|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বর্ষার এ সময় ছাতা অত্যন্ত জরুরি আমাদের জন্য। ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ছাতা নিয়েই আমাদের বের হওয়া উচিত। যুগে যুগে ছাতা ব্যবহার হয়ে আসছে নানাভাবে নানা স্টাইলে। হাজার হাজার বছর আগে ছাতার উৎপত্তি হয়। মিশর, গ্রিস এবং চীনের প্রাচীন শিল্প ও নিদর্শনগুলোতে ছাতার প্রমাণ রয়েছে।
প্রাচীনকালে ছাতা প্রথমে সূর্য থেকে ছায়া দেওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। চাইনিজরাই প্রথম তাদের ছাতাগুলোকে বৃষ্টি থেকে রক্ষা করার জন্য জলরোধী করে। তারা বৃষ্টির সময় ব্যবহার করার জন্য তাদের কাগজের প্যারাসোলগুলোকে মোম এবং বার্নিশ করে। সময়ের বিবর্তনে আমরা এখন রোদ-বৃষ্টি দুটো থেকেই বাঁচতে ছাতা ব্যবহার করে থাকি। বর্তমানে ত্বকের যত্নেও অনেকে ছাতা ব্যবহার করেন।
সব মিলিয়ে ছাতা আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী বললে ভুল হবে না। বাজারে বর্তমানে বিভিন্ন ফ্যাশনেবল ছাতা দেখা যায়। তবে সব ছাতা আমাদের জন্য উপযুক্ত নয়। বিশেষ করে ছাতার রং দেখে ছাতা কেনা উচিত। যেমন রোদ থেকে বাঁচার জন্য ছাতা কিনতে গেলে হালকা রঙের ছাতা এড়িয়ে চলুন।
যত বেশি হালকা রং হবে, তত বেশি গায়ে লাগবে রোদ। কড়া রোদ থেকে নিজেকে আড়াল করতে হলে অবশ্যই গাঢ় রঙের ছাতা ব্যবহার করতে হবে। সেটা কালো, নীল যাই হোক। রঙিন ছাতা সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি আটকে দিতে পারে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভাঁজযুক্ত নানা রকমের রঙিন ছাতা পাওয়া যাচ্ছে। এ ধরনের ছাতাগুলো বেশ টেকসই। তবে ছাতার সঙ্গে অবশ্যই ছাতার কাপড়টাও দেখতে হবে। বাজারে বিভিন্ন কাপড়ের ছাতা পাওয়া যায়। প্যারাসুটের কাপড় অথবা বেলপেকের কাপড়ের ছাতাগুলো ভালো মানের।
কেননা এ ধরনের কাপড় সহজে ছিদ্র হয় না এবং নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। এ ছাড়া কিছু ছাতা রয়েছে যেগুলোয় দুস্তরের কাপড় ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে রোদ-বৃষ্টিতে ছাতার বাইরের কাপড় গরম কিংবা ভেজা থাকলেও ভেতরের কাপড় একই রকম থাকে।
এখনকার সময়ে ছাতার সঙ্গে যেহেতু ফ্যাশনটাও যুক্ত হয়েছে তাই ছাতার স্টাইলটাও জরুরি ছাতা কেনার সময়। সুইচ দিয়ে খুলবে এবং বন্ধ হবে এমন ছাতাই এখন বেশি জনপ্রিয়। তবে গ্রামগঞ্জে অনেকেই এখনো কাঠের লাটির লম্বা কালো ছাতা ব্যবহার করে থাকেন। এক্ষেত্রে ছাতা খুলতে এবং বন্ধ করতে একটু কঠিন হয়ে পড়ে।
তাই সুইচ টিপ দিয়ে খুলবে এবং বন্ধ হবে এমন ছাতা কেনা উত্তম। এ ছাড়া পোশাকের সঙ্গে মিল রেখেও ছাতার রং বেছে নিতে পারেন। এতে করে আপনার ফ্যাশনটা আলাদাভাবে নজর কাড়বে। বর্তমান সময়ে ছাতার সঙ্গে পোশাক ম্যাচিং করে পরিধান করাটাও একটা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে।
ছাতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে শিক। তাই ছাতা কেনার আগে অবশ্যই শিক দেখে নেবেন। শিকের পরিমাণ কম অথবা শিক নিম্নমাণের হলে না কেনাই উত্তম। কারণ শিক নিম্নমাণের হলে হালকা বৃষ্টিতেই ভেঙে যাবে। এমনকি জোরে বাতাস বইলে ছাতা উড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। আর ছাতায় শিক বেশি হলে ঝড়-বৃষ্টিতেও উলটে যাওয়ার ভয় থাকে না। স্টিলের শিক ভেজা থাকলে মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে যায়। তাই বাজার থেকে অ্যালুমিনিয়ামের শিক আছে এমন ছাতাটাই সংগ্রহ করুন।
মানভেদে ছাতার দাম
অনেক সময় ছাতার দাম বেশি হলেও ছাতার মান ভালো হয় না। তাই দামের সঙ্গে নকশা এবং টেকসই কিনা সেটা যাচাই করে নিতে হবে। বর্তমানে বাজারে শরীফ, শংকর, রহমান, চেরি, ফুজি, আলম, মদিনা, বঙ্গ, ভাই-ভাই ছাতা, বায়েজিদ ও বিএমডব্লিউসহ নানা ব্র্যান্ডের দেশি-বিদেশি ছাতা পাবেন। চাহিদা ও আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে ছাতার দামের ভিন্নতা দেখা যায়। আবার মার্কেটভেদেও ছাতার দাম ওঠানামা করে থাকে।
সাধারণত মানভেদে ৩৫০ থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকার মধ্যে ছাতা পাওয়া যায়। শিশুদের জন্য কার্টুনসংবলিত ছাতার দাম ২৫০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।
যেখানে পাবেন : ঢাকার নিউমার্কেট, গাউছিয়া এলাকাসহ সব বড় বড় মার্কেটেই ছাতা পাওয়া যায়। বিশেষ করে অনলাইন মার্কেটেও ছাতা সহজেই পাওয়া যাচ্ছে। দারাজসহ নানা অনলাইন সাইট ও পেজ থেকে ভালোমানের ছাতা বিক্রি হচ্ছে।
