দুই বোনকে বোলিং করতে হতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
১৩ বছর বয়সে অভিষেক শর্মা প্রথম রোজগার করেছিলেন দুই হাজার রুপি। তার দাদি বিশ্বাস করতেন, একদিন তার নাতি অনেক নাম কামাবে। দাদি আর নেই। তার কথা গেঁথে আছে অভিষেকের হৃদয়ে। স্বর্ণমন্দিরের শহর অমৃতসরে জন্ম অভিষেকের। ক্রিকেট তার ধ্যান-জ্ঞান। আরাধনা। চার বছর বয়সে বাবার কাছ থেকে প্রথম ‘থাপি’ (পাঞ্জাবি ভাষায় ব্যাট) পেয়েছিলেন। সেই থেকে তার দুই বোনের শান্তি উধাও। অভিষেক চাইতেন, দুই বোন যেন বোলিং করেন। মাকেও বল করতে হতো। বাবা রাজকুমারের ক্রিকেট একাডেমি ছিল। ছোট্ট অভিষেক জিদ করত, ‘ম্যায়নে ভি খেলনা হ্যায়’ (আমিও খেলতে চাই)। কলোনির ছেলেদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাট করেও কোনো ক্লান্তি নেই। বল কুড়িয়ে আনতে পাড়ার ছেলেদের নাভিশ্বাস উঠত। ‘হামসে আউট হি নাহি হোতা’ (আমরা ওকে আউটই করতে পারি না)। সারা দিন বোলিং করে যেতে হতো বেচারাদের। অভিষেকের অত্যাচারে ব্যাট করার সুযোগ পেত না বন্ধুরা। অভিষেকের বাবার তখন দ্বৈত ভূমিকা। ক্রিকেটপাগল ছেলেটির তখন তিনি অর্ধেক বাবা, অর্ধেক কোচ। রাজকুমারকে প্রায়ই লোকজন বলত, ‘তোমার ছেলে একদিন ভারতের হয়ে খেলবে। জবরদস্ত খেলোয়াড়।’ কেমন জবরদস্ত, টের পেয়েছে পাকিস্তান। রোববার রাতে দুবাইয়ে এশিয়া কাপ সুপার ফোরের ম্যাচে ৩৯ বলে ৭৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হয়েছেন অভিষেক। ভারত জিতেছে ছয় উইকেটে।
শৈশবেই রাজকুমার বুঝতে পেরেছিলেন, তার ছেলে প্রতিভা নিয়ে জন্মেছে। হাফ প্যান্ট পরা বয়সে বাবার কাছে অভিষেকের অবিরাম প্রশ্ন থাকত, ‘পাপা, সাবহি লাড়কে বল রোকতে কিউ হ্যায়? জাব মার সাকতে হ্যায় তো কিউ নাহি মারতে?’ (পাপা, ছেলেরা সবাই রক্ষণাত্মক খেলে কেন? মারতে পারে যখন, মারে না কেন?)। পাকিস্তান ম্যাচে অভিষেক দেখিয়েছেন, কীভাবে মারতে হয়। ৭৪ রানের মধ্যে ৫৪ রানই করেছেন তিনি ‘মেরে’। মানে, ছয়টি চার ও পাঁচটি ছয়ে এসেছে তার মোট রানের প্রায় ৭৩ শতাংশ। এজন্যই তো এই পাঞ্জাবি তরুণ টি ২০ র্যাংকিংয়ে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটার।
