২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা
অপ্রাসঙ্গিক যুক্তিতর্ক : ভৎসনা আসামিপক্ষের আইনজীবীকে
যুগান্তর রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। সোমবার হাজতি আসামি মুন্সি মুহিবুল্লাহ ওরফে অভির পক্ষে চতুর্থ দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার আইনজীবী সাইফুর রশিদ সবুজ। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে এ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। তবে তা শেষ না হওয়ায় বিচারক আজ যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে আদালতের কার্যক্রমের শুরুতে আইনজীবী সাইফুর রশিদ সবুজ আসামি মুন্সি মুহিবুল্লাহ ওরফে অভির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করেন। তিনি বলেন, প্রসিকিউশন ২২৫ জনের সাক্ষ্য দিয়ে মামলার অভিযোগ দাঁড় করিয়েছেন। আদালতে ১২ জন আসামি ১৩টি স্বীকারোক্তিতে নিজেদের ও অপরদের জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। আর মুহিবুল্লাহ ওরফে অভির নাম চার আসামি স্বীকারোক্তিতে বলেছেন। এরপর তিনি একে একে ওই চার আসামির স্বীকারোক্তি পড়া শুরু করেন। এরপর তিনি বেশ কয়েকজন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্যে কী বলেছেন আর এজাহারের কী বলা আছে তা পড়ে শোনান। এ সময় বিচারক বলেন, বারবার ভুল করছেন। এজাহারের ঘটনা ছোট। পরে অধিকতর তদন্ত ও চার্জশিট হয়েছে। শুধু এজাহারের ঘটনা দিয়ে যুক্তিতর্ক শেষ করে দেবেন। পরে আরও অনেক কিছু হয়েছে।
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান আসামিপক্ষের ওই আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, আপনি বলেন যে, আপনি (আসামি) মুফতি হান্নানের ভাই নন, আপনি গ্রেনেড থ্রো করা শেখাননি। জবাবে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, মুফতি হান্নানের ভাই বলেই তো আমি আসামি। প্রতিউত্তরে প্রধান কৌঁসুলি বলেন, মুফতি হান্নানের ভাই বলে নয়, আপনার ষড়যন্ত্রের কারণেই আপনি আসামি হয়েছেন। এরপর ফের সাক্ষীদের বক্তব্য উপস্থাপন করা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। শুনানির এক পর্যায়ে বিচারক বলেন, খুব দুঃখজনক ঘটনা। আপনি দয়া করে কথা শুনুন। বিচারক বলেন, আপনি ঘুরেফিরে একই কথা বলছেন। দয়া করে সংক্ষেপ করুন। স্কুলে যেভাবে সারাংশ শিখিয়েছে সেভাবে বলুন। এক বিষয় নিয়ে ঘুরপাক খেলে হবে না। এরপরও অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হলে আদালত বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, কোর্ট বলতে বাধ্য হচ্ছে আপনাকে, আপনি অযথা অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে প্রচুর কথা বলছেন। কোর্ট আপনাকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। আপনি প্রাসঙ্গিক বিষয়ে এগিয়ে যান। জেরায় কী বলেছে, জবানবন্দিতে কী বলেছে, আপনি জেরায় কী বলেছেন- সেগুলো বলেন।
এরপর দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে ‘প্রিপারেশন নাই স্যার, আজ আর পারছি না’- বলে আদালতের কাছে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনে সময় চান আসামিপক্ষের ওই আইনজীবী। আদালত যুক্তিতর্ক চালিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু ১০ মিনিট অতিবাহিত হলেও তিনি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে পারেননি। পরে আদালত বলেন, আর কবে প্রস্তুতি নেবেন? আপনারা যদি এভাবে (সময়ক্ষেপণ) করেন তাহলে আমার লিস্ট অনুসারে আমি এগিয়ে যাব। আমি যথারীতি কাজ করে যাব। মাসের পর মাস যুক্তিতর্ক শুনব- এমন নয়। এরপর বিচারক আদালত মুলতবি ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলির সঙ্গে ছিলেন আকরাম উদ্দিন, আবু আবদুল্লাহ্ ভূঞা, আমিনুর রহমান, আবুল হাসনাত প্রমুখ।
