Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

বাংলা নববর্ষ বরণের আবহ চারদিকে

রাজধানীসহ সারা দেশেই এখন নানা প্রস্তুতি চলছে

Icon

হক ফারুক আহমেদ

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বছর ঘুরে আবার আসছে নতুন বাংলা বছর। বিদায় ধ্বনি বেজে উঠছে ১৪৩০ বঙ্গাব্দের। বাংলার মানুষ বরণ করে নেবে বঙ্গাব্দ ১৪৩১। বাঙালির সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক এবং সর্বজনীন উৎসব পহেলা বৈশাখ দুয়ারে কড়া নাড়ছে। বর্ষবরণকে ঘিরে রাজধানীসহ সারা দেশেই এখন নানা প্রস্তুতি চলছে। ঈদের ছুটির কয়েকদিন পরই বাংলা নববর্ষবরণের আয়োজন। তাই এবারের নববর্ষের অন্যরকম এক আবহ।

রাজধানীতে বাংলা নব বর্ষবরণের সবচেয়ে বড় আয়োজন রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী সংগীতায়োজন এবারও থাকছে। অন্যবারের মতো এবারও রমনা বটমূলে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে এ আয়োজন। সকাল সোয়া ৬টায় যন্ত্রসংগীতের সুরে শুরু হবে বর্ষবরণের এই আয়োজন। থাকবে বাঁশির রাগালাপ। থাকবে ২ ঘণ্টা ব্যাপ্তির পরিবেশনা। এতে অংশ নেবেন ছায়ানটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিতসহ প্রায় দেড়শ শিল্পী। থাকবে গান, কবিতা ও পাঠ। সম্মেলক কণ্ঠে গাওয়া হবে কাজী নজরুল ইসলামের কারার ওই লৌহ কপাট, সম্মেলক কণ্ঠে পরিবেশিত হবে-আঁধার কেটে রাত পোহালে উঁকি দেয় যে ভোর। আরও অনেক গান।

নববর্ষের প্রভাতী আয়োজন প্রসঙ্গে ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমদ লিসা বলেন, পরস্পরের সম্প্রীতি সাধনার বার্তা দেওয়া হবে এবার। বলা হবে ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের ভেদরেখা পেরিয়ে মানুষে মানুষে সহাবস্থানের কথা। হিংসার বিপরীতে অহিংসতার কথা।

পহেলা বৈশাখে এবারও থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা। বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের অন্যতম অনুষঙ্গ। পয়লা বৈশাখ ঘিরে এখন জোর প্রস্তুতি চলছে চারুকলায়। শোভাযাত্রার চারটি শিল্প-কাঠামোর মাধ্যমে তুলে ধরা হবে দেশের এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি। এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার স্লোাগান ‘আমরা তিমির বিনাশী’। থাকবে হাতি, শিশু ও গন্ধগোকুলের অবয়ব। শিল্প-কাঠামোর মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড় হবে ২৩ ফুট দৈর্ঘ্যরে গন্ধগোকুল। বৈশাখী সকালে সড়কে বের হওয়া হাতিটির উচ্চতা হবে ১২ ফুট। শিশু পুতুল এবং চাকার উচ্চতা হবে যথাক্রমে ১৬ ফুট ও ১২ ফুট। এই চার শিল্প-কাঠামোর সঙ্গে শোভাযাত্রায় আরও থাকবে রাজা-রানির মুখোশ, পাখির মুখোশ, লক্ষ্মী পেঁচা ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রতিকৃতি।

১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ সকাল ৯টায় চারুকলা থেকে বের হবে এই শোভাযাত্রা। এরপর শিশু পার্কের সামনে থাকে বাঁক নিয়ে ক্যাম্পাস ঘুরে পুনরায় ফিরে আসবে চারুকলায়।

নানা ধরনের তৈজসপত্রের পাশাপাশি এবারের পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রায় আরও আছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চিত্রিত জলরংসহ নানা মাধ্যমের চিত্রকর্ম। এসব চিত্রকর্ম বিক্রির অর্থ থেকে শোভাযাত্রার ব্যয় মেটানো হবে। একইভাবে তুহিন পাখি, সরাচিত্র, রাজা-রানির মুখোশ বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থও যুক্ত হবে ওই তহবিলে। নিয়মানুযায়ী চারুকলার শেষবর্ষ অর্থাৎ এমএফএ ২৫তম ব্যাচ এবারের শোভাযাত্রা আয়োজনের দায়িত্ব পালন করছে।

মঙ্গল শোভাযাত্রার বিষয়ে ঢাকা বিশ্বাবিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন চিত্রশিল্পী নিসার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, পুরোপুরি ছুটির আমেজ থাকবে এবারের পহেলা বৈশাখে। অনেকেই বাড়ি চলে যাবেন। সেদিক থেকে মঙ্গলশোভাযাত্রা আমরা করতে পারছি এটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আমরা সবাইকে এ আহ্বানও করেছি যে, বাড়ি গেলেও সবাই নিজ নিজ এলাকায় যেন মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন করেন। সেদিক থেকে সারা দেশেই মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন হবে প্রকৃতপক্ষে।

এর বাইরে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করবে শিল্পকলা একাডেমি। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ শীর্ষক সংগীতাসরের আয়োজন করবে সুরের ধারা। এছাড়া বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, ঋষিজ শিল্পগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের পয়লা বৈশাখ উদ্্যাপনের আয়োজন থাকছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম