Logo
Logo
×

দ্বিতীয় সংস্করণ

জবির নতুন ক্যাম্পাসে ব্যাপক অনিয়ম

তদন্তে কমিটি

Icon

সাকেরুল ইসলাম, জবি

প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) নতুন ক্যাম্পাসের নানা অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. শওকত জাহাঙ্গীরকে আহ্বায়ক ও উপ-প্রধান প্রকৌশলী (সিভিল) মো. আমিরুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ-উল-আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ভূঁঞা, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একজন প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মনিরা জাহান সুমি, ইউজিসি পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মোশারফ হোসেন।

এর আগে ঢাকার কেরানীগঞ্জে ৬ বছর ধরে চলা জবির নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্পের নানা কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ৫ তলা প্রকৌশল ও প্ল্যানিং দপ্তরের ভবন নির্মাণের কাজে ৫৫ ফিটের জায়গায় ৩০-৩৫ ফিট পাইল স্থাপন করা হচ্ছে। বিষয়টি জানার পর উপাচার্য প্রধান প্রকৌশলীকে তলব করেন। পরে নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণ তদারকি কমিটি সরেজমিনে পাঠান। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি সত্যতাও পেয়েছে তদারকি কমিটি।

সরেজমিনে নতুন ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, নতুন ক্যাম্পাসের ৫ তলা প্রকৌশল ভবনের ভিত্তির জন্য ৫৫ ফিট কনক্রিটের পাইল তৈরি করা রয়েছে। সেই পাইলগুলোর ৮০ ভাগেরও বেশি পাইল মাটির গভীরে ৫৫ ফিট ঢোকানো হচ্ছে না। পাইলের ৩০-৩৫ ফিট ঢুকিয়ে বাকিটা ভেঙে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, তড়িঘড়ি করে রাতের অন্ধকারে ভবনের পাইলিংয়ের কাজ করা হয়েেেছ। প্রতিটি পাইল কোনোটা ৩০ ফিট, কোনোটা ৩৫ ফিট ঢুকিয়ে বাকি অংশ ভেঙে ফেলা হচ্ছে। প্রতিদিন যেখানে সারাদিন মিলে একটি হ্যামার ৩টা পাইল ঢোকাতে পারে। সেখানে ১০-১২ টি পাইল ঢোকানোর কাজ শেষ করা হয়েছে।

অনিয়ম করে ভবনের টেন্ডার : এদিকে টেন্ডারর অফিসিয়াল ইস্টিমেট মূল্য ৫৬ কোটি ৪৭ লাখ ৪৫ হাজার ৭০ টাকা। এ কাজের টেন্ডার আহবানে দুটি দরপত্র বিক্রি হয়। এর মধ্যে এনডিই ও কেবিএল নামক প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ৬১ কোটি ৫৫ লাখ ৪৩ হাজার ৪৩৭ টাকায় কাজ করতে মূল্য দেয়। অন্যদিকে এসএসএল ও আরএস নামক দুটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ৬১ কোটি ৮৯ লাখ ৯ হাজার ৩৪৭ টাকা মূল্য দেয়। ৩৪ লাখ টাকা কম দিয়েও টেন্ডার পায়নি এনডিই-কেবিএল। প্রধান প্রকৌশলী, প্রকল্প পরিচালক ও সাবেক কোষাধ্যক্ষসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে ওঠা টেন্ডার চক্র এসএসওল-আরএস প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছে। এ টেন্ডারের কাজ করছে প্রধান প্রকৌশলীর নিজ জেলার ঠিকাদার ওমর ফারুক রুমি। ভবনের কাজ সম্পর্কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, পাইলগুলো ৫৫ ফিট দেওয়ার কথা থাকলেও নিচের মাটি শক্ত হওয়ার কারনে সম্পূর্ণ ঢোকানো সম্ভব হচ্ছে না। পরে বিষয়টি জানার পর গিয়ে আমরা মাটি পরীক্ষা করছি। সে রিপোর্টেও মাটি শক্তের প্রমাণ পাওয়া গেছে। ঠিকাদার ওমর ফারুক রুমির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি প্রকৌশল ভবনের ঠিকাদার না। এরপর আপনি ঘাটের ঠিকাদার ওমর ফারুক রুমি কিনা প্রশ্ন করলে তিনি ফোন কেটে দেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, নতুন ক্যাম্পাসের প্রকৌশল ভবনের পাইলিংয়ের অনিয়ম তদন্তে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রয়াত উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক স্যার যে প্রকল্পগুলো পাস করে গেছেন, আমি সেগুলোর ওয়ার্ক অর্ডার করেছি শুধু।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম