মাওয়া-শিমুলিয়া ঘাট
পরিবহন চলাচলে অনিয়ম যাত্রী হয়রানি আর মলম পার্টির দৌরাত্ম্য
শেখ সাইদুর রহমান টুটুল, লৌহজং থেকে
প্রকাশ: ০৭ মে ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া-শিমুলিয়া দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীদের পারাপারের দ্বিতীয় বৃহত্তম ঘাট। দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন পারাপার হচ্ছে এই ঘাট দিয়ে। তার ওপর নির্মাণাধীন পদ্মা সেতুর কারণে এই ঘাটের গুরুত্ব আরও বেশি। অথচ এই ঘাটে প্রতিদিন অসংখ্য অনিয়ম এখন অনেকটা নিয়মে পরিণত হয়েছে। যাত্রীদের চাপ একটু বাড়লেই নিয়মিত ভাড়ার চেয়ে দ্বিগুণ আদায় করা হয়।
নিয়ম রয়েছে সূর্য ডোবার পর
সিবোট অথবা লঞ্চ কোনো নৌযান পারাপার করবে না। কিন্তু নিয়মের তোয়াক্বা না করে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে রাত ৯টা কোনো কোনো ক্ষেত্রে রাত ১০টা পর্যন্ত এসব নিষিদ্ধ যানবাহন চলাচল করছে। আর এতে সহযোগিতা করছে ঘাটে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
শিমুলিয়া ঘাটে পরিবহন শ্রমিকদের টানাহ্যাঁচড়া আর অত্যাচার দিন দিন বেড়েই চলেছে। ইচ্ছা থাকলেও শ্রমিকদের টানাহ্যাঁচড়া আর আচরণের কারণে যাত্রীরা ভয়ে এবং সম্মানের কারণে তাদের পছন্দ মতো গাড়িতে চড়তে পারছে না।
রাতে সিবোট চলাচলের কারণে গত এক বছরে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতি, ধর্ষণ, খুন ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটেছে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ও কাওড়াকান্দি নৌরুটে। এক মাসে শিমুলিয়া ঘাটে মলম পার্টির হাতে সর্বস্ব হারিয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। ব্যবসায়ী, সেনাবাহিনীর সদস্য, পুলিশ সদস্য ও প্রবাসীসহ অনেকেই মলম পার্টির খপ্পরে পরে প্রতিনিয়ত নিস্ব হচ্ছেন।
শিমুলিয়া ঘাটে তোলা’র নামে চলছে নীরব চাঁদাবাজি। মালবাহী ট্রাক থেকে শুরু করে সিএনজি, অটো, ভটভটি, মাহিন্দ্র ও বেবিটেক্সি থেকে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নামে তোলা হচ্ছে এসব চাঁদা। ঘাট দিয়ে বিভিন্ন অবৈধ্য পণ্য চলাচলের পথে কিছুটা প্রশাসনের নজরে পড়লেও বড় ধরনের চালান থাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে। ফিটনেসবিহীন লঞ্চ, অতিরিক্ত যাত্রীবহন প্রতিনিয়ত চলেছে এই রুটে। বর্ষা মৌসুমে এসব লঞ্চে যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ হলেও প্রশাসনের কোনো রকম টনক নড়ছে না।
বৃহস্পতিবার আর শুক্রবার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হলে ট্রাফিকের যেন পোয়াবারো। মালবোঝাই ট্রাকের জন্য গুনতে হয় উৎকোচ তা না হলে সিরিয়াল পাওয়াটাই যেন কষ্ট সাধ্য কাজ। ট্রাক সিরিয়ালের কথা বলে যানজট লাগিয়ে রাখা গয় দিনভর। সবমিলিয়ে প্রতিনিয়ত নানারকম ভোগান্তিতে পরে দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার যাত্রী।
