মিরপুরে ২২ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় ছয় ডাকাত রিমান্ডে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
মিরপুরে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীর ২২ লাখ টাকা লুটের ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সূত্র ধরে ছয় ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এরা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তি, মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী, স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও হুন্ডি ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে ডাকাতি করত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতরা জানিয়েছে, ২৪ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচরে ৫০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই এবং গত বছরের ২০ অক্টোবর ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডে গুলি করে ৫২ লাখ টাকা লুটের সঙ্গে তারা জড়িত ছিল।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বুধবার বিকালে সংবাদ সম্মেলনে ডিবি দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, গ্রেফতার জলিল মোল্লা, মোস্তাফিজ, পলাশ, দিপু, সোহাগ ও মাইক্রোবাসচালক জাফর পেশাদার ডাকাত চক্রের সদস্য। অভিযানকালে একটি মাইক্রোবাস, তিনটি মোটরসাইকেল, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, ২ লাখ ১২ হাজার টাকার জালনোট, ৫ লাখ ৩ হাজার টাকা এবং বিভিন্ন দেশের ১০৬টি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়েছে। ডিবির তথ্যমতে, ২৭ মে সকাল সাড়ে ৯টায় মিরপুর-১১ সি-ব্লকের বাসা থেকে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ী রাসেল ও তার ভগ্নিপতি জাহিদুল হক চৌধুরী ২১ লাখ টাকা ও বিদেশি মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছিলেন মিরপুর-১০ নম্বরে তাদের অফিসে। পথে শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝামাঝি একটি গলিতে ৭-৮ জন মুখোশধারী ডাকাত মোটরসাইকেলে এসে তাদের পথরোধ করে। এক ডাকাত পিস্তল ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিলে অন্য একজন ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং একজন জাহিদুলকে চাপাতি দিয়ে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদুল রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। ডাকাতরা চারটি মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়। ঘটনার ভিডিও একজন পথচারী মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় জাহিদুল হক মিরপুর থানায় মামলা করেন। ডিবি কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিবি পুলিশ প্রথমে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস শনাক্ত করে। মাইক্রোবাসের নম্বরের সূত্র ধরে প্রথমে মালিককে খুঁজে বের করা হয়। পরে তিনি জানান, মাইক্রোবাসটি তার এবং এটি ভাড়া করেছিল চালক জাফর। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে জাফরকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাফর ডাকাতির ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা স্বীকার করে। তবে সে জানায়, ডাকাতির সময় গাড়িতেই বসা ছিল। ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি জড়িত একজনের ছবি দেখানো হলে সে তার পরিচয় জানায়। সেই সূত্র ধরেই তথ্য বিশ্লেষণ করে মঙ্গলবার একযোগে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও যশোরে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের মূল পরিকল্পনাকারী জলিল মোল্লাসহ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, হত্যা ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
