Logo
Logo
×

ঘরে বাইরে

ভ্রমণ

সোনারগাঁ থেকে কুমিল্লার চন্দনপুর

Icon

লেখা ও ছবি : মোহাম্মদ মহসীন

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সোনারগাঁ থেকে কুমিল্লার চন্দনপুর

অনেক দিন থেকে আমি ও আমার বন্ধুরা মিলে পরিকল্পনা করছিলাম একদিন নদীপথে নৌকায় ঘুরতে বেড় হব। তাই ভ্রমণের আগে মনস্থির করেছিলাম নদীপথে সোনারগাঁ থেকে কুমিল্লা জেলার মেঘনা থানার চন্দনপুর বাজার যাব। আমরা রোদ, বৃষ্টি, ঝড়-তুফানের কথা মাথায় রেখে নিজেরা খাবার আয়োজন করলাম।

খাবারের মধ্যে খাসি, মুরগির গোশত, পোলাও, সাদা ভাত, ডাল ইত্যাদি খাবার বাড়ি থেকে রান্না করে সঙ্গে নিয়ে বেড় হয়ে যাই। ভ্রমণে যাওয়ার একদিন আগে কাজী সেলিম রেজা, পোস্টমাস্টার আ. রাজ্জাক খাঁন বৈদ্যেরবাজার খেয়াঘাট থেকে একটি বড়োসড়ো নৌকা ভাড়া করেন। সকাল ১০টায় আমরা নৌকার ওপর লালসালু টানিয়ে গন্তব্যের দিকে রওয়ানা হই।

এক সময় আমরা চন্দনপুর জেটিতে নেমে বাজারে গিয়ে দই, মিষ্টি, ঠান্ডা পানি, কোমল পানি, কেউ কেউ চাও খেয়েছিলাম। যখন চন্দনপুর ছেড়ে দ্বিতীয় গন্তব্য নুনের টেক পতিত দ্বীপে পৌঁছাই, তখন যেতে যেতে চন্দনপুর এলাকায় অনেক বেদের অস্থায়ী বসত দেখে আবেগাপ্লুত হয়ে যাই। ভ্রমণপ্রিয় আমরা যারা গিয়েছিলাম তাদের মধ্যে ব্যবসায়ী, সমাজসেবক, চাকরিজীবী, ছাত্র-শিক্ষক, সাংবাদিক ও প্রবাসীরাও ছিলেন।

বন্ধুদের ইচ্ছা পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াব। নৌকায় কখনো কখনো ছলাৎ ছলাৎ ঢেউ, উত্তর-দক্ষিণা বাতাসেও প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ছিল। এ দ্বীপে এসে একজন ছাড়া সবাই গোসল সেরে নৌকায় জোহরের নামাজ পড়ি। এরপর সারিবদ্ধভাবে বসে সবাই খাবার খেলাম। তারপর মেঘনা নদীর চারপাশের অসাধারণ দৃশ্য দেখে মন জুড়িয়ে যায়। নদীর দুই পাড়ে গ্রাম দেখে সবাই মুগ্ধ হয়ে যাই। বর্ষার জৌলস অতীতের মতো না থাকলেও যা আছে, তা অনেকটাই টইটম্বুর।

নদীতে গেলেই ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসের কথাগুলো মনে পড়ে... ‘আমারে নিবা মাঝি লগে? কপিলার এ অনুরোধ ফেলতে পরেনি কুবের মাঝিও/তোর লাইগা পরানডা...। অতীতের মতো জেলেরা এখন আর শান্ত নদীতে মাছ শিকার করতে তেমন একটা দেখা যায় না। তাদের সবচেয়ে বড় পুঁজি নৌকা, লগি, বৈঠা, জাল ছাড়া অন্য কোনো কামাইয়ের ব্যবস্থা না থাকায় এবং পূর্বপুরুষের রেওয়াজ ভেঙে অন্য পেশায় ছেলে-সন্তানরা কাজ করছে...।

যখন পূর্ব থেকে দক্ষিণে ফিরি, তখন মইশারচর গ্রাম থেকে কানি দু-এক দূরত্বে একটি দৃষ্টিনন্দন খাস কামরা দেখেছিলাম, যা নদীদখল চলছে, লোকমুখে জেনেছিলাম। আমরা গ্রামে গেলেই আনন্দিত হই, সাগর পাড়ে কখনো মন চাইলেও নানা কারণে যেতে পারি না। বাড়ির নিকটবর্তী মেঘনা নদী বলে আনন্দ-উল্লাসে অল্প খরচে ঘুরেফিরে চিন্তাহীনভাবে বাড়ি ফিরে এলাম।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম