কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরে ঢুকে এক সংখ্যালঘু নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন ঘরের মধ্যেই তাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে। বৃহস্পতিবার রাতের এ ঘটনায় ওই নারী শুক্রবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেছেন। এদিকে নির্যাতনের ৫১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শনিবার রাতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ঘটনার রাতে তার বাবা-মা বাড়ির বাইরে ছিলেন। ওই সময় ফজর আলী ঘরের বাইরে এসে দরজা খুলতে বলেন। ভুক্তভোগী দরজা না খুললে অভিযুক্ত কৌশলে ঘরে প্রবেশ করে এবং জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে ফজর আলীকে আটক করে মারধর করে। সেই সঙ্গে সেই নারীকেও মারধর করে ভিডিও ধারণ করে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় বিবস্ত্র অবস্থায় ১০-১২ জন যুবক ওই নারীকে মারধর করছে। এ সময় ওই নারী বাঁচার জন্য চিৎকার করলেও কেউ তাকে রক্ষা করেনি। পরে ভুক্তভোগী ওই নারী (২৫) নিজেই মুরাদনগর থানায় অভিযুক্ত ফজর আলীকে (৩৮) আসামি করে ধর্ষণ মামলা করেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত পলাতক রয়েছেন।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, অভিযুক্ত ফজর আলী বাহেরচর পাচকিত্তা গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে। ভুক্তভোগীর স্বামী গত পাঁচ বছর ধরে প্রবাসে রয়েছেন এবং তার দুটি সন্তান রয়েছে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, টাকা ধার নেওয়ার সূত্রে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তের পরিচয় ছিল। এদিকে স্থানীয় লোকজন ধর্ষক ওই ব্যক্তিকে বিএনপি কর্মী বলে দাবি করলেও বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তাকে কেউ কেউ আওয়ামী লীগের কর্মী বলে প্রচার চালাচ্ছেন। এরই মাঝে আওয়ামী লীগের মিছিলে অংশগ্রহণের ধর্ষকের একাধিক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। আসামিকে ধরতে পুলিশের দুটি টিম মাঠে রয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।

ওসি আরও বলেন, ওই নারী বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা পুলিশকে বলেননি। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াটা আইনগত অপরাধ। আমরা সেই ভিডিও ছড়ানোর উৎসও খতিয়ে দেখছি।