যুবদল নেতার নেতৃত্বে হোটেলে দুই নারীর ওপর হামলা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীর বনানীতে হোটেল জাকারিয়া ইন্টারন্যাশনালে দল বেঁধে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার রাতে বনানী থানা যুবদলের আহ্বায়ক মনির হোসেনের নেতৃত্বে এ হামলার অভিযোগ করেছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় বুধবার বনানী থানায় একটি মামলা করেছে হোটেল জাকারিয়া কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এ পরিস্থিতিতে মনির হোসেনকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে যুবদল।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাসেল সরোয়ার বলেন, হামলার ঘটনায় হোটেল কর্তৃপক্ষ একটি মামলা করেছে। জানা গেছে, হোটেল জাকারিয়ার করা মামলায় পাঁচ জনকে আসামি করা হয়েছে। তারা হলেন মনির (৪২), লিটন (৩০), হাসান (৩৫), সামু (৩২) ও জহির (৩০)। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ৩০ জুন রাত ৮ টার দিকে অভিযুক্ত মনির হোটেলে এসে একটি ভিআইপি রুম নিতে চান। কিন্তু গেস্ট থাকায় তাকে ভিআইপি রুম দেওয়া সম্ভব হয়নি। তখন তিনি বারে খাবার ও ড্রিংকস অর্ডার করেন। খাবার শেষে স্থানীয় নেতা পরিচয় দিয়ে বিলে ডিসকাউন্ট চান। তাকে ডিসকাউন্ট করে বিল গ্রহণ করা হয়। এরপর তিনি ভিআইপি রুম না দেওয়ায় দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়ে চলে যান। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বারে ঢুকে মনিরের নির্দেশে লিটন বার থেকে একটি গ্লাস হাতে নিয়ে ফ্লোরে ছুরে ভেঙে বলে-মনির ভাই তোদের হোটেলে আসছিল, তোরা ভিআইপি কেবিন না দিয়ে অসম্মান করেছিস। আমরা মনির ভাইয়ের লোক, তোরা মনির ভাইকে চিনে রাখবি। এরপর তারা টিভি, টেবিল, চেয়ার, ক্রোকারিজ, সিসি টিভি মনিটর, সিসি টিভি ক্যামেরা, ল্যাপটপ ও গ্লাস ভাঙচুর করে ১০ লাখ টাকার ক্ষতি করে।
অন্যরা হোটেলের অফিস রুম ও ক্যাশ কাউন্টার থেকে ৭০ হাজার টাকাসহ আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার মদ ও বিয়ার কৌশলে নিয়ে যায়। তখন বারের স্টাফরা বাধা দিতে গেলে মারধর করা হয়। পরবর্তীতে হুমকি দেয়, বিষয়টি পুলিশকে জানালে হোটেলে ব্যবসা বন্ধ করে দেবে এবং মেরে ফেলবে।
এ ঘটনায় মনির হোসেনকে গ্রেফতার ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা না নেওয়ার সমালোচনা শুরু হয়। এ পরিস্থিতিতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মনির হোসেনকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথা জানিয়েছে যুবদল। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বহিষ্কৃত নেতাদের কোনো ধরনের অপকর্মের দায়দায়িত্ব দল নেবে না। যুবদলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, শাড়ি পরা এক নারী হোটেলের সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে নিচে নামছেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে এক ব্যক্তি ওই নারীর পথ রোধ করে তাকে আঘাত করছেন। এতে ওই নারী মেঝেতে পড়ে যান। ওই সময় তার পেছনে আরেক নারীও নামার চেষ্টা করছিলেন। তাকে পেছন থেকে ধাওয়া করছিলেন কয়েকজন। একজন তাকে ধরে নিচে ফেলে দেন। এরপর হামলাকারীরা সবাই মিলে মেঝেতে পড়ে যাওয়া দুই নারীকে আক্রমণ করেন, তখন তারা চিৎকার করছিলেন। হামলায় ৮ থেকে ১০ জনকে দেখা গেছে।
