Logo
Logo
×

খেলা

ফুটবলার থেকে রেফারি যশোরের আকলিমা

Icon

ইন্দ্রজিৎ রায়, যশোর ব্যুরো

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যশোরের ফুটবলের মোটামুটি যারা খোঁজখবর রাখেন তাদের কাছে নামটা নতুন নয়। জেলা মহিলা ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আকলিমা খাতুন যশোরের ফুটবল ইতিহাসে প্রথম নারী রেফারি। বিশ্বের প্রথম নারী রেফারি হিসেবে জার্মানির বুন্দেসলীগার ম্যাচ পরিচালনা করেছিলেন বিবিয়ানা স্টেইনহস। জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার জয়া চাকমা বাংলাদেশের প্রথম আন্তর্জাতিক নারী রেফারি। এই দু’জন আকলিমার অনুপ্রেরণা। যিনি স্থানীয় বিভিন্ন লীগ ও টুর্নামেন্টে রেফারি হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন। যদিও বড় কোনো ম্যাচে বাঁশি বাজানো হয়নি এখনও। তবে ফিফা আন্তর্জাতিক ম্যাচ পরিচালনার স্বপ্ন দেখেন যশোরের কাজীপাড়ার এই প্রমীলা ফুটবলার। ফুটবলার থেকে রেফারি হওয়ার গল্প শোনালেন আকলিমা, ‘২০০৯ সালে মান্নান স্যারের (সাঁতার কোচ আবদুল মান্নান) হাত ধরে ফুটবলে আসি। তার আগে হ্যান্ডবল খেলতাম। ফুটবলে হাতেখড়ি সাচ্চু ওস্তাদের (ফুটবল কোচ ইমদাদুল হক সাচ্চু) কাছে। কয়েক মাস অনুশীলনের পর সুযোগ মিলে যায় মহিলা ফুটবলের বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে খেলার।’ টানা পাঁচ-ছয় বছর যশোর জেলা মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন। তার অধিনায়কত্বে যশোর একবার জাতীয় মহিলা ফুটবলে রানার্সআপ এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে কয়েকবার চ্যাম্পিয়ন হয়।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী ফুটবল দলের হয়ে খেলেছেন দুটি ম্যাচ। তবে বয়সভিত্তিক দল পেরিয়ে কখনও জাতীয় দলে খেলার সুযোগ হয়নি। জাতীয় দলে না খেললেও ঢাকা মোহামেডান ও আরামবাগ স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। ভালো খেলার সুবাদে বিজেএমসির খেলোয়াড় কোটায় চাকরি পেয়েছিলেন। খেলা না থাকায় তিন বছর পর বিজেএমসির চাকরিটা হারান। আকলিমা বলেন, ‘যেহেতু ফুটবল খেলেছি, তাই ফুটবলের মাধ্যমে নতুন কিছু করার চেষ্টা করছিলাম।’ ২০১৫ সালে সেই সুযোগও পেয়ে যান। ওই সময় শ্রীলংকার ক্যাম্পে থাকা যশোর নারী ফুটবলারের মাধ্যমে জানতে পারেন ঢাকায় রেফারিং কোচিং কোর্স হবে। সফলতার সঙ্গে শেষ করেন কোর্স। যশোরের বিরামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্ট দিয়ে রেফারি হিসেবে যাত্রা শুরু আকলিমার। এরপর পরিচালনা করেছেন একাধিক ম্যাচ। রেফারি হিসেবে কখনও দর্শকদের বাজে মন্তব্য শুনতে হয়নি। আকলিমা বলেন, ‘রেফারি হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য জাকির স্যার, বাচ্চু স্যার, লাবু ভাই, ফেরদৌস ভাই, জন ভাইসহ রেফারি অ্যাসোসিয়েশন যশোর জেলা শাখার সবাই সহযোগিতা করেন।’

সব থেকে বড় অনুপ্রেরণা পরিবার থেকে পান বলে জানান উপশহর মহিলা ডিগ্রি কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের এই শিক্ষার্থী। বাবা ক্যান্টনমেন্টে চাকরি করেন। মা গৃহিণী। আকলিমা বলেন, ‘বাবা আমাদের ভাইবোনদের খেলাধুলায় উৎসাহ দেন।’ রেফারির পাশাপাশি বর্তমানে যশোর শহরের একটা মহিলা জিমের ইন্সট্রাক্টর হিসেবে কাজ করছেন আকলিমা। ফুটবলে বাংলাদেশের মেয়েরা একদিন বিশ্বজয় করবে, আন্তর্জাতিক ম্যাচে বাঁশি বাজাবেন আকলিমা। সেই স্বপ্ন দেখেন আকলিমা।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম