স্বজন প্রতিবেদন
বিজয়নগরে ফলের রাজ্যে পর্যটকের ভিড়
এসএম কামরুল হাসান শান্ত
প্রকাশ: ২৬ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বছর ঘুরে আবারও এলো মধুমাসখ্যাত জ্যৈষ্ঠ মাস। গ্রীষ্মের প্রান্তিলগ্নে মধুমাস যেন মধু ঝরাতেই আসে। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু, আনারসের মতো বাহারি ফল একযোগে পাকতে শুরু করে এ মাসে। পাকা ফলের সুঘ্রাণে মাতোয়ারা হয় পরিবেশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরের ফলের বাগান যেন ভ্রমণপিপাসুদের মনে নতুন জায়গা করে নিয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার আশপাশের জেলা কুমিল্লা, ফেনী, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, ঢাকাসহ দেশের নানাপ্রান্ত থেকে উৎসুক জনতা ভিড় করছেন বিজয়নগরে। সপরিবারে দলবেঁধে বাগানে ঘুরতে এসে নিজ হাতে ফল পেড়ে খেতে পেরে শৈশবের আনন্দ ফিরে পান প্রতিটি মানুষ। আনন্দচিত্তে বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় প্রত্যেকেই সুস্বাদু ফল কিনে নিয়ে যান।
উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে আত্মীয়স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষী ও পরিচিতজনদের উপস্থিতিতে এক উৎসবের আমেজে পরিণত হয়। এ জ্যৈষ্ঠমাসে বিজয়নগর উপজেলার অধিকাংশ বাড়িতে বাড়তি প্রস্তুতি রাখতে হয় বলে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা জানান।
মধুমাসে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ফল উৎপাদনের বিশেষ চাহিদা থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে যেন সব ধরনের ফলের মেলা বসে। বাণিজ্যিকভাবে লিচু, আম, জাম, কাঁঠাল ও আনারসের চাষ হয় এখানে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশপাশে কয়েকটি জেলায় তুলনামূলকভাবে ফলের চাষে অনগ্রসর হওয়ায় বিজয়নগরের ফল চাষের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে আত্মকর্মসংস্থান। ফলে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।
মধুমাসখ্যাত জ্যৈষ্ঠমাসকে ঘিরে বিজয়নগর উপজেলার বাগানের পাশাপাশি বিভিন্ন বাজারে দেশি মৌসুমি ফলের ক্রেতা-বিক্রেতার আনাগোনায় জমজমাট থাকে। বিশেষ করে শেষরাত থেকে বাগানের খামারিরা উপজেলার সবচেয়ে বড় বাজার আউলিয়া বাজারে লিছু নিয়ে উপস্থিত হতে শুরু করে।
এ ছাড়া হরষপুর দেওয়ান বাজার, চম্পকনগর বাজার, সিঙ্গারবিল বাজার, বিষ্ণুপুর বাজারসহ উপজেলার ছোট-বড় অনেক বাজারে লিচু, আম, কাঁঠালসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফল ক্রয়-বিক্রি হয়।
গ্রীষ্মকালীন ফল চাষে এগিয়ে আছে বিজয়নগরের হরষপুর, পাহাড়পুর, বিষ্ণুপুর, চম্পকনগর ও সিঙ্গারবিল ইউনিয়ন। ফলের বাগানকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন হাজারও দর্শনার্থী আসছে। ঘুরতে আসা হবিগঞ্জের আল আমিন জানান, সবসময় বাজার থেকে বিভিন্ন ফল কিনে খেলেও বাগানে এসে সুস্বাদু ফল নিজের হাতে পেড়ে খাওয়ার তৃপ্তি অন্য রকম। তাই সপরিবারে ঘুরতে এসে খুব ভালো লাগছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাধনা ত্রিপুরা জানান, বিজয়নগরে জ্যৈষ্ঠ মাসে লিচুসহ বিভিন্ন ফল বাগানে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তার নিশ্চিতের বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করে নির্বিঘ্নে ফলের মৌসুম শেষ করার জন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
