এক মাসেই সড়কে ঝরল ৪২৮ প্রাণ, পরিত্রাণের উপায় কী?
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সারা দেশে আগস্ট মাসে ৪৫১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৮ জন নিহত এবং ৭৯১ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেশি। ১৫ সেপ্টেম্বর রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। সড়কে প্রাণহানি থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৩২ জন, বাসযাত্রী ৩০ জন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরির আরোহী ২৭ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ২১ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ৯৭ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নছিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্রা) ৩৩ জন এবং বাইসাইকেল আরোহী ৫ জন নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২১৪টি জাতীয় মহাসড়ক, ১৩৫টি আঞ্চলিক সড়ক, ৪২টি গ্রামীণ সড়ক এবং ৬০টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার ৯০টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২০৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৮৫টি পথচারীকে ধাক্কা দেওয়া, ৬২টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১১৯টি দুর্ঘটনায় ১১৭ জন নিহত হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসাবে ঢাকা জেলায় ৩৬টি দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। এই জেলায় ছয়টি দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকায় ৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসাবে প্রতিবেদনে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, ত্রুটিপূর্ণ সড়ক, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল, তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো, জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহণ খাতে চাঁদাবাজির ঘটনা উল্লেখ করা হয়। এর আগে জুলাই মাসে ৪৪৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৮ জন নিহত ও ৮৫৬ জন আহত হয়েছিলেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে সড়কে এসব দুর্ঘটনার এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
দুর্ঘটনা রোধের প্রতিবেদনে বেশকিছু সুপারিশ করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এর মধ্যে-দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়ানো, চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করা, পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করা, গণপরিবহণে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমানো, টেকসই পরিবহণ কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সুপারিশ করা হয়।

