Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

সংসদ ভবন এলাকায় কিশোর খুন

ছুরি দিয়ে আঘাত করে হাতেম নেতৃত্বে ছিল জাকির

Icon

মামুন আবদুল্লাহ

প্রকাশ: ২০ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

স্বেচ্ছাসেবক লীগের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় ছুরিকাঘাতে কিশোর খুনের ঘটনায় বেশ কয়েকজনকে শনাক্তের খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের সময় নিহত কিশোর মেহেদী হাসানের (১৭) সঙ্গে থাকা অন্যরা হামলাকারীদের ছবি দেখে তাদের চিনতে পেরেছেন। ইতোমধ্যে হামলাকারীদের কয়েকজনকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আটক করেছে এমনটাও তারা শুনেছেন। তবে পুলিশ বা র‌্যাবের পক্ষ থেকে বিষয়টি স্বীকার করা হয়নি। এদিকে, রোববার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত মেহেদীর লাশ পরিবারের

কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ভাটারা নুরের চালা কাঁচাবাজার জামে মসজিদে জানাজা শেষে বিকালে গ্রামের বাড়ি জামালপুরের উদ্দেশে রওনা হন স্বজনরা। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তার লাশ দাফন করার কথা। এ ঘটনায় রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলা হয়নি।

ভাটারা এলাকার স্বেচ্ছাসেবক লীগের একাধিক নেতা যুগান্তরকে বলেন, হামলাকারীরা ঢাকা মহানগর উত্তর সিটি করপোরেশনের ২৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফোরকান ও তার ভাই আসাদের অনুসারী। তারা ফোরকান ও আসাদের লোক হিসাবে পরিচিত। তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, জমি দখল, মাদক কারবার, ফুটপাত দখল, কিশোর গ্যাং পরিচালনাসহ অনেক অভিযোগ রয়েছে। হামলাকারী অনেককে শনাক্ত করে তাদের ছবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন ধরা পড়েছে। তবে কতজন ধরা পড়েছে এবং কে কে ধরা পড়েছে সেটি জানতে পারেননি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ফোরকান ও আসাদের অনিয়ম দুর্নীতি নিয়ে গণমাধ্যমে একাধিক খবর প্রচার হলেও তারা মাথা ঘামান না। তাদের বিরুদ্ধে দুদকেও অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক কিশোর যুগান্তরকে জানায়, হামলার নেতৃত্বে ছিল জাকির খান নামে এক যুবক। তার সঙ্গে কথা বলে মুহূর্তেই হামলা শুরু করে। মেহেদীকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হাতেম নামে একজন। পিকঅ্যাপ ভ্যান থেকে নেমে হাতেম ছুরি দিয়ে মেহেদীকে এলাপাতাড়ি আঘাত করে। মিলন নামে আরেকজনের হাতে ছুরি ছিল। সেও কয়েকবার আঘাত করতে তেড়ে আসে। মারামারিতে অংশ নেওয়াদের মধ্যে এনামুল, রাজীব, পাভেলের নাম উল্লেখ করে তারা। কিশোররা আরও জানায়, প্রতিপক্ষের সবার হাতে পাইপ, লাঠি, ছুরি ছিল। তাদের দেখে মনে হয়েছে, তারা মারামারি করতে আগেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল। নিহত কিশোরের মামা মোহাম্মদ চয়ন মিয়া যুগান্তরকে বলেন, মেহেদীর লাশের ময়নাতদন্ত শেষে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে কাউন্সিলর ফোরকানের দাবি, হামলাকরীরা কেউ তার লোক নন। তিনি জড়িতদের বিচারও দাবি করেন। নিহতের ভাটারার বাসায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অনেক আত্মীয়-স্বজন নিজেরা কান্না করছেন, আবার কেউ কেউ মেহেদীর বাবা-মাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন। অ্যাম্বুলেন্সে ছেলের লাশ উঠানোর সময় অচেতন হয়ে পড়েন বাবা। প্রতিবেশীদের কয়েকজন বলেন, ছেলেটা অনেক ভালো ছিল। কারও সঙ্গে কখনো ঝগড়া করতে দেখেননি। শেরেবাংলা নগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সজীব দে যুগান্তরকে বলেন, পুলিশ জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টির ওপর র‌্যাবের নজরদারি আছে। এ ঘটনায় মামলা হলে সেটির ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম