Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

নানা আয়োজনে বড়দিন উদযাপন

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নানা আয়োজনে সোমবার খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব বড়দিন উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে বিভিন্ন চার্চে বিশেষ প্রার্থনা, খ্রিস্ট সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি কেক কেটে আনন্দ ভাগাভাগি করা হয়। যুগান্তর ব্যুরো ও প্রতিনিধিরা জানান : গাজীপুরের কালিয়াকৈরে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল থেকে ২৫টি গির্জা ও খ্রিষ্টান পল্লীতে নানা উদ্দীপনায় বড়দিন উদযাপিত হয়। এবার কালিয়াকৈরের গোয়ালবাথান, কালামপুর, হবুয়ারচালা, নিশ্চিন্তপুর, বৈথনিয়া, রামপুর, বগারপুরসহ বিভিন্ন গির্জায় বড়দিন পালন করা হয়। গির্জা থেকে খ্রিষ্টান বাড়ি সবখানেই এখন বড়দিন পালনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। বাড়িগুলোর সামনে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। গির্জা ও পল্লীগুলোকে সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ঝলমলে আলোকসজ্জায়। প্রতিটি গ্রামেই এখন উৎসবের আবহ। তবে উৎসব আনন্দ নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যয় খ্রিস্ট ধর্মালম্বীদের। সবচেয়ে বেশি আনন্দ বিরাজ করছে শিশু-কিশোরদের মাঝে। বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চের ডিকন জয়দেব বর্মণ বলেন, বাড়িতে বাড়িতে কেক, আর পিঠাপুলির আয়োজন করা হয়েছে। উৎসবের আলোয় নিজেদের রাঙিয়ে তুলতে ব্যস্ত সবাই। ইভানজেলিক্যাল চার্চের সভাপতি বাপ্পি খৃষ্টদাস বলেন, বড়দিনে আমাদের বড় প্রার্থনা হচ্ছে মানুষের মধ্যে যেন ভ্রাতৃত্ববোধ গাঢ় হয়, পৃথিবী থেকে যেন অস্থিরতা দূর হয় এবং সবার মধ্যেই যাতে শান্তি বিরাজ করে। কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম নাসিম জানান, আমরা প্রতিটা গির্জায় পুলিশ মোতায়েন করেছি যাতে করে নির্বিঘ্নে খ্রিস্টিয়ান ধর্মাবলম্বীরা তাদের বড়দিন উদযাপন করতে পারেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ হাই জকী জানান, বড় দিনকে ঘিরে সর্বাত্মক নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করি নির্বিঘ্নে বড় দিনের উৎসব সম্পন্ন হবে। গাজীপুরের কালীগঞ্জে এবার বিভিন্ন আঙ্গিকে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব যিশুখ্রিস্টের জন্মদিন পালিত হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষ্যে খ্রিস্টান এলাকাগুলোতে ২৪ ডিসেম্বর রোববার সন্ধ্যা রাত থেকেই সোমবার বিকাল পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করতে থাকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও যিশুখ্রিস্টের জন্মকে কেন্দ্র করে গির্জায় গির্জায় নানা আয়োজন ও আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে এ দিনটি পালন করা হয়। সারা বিশ্বের মতো সোমবার সকালে খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় উৎসব বড়দিনে কালীগঞ্জের সেন্ট লিকোলাস চার্জ, সাধু যোহন গির্জা, রাঙ্গামাটিয়া গির্জা, দড়িপাড়া গির্জা ও মঠবাড়ী গির্জাসহ মোট ৫টি ধর্মপল্লীতে একযুগে সমবেত প্রার্থনা করা হয়। গির্জায় আগত সব শ্রেণি-পেশার যিশুভক্তরা সবার মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য