Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

সচিবালয়ে ভাতার দাবিতে আন্দোলন

সন্ত্রাসবিরোধী মামলায় রিমান্ডে ১৪ কর্মচারী

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

‘সচিবালয় ভাতা’ চালুর দাবিতে আন্দোলনে নেমে গ্রেফতারের পর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় ১৪ জনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। সরকারি আচরণবিধি অমান্য করে সচিবালয়ের ভেতরে মিছিল, মিটিং ও আন্দোলন করার পাশাপাশি অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ রাখার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় শুক্রবার মামলাটি করা হয়েছে। শুক্রবার শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জামসেদ আলম আসামিদের রিমান্ডে পাঠান।

আসামিরা হলেন-বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি বাদিউল কবির, সহসভাপতি মোহাম্মদ শাহীন গোলাম রাব্বানী ও নজরুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান সুমন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা রোমান গাজী, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক আবু বেলাল, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক কামাল হোসেন ও আলিমুজ্জামান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা তায়েফুল ইসলাম, ইসলামুল হক ও মহসিন আলী, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অফিস সহায়ক বিপুল রানা বিপ্লব, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র রায়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অফিস সহায়ক নাসিরুল হক নাসি।

গ্রেফতারের পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই কে এম রেজাউল করিম আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এতে বলা হয়, সচিবালয় এলাকা যেহেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা সেহেতু ওই এলাকায় ডিএমপি কমিশনার সব সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। আসামিরা ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশনা অমান্য করে ও ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে। জানা যায়, আসামিরা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করার লক্ষ্যে পলাতক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে পরস্পর যোগসাজশ করে অন্তর্বর্তী সরকার ও বাংলাদেশ সচিবালয়কে অকার্যকর করার লক্ষ্যে তারা আইন বহির্ভূতভাবে বাংলাদেশ সচিবালয়ের অভ্যন্তরে সমবেত হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে প্রতীয়মান হয়। প্রাথমিক তদন্তে আসামিদের মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সরাসরি সম্পৃক্ততার সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তাদের সঠিক নাম-ঠিকানা সংগ্রহের লক্ষ্যে, ঘটনার নেপথ্যে জড়িত পলাতক আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতার ও মামলার মূল রহস্য উদ্ঘাটনের লক্ষ্যে আসামিদের ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা ও পুলিশ হেফাজতে রেখে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য সাত দিনের রিমান্ড একান্ত প্রয়োজন।

আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট ফারজানা ইয়াসমিন রাখীসহ কয়েকজন আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।

সচিবালয়ে কর্মরত সবার জন্য ২০ শতাংশ ‘সচিবালয় ভাতার’ দাবিতে বুধবার আন্দোলনে নামেন সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী। বেলা আড়াইটার পর তারা সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে কার্যত ৬ ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকেন উপদেষ্টা।

পরে রাতে সরকারি আদেশ (জিও) জারির ‘আশ্বাস পেয়ে’ রাত সাড়ে ৮টার দিকে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন আন্দোলনকারীরা। তারা জানিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার মধ্যে জিও জারির ‘আশ্বাস পেয়ে’ অবস্থান থেকে সরে গেছেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় আবারও জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সমাবেশ থেকে আগামী সপ্তাহ থেকে ‘পূর্ণদিবস কর্মবিরতির’ কথাও বলা হয়। পরে সচিবালয় থেকে প্রাথমিকভাবে ৫ জনকে আটক করে হেফাজতে নেয় পুলিশ, পর্যায়ক্রমে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৪ জনে। পরে তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধ আইনে মামলা করেন বাংলাদেশ সচিবালয়ে ফোর্স হিসাবে কর্মরত এএসআই হাফিজুর রহমান।

ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি ডিভিশনের যুগ্ম কমিশনার সানা শামীনুর রহমান সাংবাদিকদের বলেছিলেন-রোববার থেকে সচিবালয় বন্ধের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। যেসব কর্মচারী আইন ভঙ্গ করবে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। বুধবারের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম