সেমিফাইনালের আগে পাঁচটি করে গোল করে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে সমতায় ছিলেন আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি ও ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পে। ফাইনালে দুজনের লড়াইটা হলো আরও দুর্দান্ত। মেসি গোল করলেন দুটি কিন্তু এমবাপ্পে হ্যাটট্রিক করে ছিনিয়ে নিলেন গোল্ডেন বুট। এই একটি পুরস্কারই শুধু নিতে পেরেছে ফ্রান্স। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ে ৩-৩ গোলে অমীমাংসিত ছিল ম্যাচ। টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতে ট্রফির সঙ্গে আরও তিনটি পুরস্কার জিতে নেয় আর্জেন্টিনা। টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় হিসাবে লিওনেল মেসির হাতে উঠেছে গোল্ডেন বল। ২০১৪ সালের পর আবার এই পুরস্কার পেলেন তিনি। তার দুই সতীর্থ এমিলিয়ানো মার্তিনেজ সেরা গোলকিপারের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভস ও সেরা তরুণ খেলোয়াড় হয়েছেন মিডফিল্ডার এনজো ফার্নান্দেজ।

বিশ্বকাপের শুরু থেকেই এবার চেনা মেসিকে খুঁজে পেয়েছেন সমর্থকরা। গোল করে এবং করিয়ে দলকে জিতিয়েছেন শিরোপা। প্রথম খেলোয়াড় হিসাবে বিশ্বকাপের এক আসরে গ্রুপ পর্ব, শেষ ষোলো, কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল ও ফাইনালে গোলও করেছেন ৩৫ বছর বয়সি ফরোয়ার্ড। টুর্নামেন্টে মোট সাতটি গোল করেছেন। গোল করতে সহায়তা করেছেন তিনটিতে। অসাধারণ পারফরম্যান্সে টুর্নামেন্টে সেরার পুরস্কারও উঠেছে তার হাতে।

ফাইনালের ৮০ মিনিট পর্যন্ত গোল্ডেন বুটের দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন মেসিই। কিন্তু দুই মিনিটের ঝড়ে এলোমেলো হয়ে যায় সব কিছু। ৮০ ও ৮১ মিনিটে দুই গোল করে এগিয়ে যান এমবাপ্পে। এরপর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলায় আবার গোল করে এই লড়াইয়ে সমান করে ফেলেন মেসি। লড়াই সমান হলে গোল সহায়তা করার কারণে মেসির হাতেই গোল্ডেন বুট উঠে যেত। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজার দুই মিনিট আগে আবার পেনাল্টি থেকে নাটকীয় গোলে এগিয়ে যান এমবাপ্পে। আট গোল করে গোল্ডেন বুটও পেয়ে যান তিনি। দুই আসরেই ২৪ বছর বয়সি এই ফরোয়ার্ডের গোল হয়ে গেল ১২টি।

এদিকে টাইব্রেকারে নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিলেন এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। টাইব্রেকারে পেনাল্টি শুটআউট কিংসলে কোমানের শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান মার্তিনেজ। আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিশ্বকাপ জয়ে রাখেন দারুণ অবদান। ফাইনালের পাশাপাশি আসর জুড়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে জিতে নেন সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার গোল্ডেন গ্লাভসও। তার সঙ্গে শেষ দৌড়ে ছিলেন ফাইনালে ওঠার ফ্রান্সের হুগো লরিস।

এদিকে অভিজ্ঞদের সঙ্গে তরুণদের মিশেলে বিশ্বকাপ জিতেছে আর্জেন্টিনা। সেই লড়াইয়ে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছেন মাত্র ২১ বছর বয়সি এনজো ফার্নান্দেজ। পুরো টুর্নামেন্টেই মেসির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছেন। হয়েছেন সেরা তরুণ খেলোয়াড়ও।