বিনিময় করেন। গির্জার ফাদার খোকন ভিন সেন্ট গমেজ, আলভী গমেজ, জ্যাকব গমেজ, কাজল গমেজ, ও উজ্জ্বল রোজারিও জানান, উপজেলার নাগরী ও তুমলিয়া ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার লোক সমবেত হন। গির্জায় ঘণ্টাধ্বনি, সমবেত প্রার্থনা ও প্রচলিত রীতিনীতির মধ্য দিয়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এ ধর্মীয় উৎসব শুরু হয়। এ সময় বর্ণিল সুরের মূর্ছনায় প্রভু যিশু স্মরণে প্রার্থনা সংগীত পরিবেশন করা হয়। বিপুলসংখ্যক যিশুভক্ত নারী-পুরুষ ও শিশুরা ধর্মীয় প্রার্থনায় অংশ নিয়ে প্রভু যিশুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জীবনযাপন দেশবাসীর মঙ্গল কামনা করেন। অপরদিকে কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, ডাকসুর সাবেক ভিপি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আখতার উজ্জামন নেতৃবৃন্দের নিয়ে প্রতিটি গির্জায় গিয়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। মুন্সীগঞ্জ সিরাজদিখানেও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড়দিন উদযাপিত হয়েছে। সিরাজদিখান শুলপুর খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সাধু যোসেপ গির্জায় সোমবার সকাল ৮টায় বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রার্থনা সভায় পৃথিবীর সব মানুষের মঙ্গল কামনা করা হয়। প্রার্থনা সভা পরিচালনা করেন ফাদার লিন্টু ডি কস্তা। নানা বয়সের খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী মানুষ এতে অংশ নেয়। এ উপলক্ষ্যে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যপস্থা জোরদার করা হয়েছে। রাজশাহীতে গানের সুরে সুরে সিটি চার্চে বড়দিন উপলক্ষ্যে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। মহানগরীর বাগানপাড়া চার্চের ফাদার বিশপ রোজারিও জানান, প্রার্থনায় যুদ্ধ নয় শান্তির বার্তা পৌঁছে দিতে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া বড়দিনের অনুষ্ঠান ক্যাথলিক গির্জা, উত্তম মেষপালক গির্জা ছাড়াও মহানগরীর কাজিহাটা গির্জা ও অন্যান্য গির্জাতেও যথাযথভাবে পালিত হয়েছে। রংপুরে সদর ব্যাপিস্ট চার্চে আরাধনা, উক্তি, যিশুখ্রিষ্টের স্মৃতিচারণ ও কেক কাটেন ব্যাপিস্ট চার্চের ফাদার রেভারেন ফিলিপ বর্মন। রাঙামাটির নানিয়ারচর ও বিলাইছড়ি ও কাপ্তাই উপজেলার বিভিন্ন গির্জায় সকাল থেকে ব্যাপক কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সকালে রাঙামাটি শহরের তবলছড়ির বন্ধু যিশুটিলা, আসামবস্তিতে সমবেত প্রার্থনা, খ্রিস্ট সংগীত পরিবেশনা এবং কেক কাটা হয়। বান্দরবানে ব্যাপটিস্ট গির্জা ও ফাতেমা রানী ক্যাথলিক গির্জায় কেক কাটার মাধ্যমে বড়দিনের কর্মসূচির সূচনা হয়। বিশেষ প্রার্থনা করা হয়। খ্রিষ্টান অধ্যুষিত ফারুকপাড়া, লাইমিপাড়া, গেজমনিপাড়া, মুন্নমপাড়া, বেতেলপাড়া গির্জাগুলোতে। মেহেরপুরের মুজিবনগরের বল্লভপুর গির্জা, ভবেরপাড়া মিশন, চিৎলা গির্জায় প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। জয়পুরহাটে পৌর এলাকার মাহালীপাড়া খ্রিষ্টীয় কমিউনিটি সেন্টার, খনজনপুর মিশন গির্জা, পলিবাড়ির ওয়েস্ট মিশন-বাংলাদেশ, পাঁচবিবি উপজেলার বাজিতপুরের-সেভেনথ ডেজ অ্যাডভেনটিস মারানাথা সেমিনারি, মহীপুরের পাথরঘাটা মিশনসহ বিভিন্ন খ্রিষ্টীয় পল্লীর চার্চ ও গির্জায় দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম