কোটা আন্দোলনে নিহত রাকিবের মায়ের আহাজারি
খালিদ হোসেন সুমন, দোহার নবাবগঞ্জ
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
‘আমার বাবাকে কারা এভাবে দুনিয়া থেকে নিয়ে গেল তাদের কি বিচার হবে না।’ এ কথা বলেই বার বার আর্তনাদ করছিল নিহত রাকিবের মা সুইটি আক্তার।’ আমার বাবার লাশটাও গ্রামে আনতে দেয়নি ওরা।’ এ কথা বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন কোটা আন্দোলনে নিহত নির্মাণ শ্রমিক রাকিবের মা সুইটি আক্তার। নবাবগঞ্জ উপজেলার কামার খোলা গ্রামে রাকিব (২৩)-এর বাড়ি। সেখানে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখা যায়। ১৯ জুলাই রাকিবের গলায় গুলিবিদ্ধ হলে সে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পরে সহকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ নিয়ে যায়। সেখানে তার লাশ ফেলে রাখা হয়। পরের দিন ২০ জুলাই সন্ধ্যা সাড়েটায় ক্যান্টনমেন্ট থানা সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্ত করে। এর ২ দিন পর ২২ জুলাই পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। এ সময় পুলিশ তাদের লাশ নিয়ে দ্রুত সরে যেতে বলে। ৩০ মিনিটের মধ্যে লাশ দাফনের জন্য বলা হয়। নিরুপায় হয়ে লাশ আর নবাবগঞ্জ আনতে পারেনি। পরে গাজীপুরের সখিপুরেই তাড়াহুড়া করে লাশ দাফন করা হয়।
প্রায় ২০ বছর আগে স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র চলে যায়। সন্তানদের আঁকড়ে ধরেই জীবন চলছিল তার। তিন ছেলে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খায় সুইটি। নিরুপায় হয়ে গাজীপুর আশ্রয় নেন। সেখানে কখনো পোশাক শিল্পে আবার কখনো প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে ছেলেদের ভরণপোষণ করে জীবন চালাতেন স্বামী পরিত্যক্ত এই গৃহবধূ। নিহত রাকিব তার দ্বিতীয় সন্তান। রাকিবের উপার্জনেই সংসার চলতো সুইটি আক্তারের। ছেলের অনুরোধেই কয়েক বছর আগে সুইটি চাকরি ছেড়ে দেন। রাকিবই ছিল তার সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম।
রাকিব ঢাকা জেলার সাভার নর্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি গ্রিল কারখানায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করত। ১৯ জুলাই বিকালে কাজ শেষে সহকর্মীদের সঙ্গে ভাড়া বাসা সখিপুরে ফিরছিল রাকিব। এ সময় মিছিলে ছোড়া গুলিতে মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। নিহতের ছোট ভাই সাকিব বলেন, আমাদের কেউ নেই। উপরে আল্লাহ ও আমার মাই ভরসা। আমার ভাইকে যারা গুলি করেছে তাদের বিচার চাই। আমার ভাই তো কোনো অপরাধ করেনি।
