর প্রয়োজনকে এক সুতায় গাঁথুন। অর্থাৎ এমন পোশাক কিনুন, যা উৎসবের দিন তো পরবেনই, এরপর আলমারি কিংবা ওয়ারড্রোবে চলে না গিয়ে বরং আপনার নিত্যব্যবহারের পোশাকের তালিকায় চলে আসবে। এতে ঈদের দিনের নতুন পোশাক তো হবেই, আবার অপচয়ের ভয়ও থাকবে না। কারণ এ ঈদে যেহেতু কুরবানির পশু কিনতে অনেক টাকা চলে যায়, তাই স্বাভাবিকভাবেই পোশাকে অতিরিক্ত বাজেট রাখা সম্ভব হয় না। তাই এমন পোশাক কিনুন, যা সারা বছরই পরা যাবে অথবা খেয়াল করে দেখুন, কোন ধরনের পোশাক আপনার এ মুহূর্তে বেশি প্রয়োজন।
যে কোনো পোশাকের ক্ষেত্রে কাপড় সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই চোখের দেখায় ভালো লাগলেই কিনবেন না। বরং আগে খেয়াল করে দেখুন, আবহাওয়ার জন্য এ কাপড় উপযোগী কিনা। যেহেতু এখনো বেশ গরম, তাই একটু ভারী ধাঁচের কাপড় এখন পরতে পারবেন না। আপনার বয়স, সামাজিক অবস্থান, রুচির সঙ্গে পোশাকের ডিজাইন মানানসই কিনা সেদিকেও খেয়াল করুন। এসময় পোশাকের ক্ষেত্রে সবচেয়ে আরামদায়ক হতে পারে সুতির কাপড়। এছাড়া লিনেন, মসলিন, জর্জেটও বেছে নিতে পারেন। তাতে বাড়তি জমকালো ভাব যোগ হবে। ডিজাইনের ক্ষেত্রে খুব বেশি ভারী কারুকার্য করা পোশাক বেছে না নেওয়াই ভালো। কারণ কুরবানির ঈদে পুরুষ মাংস কাটাকাটি আর নারীদের রান্নার কাজেই বেশি সময় দিতে হয়। তাই এমন পোশাক বেছে নিন, যা স্বস্তিদায়ক।
মানুষের জীবনে সব অংশের মধ্যে শৈশবটাই সবচেয়ে বেশি রঙিন। এসময়ের আনন্দ আর কোনো বয়সেই ফিরে আসে না। এসময় অল্পতেই খুশি হওয়ার প্রবণতা থাকে। তাই আপনার বাড়ির খুদে সদস্যদের পোশাকের জন্য বাজেট রাখুন সবার আগে। শিশুরা একটা নতুন পোশাক পেলেই দারুণ খুশি হবে। তারা বড়দের মতো দায়িত্ব কিংবা ব্যস্ততা বোঝে না। তাদের কাছে ঈদ মানেই কেবল নির্মল আনন্দ। সেই আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিতে ঈদুল আজহায় শিশুদের জন্য নতুন পোশাক কিনে দিন। শিশুর পোশাক কেনার সময় তাকেও সঙ্গে করে নিয়ে যান। তার পছন্দ অনুযায়ী পোশাক কিনে দিন। এতে নিজের জন্য নিজে সিদ্ধান্ত নিতে শিখবে, নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দেবে। নিজের পরিবারের শিশুদের পাশাপাশি যদি সম্ভব হয় তবে সামর্থ্যহীন ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরও নতুন পোশাক কিনে দিতে পারেন। ভালো কাজের জন্য বিশেষ কোনো উপলক্ষ্যের প্রয়োজন পড়ে না। তবু উৎসবের দিনে আপনার এ ভালো কাজ দেখে ছোটরাও উৎসাহিত হবে।
উৎসব মানে জীবনের জটিলতা একপাশে সরিয়ে সম্পর্কগুলো আরেকবার ঝালিয়ে নেওয়া। উৎসব মানে ভুল বোঝাবুঝির অবসান। উৎসব মানে উপহার বিনিময়। ঈদুল আজহায় পশুর মাংস তো ভাগাভাগি করবেনই, সেইসঙ্গে সামর্থ্য অনুযায়ী আপনজনদের উপহার দিন। বাড়ির পুরুষ সদস্য নতুন পাঞ্জাবিতে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারেন। নারীদের জন্য তো শাড়ির চেয়ে সুন্দর উপহার কমই হয়। তবে যারা শাড়িতে অভ্যস্ত নন, তাদের জন্য সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি এসব বেছে নিতে পারেন। যমুনা ফিউচার পার্ক, বসুন্ধরা সিটি, আজিজ সুপার মার্কেটসহ দেশের বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজে পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের পোশাক। সময় বাঁচাতে অনলাইনেও কেনাকাটা করে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। পরিচিত কোনো ব্র্যান্ড বা পেজ থেকে কেনার চেষ্টা করুন। নয়তো মনের মতো পণ্য না-ও পেতে পারেন। ত্যাগ আর ভালোবাসায় আপনার ঈদ হয়ে উঠুক আনন্দময়।
