আমার স্বপ্নগুলো ও নিখুঁতভাবে ভেঙে দিয়েছে
প্রকাশ: ০৮ অক্টোবর ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রিয় রিজু
লিখতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তবু লিখতে হচ্ছে। তার সঙ্গে পরিচয় হয়েছিলে কোনো এক রিসিপশনে। দিনটি ছিল শুক্রবার- ও রিসিপশনে এলো, আমার সঙ্গে কথা বলল আর এক পর্যায়ে আমার ফোন নাম্বারটা চাইল। কোনো কিছু চিন্তা না ভেবেই ওকে নাম্বারটা দিলাম। রাতে অচেনা নাম্বার থেকে কল এলো। কথা বলে বুঝতে পারলাম ও। তখন ও জানাল, আমাকে মাঝে মধ্যে কল দেবে। তারপর ও প্রায়ই কল দিতো বন্ধুত্বসুলভ কথা বলত, ভালো লাগত। কয়েকদিন পর ও আমাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিল। আমি খুব অবাক হয়েছিলাম, কি বলব বুঝতে পারছিলাম না। কারণ ওর সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পেরেছি, জীবন সঙ্গী যেমন হওয়া উচিত, ও ঠিক সেরকম।
১৬ মার্চ বিকালে হাতিরঝিলে আমরা দেখা করি, খোলা আকাশের নিচে সবুজ ঘাসের উপরে বসি- সেখানে সবার সামনে ও আমাকে লাল গোলাপ দিয়ে আহ্বান জানাল। ওর সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো, আর প্রতি শুক্রবার দেখা হতো। ওর সঙ্গে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত আমার জন্য খুব স্পেশাল ছিল। ওকে নিয়ে আমার খুব গর্ব হতো, ও সত্যিই খুব ভালো মানুষ। ও বেশির ভাগ সময় অনলাইনে থাকত। তাই আমি ওকে কখনও ইমো বা মেসেঞ্জারে মেসেজ দিতাম, ও উত্তর দিতো। তখন মনে হতো ও আমার কাছাকাছি আছে। হঠাৎ আমি খুব অসুস্থ হয়ে গ্রামে চলে যাই। কিছুদিন পর যখন সুস্থ হয়ে ঢাকায় আসার কথা ওকে জানালাম ও আমাকে বলল, মাকে সঙ্গে নিয়ে এসো, এখনও তো পুরোপুরি সুস্থ হওনি। তখন আমি মজা করে বললাম, এতো পিরিত থাকলে তুমি আইসা আমারে নিয়া যাও। পরের দিন ও সত্যি সত্যি চাঁদপুর চলে এলো। এটা ভেবে আমার খুব আনন্দ হল যে, ও সত্যিই আমাকে খুব বেশি ভালোবাসে। দু’জনে একসঙ্গে ঢাকায় এলাম। সব কিছু ঠিকই চলছিল। হঠাৎ বাড়ি থেকে বিয়ের কথা বলছিল, আমি ব্যাপারটা ওকে জানালাম। বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমি মামার কাছেই থাকি। মামাই আমার অভিভাবক। আমার ব্যাপারে মামা যা সিদ্ধান্ত নেবেন, আমি সেটাই মেনে নেব। মামার সঙ্গে দেখা করে আমাদের সম্পর্কের কথা ওকে জানাতে বলেছি। যখনই ওকে এ কথা বলতাম- ও বলত, ঠিক আছে। সম্পর্কের শুরুতে ওকে বলেছিলাম যে তুমি আমাকে বিয়ে করতে চাইলে আগে আমার মামার সঙ্গে কথা বলতে হবে। তখন ও বলেছিল সমস্যা নেই। কিন্তু যখন বাড়ি থেকে আমাকে বিয়ের জন্য চাপ শুরু হল, তখনই সে বলল- তোমার মামাকে কনভিন্স করা আমার পক্ষে সম্ভব না।
কি দোষ ছিল আমার? আমি তো নিজে থেকে তার কাছে যাইনি, তাহলে? ওর এমন আচরণে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি, অনেক কেঁদেছি। আমার স্বাভাবিক জীবনের রুটিন এলোমেলো হয়ে গেল। সারাক্ষণ ওর কথা মনে করে কাঁদতাম। কোনো কিছুই ভালো লাগত না। কারণ, আমার স্বপ্নগুলো ও নিখুঁতভাবে ভেঙে দিয়েছে। নতুন করে অন্য কারও সঙ্গে স্বপ্ন সাজাতে পারব না কোনোদিন। সত্যিই আমি মন থেকে ওকে ভালোবেসেছি। ও কেন আমার সঙ্গে এমন করল? কেন আমার মন নিয়ে এভাবে খেলা করল?
সাহস থাকলে একবার এসে সামনে দাঁড়িও। আর বলে দিও, কী দোষ ছিল আমার?
ইতি
মেঘলা (ছদ্মনাম)
চাঁদপুর
প্রিয় পাঠক
এ রকম ঘটনা বা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে পারেন আপনিও। সেটা যে কোনো ব্যক্তি, নারী অথবা শিশুকে নিয়ে। অথবা এমন কোনো ঘটনা যা আপনার অনুভূতিতে নাড়া দিতে পারে- সেসব নিয়েই ‘মন পবনের নাও’ আমাদের নতুন বিভাগ। এখানে আপনি অকপটে ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ শব্দের মধ্যে লিখতে পারেন আপনার মনের সবচেয়ে আবেগঘন ঘটনার বিবরণ এবং সে সম্পর্কে আপনার অনুভূতির কথা। সেগুলো আমরা যত্ন সহকারে প্রকাশ করব।
- বি.স.
লেখা পাঠানোর ঠিকানা
বিভাগীয় সম্পাদক
ঘরে বাইরে (মন পবনের নাও)
দৈনিক যুগান্তর
২৪৪-ক প্রগতি সরণি, কুড়িল, বিশ্বরোড, বারিধারা, ঢাকা ১২২৯
ই-মেইল : gharaybairay@gmail.com
