Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস আজ

স্বাভাবিক প্রসবে বড় ভূমিকা রাখছেন মিডওয়াইফরা

Icon

জাহিদ হাসান

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

গর্ভাবস্থা, প্রসববেদনা ও প্রসবের শুরুর অবস্থায় পরামর্শ ও নবজাতকের যত্ন নিতে সহায়তা করেন একজন মিডওয়াইফ। প্রসূতির স্বাস্থ্য ও শিশুর পরিচর্যা বিষয়ে পরামর্শ দেন। মা ও সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য তিনি ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ থাকেন। সব মিলিয়ে স্বাভাবিক সন্তান প্রসবে মিডওয়াইফরা বড় ভূমিকা রাখছেন। মিডওয়াইফদের ভূমিকা তুলে ধরতে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ ‘আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফ দিবস-২০২৩’ পালন করা হবে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘তথ্য থেকে বাস্তবে : সব মিডওয়াইফ একসাথে’ নির্ধারণ করেছে ইন্টারন্যাশনাল কনফেডারেশন অব মিডওয়াইফস (আইসিএম)।

হেলথ বুলেটিনের সবশেষ তথ্যমতে, ২০২০ সালে প্রসবকালে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যু ছিল ১৬৩ জন। কিন্তু জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা ছিল-মৃত্যুহার প্রতি লাখে ১২১ জনে নামিয়ে আনা। এছাড়া ২০২৫ সালের মধ্যে প্রতি লাখে ৮৫ জনে নামিয়ে আনা। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে এর হার ৭০ জনে নামিয়ে আনতে হবে। সংশ্লিষ্টরা যুগান্তরকে জানান, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতিতে বাংলাদেশ তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করলেও অনেক কাজ বাকি। কারণ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনের তুলনায় মিডওয়াইফের সংখ্যা কম। সরকারি প্রতিষ্ঠানে তিন হাজার মিডওয়াইফ পদ থাকলেও ২ হাজার ৫৫৭টি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সব হাসপাতাল ও কমিউনিটি ক্লিনিকে কাজের উপযুক্ত পরিবেশও নেই। তাদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। এখনো মিডওয়াইফদের অনেকে নার্স ভাবেন। স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিরাও মিডওয়াইফদের কার্যপরিধি সম্পর্কে খুবই কম জানেন।

বাংলাদেশ মিডওয়াইফারি সোসাইটির সভাপতি আসমা খাতুন বলেন, দক্ষ ও পেশাদার মিডওয়াইফরা মা ও নবজাতকের মৃত্যু রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। বয়ঃসন্ধিকালে কিশোরীদের তারা পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, এসডিজি অর্জনে মিডওয়াইফদের সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত ও নিয়মিত করতে হবে।

বাংলাদেশ মিডওয়াইফারি সোসাইটির সাবেক সহসভাপতি ও ইন্টারন্যাশনাল কনফেডারেশন অব মিডওয়াইফসের (আইসিএম) ইয়াং মিডওয়াইফ লিডার সৈয়দা মাহফুজা ঝুমু যুগান্তরকে বলেন, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) প্রসূতি ও নবজাতকের স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধির পরিসংখ্যান বলছে-বাংলাদেশে ৮৭ শতাংশ স্বাভাবিক প্রসব শুধু দক্ষ মিডওয়াইফ দ্বারা সম্ভব। দেশে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল থেকে নিবন্ধন করা মিডওয়াইফের সংখ্যা প্রায় ৮ হাজার। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন সাব সেন্টারে প্রায় ২ হাজার ৫৫৭ জন মিডওয়াইফ কাজ করছেন। তবে সেবাগ্রহীতার তুলনায় মিডওয়াইফদের সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় নিরবচ্ছিন্ন সেবাদান ব্যাহত হচ্ছে। টেকসই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে দ্রুত মিডওয়াইফ নিয়োগ দেওয়া জরুরি। গত বছর চারটি কলেজে মাত্র ২০টি করে মোট ৮০টি সিটে মিডওয়াইফরা বিএসসি-ইন-মিডওয়াইফারির সুযোগ পেয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে।

দিবসে কর্মসূচি : আন্তর্জাতিক মিডওয়াইফারি দিবস পালনে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ঢাকা নার্সিং কলেজ প্রাঙ্গণে কেন্দ্রীয়ভাবে দিবসটি উদযাপন করা হবে। সকালে চিকিৎসক, শিক্ষক মিডওয়াইফ ও নার্সদের নিয়ে শোভাযাত্রা বের করা হবে। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও এসআইডিএ’র উদ্যোগে ‘স্বাভাবিক প্রসবে মিডওয়াইফদের ভূমিকা’ শীর্ষক অনলাইন সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। প্যানেল আলোচনায় মিডওয়াইফরা অংশ নেবেন। পাশাপাশি দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও মাতৃস্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সচেতনতামূলক প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন, পোস্টার, ব্যানার ও লিফলেট বিতরণ করা হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম