ব্যাডমিন্টনের ঈশান কোণে আশার আলো
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ব্যাডমিন্টনের সাফল্য ছিল হাতেগোনা। সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসের মধ্যেই আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন লাল-সবুজের শাটলাররা। ধীরে ধীরে সেই গণ্ডি থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছেন তারা। এখন বৈশ্বিক পর্যায়েও পদক জিততে শুরু করেছেন শাটলাররা, যা দেশের ব্যাডমিন্টন অঙ্গনে আশার আলো দেখাচ্ছে।
এ মাসের শুরুর দিকে কানাডায় অনুষ্ঠিত হয় ইউনেক্স-কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জ। টুর্নামেন্টের পুরুষ দ্বৈতে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন বাংলাদেশের দুই শাটলার আল আমিন জুমার ও মোয়াজ্জেম হোসেন অহিদুল। সেমিফাইনালে স্বাগতিক দলের কাছে ২-১ সেটে হেরে ব্রোঞ্জ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। ঢাকায় সদ্য সমাপ্ত ইউনেক্স-সানরাইজ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল চ্যালেঞ্জেও তাদের নিয়ে প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী তারা খেলতে পারেননি। এই জুটি কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বাদ পড়ে। তবে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র জুটি। আল আমিন ও ঊর্মি আক্তার জুটি কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের স্বস্তিক মাথারাসান ও কীর্তি মাঞ্চালা জুটিকে ২১-১৬, ১৯-২১ ও ২১-১৮ পয়েন্টে (২-১ সেটে) হারিয়ে সেমিফাইনালে ওঠে। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে আল আমিন ও ঊর্মি জুটির কাছে হার মানে থাইল্যান্ডের কুনলাপাত লোথং ও সারিসা জানপেং জুটি। তাদের হার সরাসরি ২১-১১ ও ২১-১৪ গেমে (২-০ সেটে)। যদিও স্বর্ণপদকের লড়াইয়ে থামতে হয়েছে স্বাগতিক জুটিকে। ফাইনালে মালয়েশিয়ান জুটির কাছে ২৭-২৫ ও ২১-১৪ পয়েন্টে হেরে রুপা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে আল আমিন-ঊর্মি জুটিকে।
এই রুপা আগামীর অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। আরও উন্নত অনুশীলনের সুযোগ পেলে সামনে স্বর্ণপদক জিতবেন বলেও জানান আল আমিন। তার কথা, ‘এত কাছে গিয়েও স্বর্ণপদক অধরা থাকল, এজন্য খারাপ লাগছে। তবে পর্যাপ্ত অনুশীলন পেলে আমরাও স্বর্ণ জিততে পারব। মালয়েশিয়া আমাদের চেয়ে সুযোগ-সুবিধা ও ট্রেনিংয়ে অনেক এগিয়ে। আমরা কিছুটা হলেও পিছিয়ে। একক, দ্বৈত এবং মিশ্র দ্বৈত তিন বিভাগেই আমি খেলেছি। আমি কোনো ক্লান্তি অনুভব করিনি, আনন্দ নিয়েই খেলেছি। এবার পারিনি, ভবিষ্যতে অবশ্যই দেশের জন্য স্বর্ণপদক জিতে আনব।’
ভালো অনুশীলন যে ভালো ফল এনে দেয়, তার প্রমাণ ঊর্মি আক্তার। তার কথা, ‘আমরা দীর্ঘদিন এসএ গেমসের অনুশীলনে ছিলাম। এই অনুশীলনই আমাকে সহায়তা করেছে রুপা জিততে। তবে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি অনুশীলনের প্রয়োজন। ব্যাডমিন্টনে উন্নত দেশগুলোর মতো আমরাও যদি সব ধরনের সুবিধা পেতাম, তাহলে আরও অনেক দূর যেতে পারতাম।’ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল কবির সুমন দেশের ব্যাডমিন্টন উন্নয়নে আশাবাদি, ‘আমরা চেষ্টা করছি শাটলারদের মানোন্নয়নে কাজ করতে। এসএ গেমসের আগে ইন্দোনেশিয়া থেকে কোচ এনেছিলাম। তারই ফল তারা পেয়েছে কানাডা ও দেশের টুর্নামেন্টে। আশা করি সামনেও তাদের জন্য আমরা ভালো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে পারব।’ ফেডারেশনের সভাপতি হাবিব উল্যাহ ডনের কথা, ‘শাটলাদের জন্য আমরা সব কিছু করতে প্রস্তুত।’
