স্বজন মুক্তগদ্য
ছোটবেলার বিজয় দিবস
লাবনী সরকার
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
হৃদয়পটে ভেসে ওঠে ছোটবেলার কথা। মিষ্টি স্বরে আমাদের কাছে ডেকে স্যার বলে দিতেন, আগামীকাল সকাল সকাল আসবে কিন্তু; বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরেই শুরু হয়ে যেত ফুল সংগ্রহের কাজ। গ্রামে কার বাড়িতে কী ফুল আছে, তার খোঁজ চলত আমাদের। লুকিয়ে লুকিয়ে এ-বাড়ি ও-বাড়ি থেকে একগুচ্ছ ফুল হলেই বেজায় খুশি আমরা। হাজারটা ভাবনা কাটিয়ে রাত শেষে ভোর। তড়িঘড়ি করে ঘর থেকে বের হয়ে সোজা চলে যেতাম প্রিয় বান্ধবীদের বাড়ি। দলবেঁধে চলতাম সবসময়। কারও হাতে গাঁদা, কারও হাতে গোলাপ, রক্ত জবা।
শীতের শিশির ভেজা সকাল। গ্রামীণ মেঠোপথের দুধারে নানান জংলি ফুলের সৌরভ। স্কুলে পৌঁছে মনটা ভরে যেত পুরো বিদ্যালয় প্রাঙ্গণজুড়ে বিজয়ের হাসি দেখে। রঙিন পতাকায় ছেয়ে যেত মাঠ। লাল-সবুজের পতাকা হাতে ছুটত হৃদয়। সমস্বরে গাইতাম জাতীয় সংগীতের কথামালা। খালি পায়ে এক কদম, দুকদম করে পুরো এলাকা ঘুরে স্মৃতিস্তম্ভে। দূর থেকেই শোনা যেত মাইকে বাজা মহান মুক্তিযুদ্ধের অমর সব সৃষ্টি। একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার, সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার। কিংবা ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’। অথবা ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তোমাদের ভুলনো না’। সত্যিই গানগুলো হৃদয়কে মোহিত করে তুলত। দেশপ্রেমের অনুভূতি জাগ্রত করত প্রতিবার। এখনো খুব বেশি স্মৃতির পটে ভেসে ওঠে ছোটবেলার দৃশ্যগুলো।
সদস্য, স্বজন সমাবেশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
