দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা তিনদিন চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা ও রাজশাহীসহ দেশের বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি বৃষ্টি হতে পারে। তাছাড়া অতিভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকার কোনো কোনো স্থানে ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। সে সঙ্গে ভারি বর্ষণের কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে। মঙ্গলবার আবহাওয়া অধিদফতরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা এ তথ্য জানান।

এদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামের সদ্বীপে। এছাড়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ৬২, ফেনীতে ৫৯, সাতক্ষীরায় ৫৮, খুলনার কয়রা ও কক্সবাজারে ৫৭ মিলিমিটারসহ সারা দেশে কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুর ও রাজশাহীসহ এসব অঞ্চলের বড় নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে, তবে বিপৎসীমা অতিক্রম করবে না। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরি, হালদা ও গোমতী নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। গোমতী, মুহুরী, ফেনী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর অববাহিকায় আজ মাঝারি-ভারি থেকে ভারি এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। নদীসমূহের পানি সমতল আগামী তিনদিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে; আগামী ৭২ ঘণ্টায় ফেনী জেলার মুহুরি নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।

তিনি জানান, সিলেট বিভাগের সারি গোয়াইন নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে; তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই অববাহিকায় আগামী একদিন মাঝারি থেকে ভারি এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন মাঝারি-ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ নদীর পানি সমতল আগামী তিনদিন পর্যন্ত বাড়তে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিলেট জেলার সারিগোয়াইন নদী, সুনামগঞ্জ জেলার যাদুকাটা নদী ও নেত্রকোনা জেলার সোমেশ্বরী নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে। তাছাড়া সুরমা-কুশিয়ারা নদীগুলোর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে; নদীসমূহের পানি সমতল আগামী ৩ দিন বৃদ্ধি পেতে পারে; তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এই অববাহিকায় আগামী একদিন পর্যন্ত মাঝারি থেকে ভারি এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন মাঝারি-ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তিস্তা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা আগামী ২ দিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে, তৃতীয় দিন বাড়তে পারে।

অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী একদিন পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকতে পারে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে ও পরবর্তী ২ দিন পানি বাড়তে পারে। তবে তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। গঙ্গা-পদ্মার পানিও সমতল স্থিতিশীল আছে। তা আগামী পাঁচদিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।