|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সৈয়দ শামসুল হকের বহুল পঠিত উপন্যাসের শিরোনাম ধার নিতে হলো। যেজন্য ধার নেওয়া সেই বিষয়টিও বহুল চর্চিত। দৃশ্যকল্প সাজালে প্রারম্ভিক চিত্রনাট্য অনেকটা এরকম হয়।
দৃশ্য এক : মুখ্য চরিত্র শারীরিক ও মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত। খেলার অবস্থায় নেই। তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সাময়িক বিচ্ছেদ চান তিনি।
দৃশ্য দুই : আজ্ঞাবহ বিসিবি ‘জো হুকুম জাহাঁপনা’সুলভ নম্রতায় ছুটি মঞ্জুর করল ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। বোর্ডের ভাষায় ‘বিশ্রাম’।
দৃশ্য তিন : তিন সংস্করণের ক্রিকেটেই কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রেখে বিসিবি চেষ্টা করল তাকে মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতে!
দৃশ্য চার : শনিবাসরীয় প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠক শেষে কালো শার্ট পরা সাকিব আল হাসান মুখে তিন সংস্করণের হাসি সাজিয়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে এলেন। অবশ্যই বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসানের পেছনে। এখানে যে তিনি পার্শ্বচরিত্র। প্রধান চরিত্র বিসিবি। দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা।
দৃশ্য পাঁচ : সাকিবের মতবদল। তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা যাচ্ছেন আজ রাতে। খেলার জন্য প্রস্তুত। তবে কোন সিরিজ খেলবেন আর কোনটি খেলবেন না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে বোর্ড। সাকিবের তাতে সায়, ‘ইয়েস বস।’
বোর্ড প্রধান বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের নসিহত করলেন, ‘এত হুলুস্থুলের কোনো কারণ নেই। সাকিব স্বতঃস্ফূর্তভাবে খেলতে চাইলে আমরা তাকে স্বাগত জানাই।’ এটা বললেন না যে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে ছুটি চাইলে সেটিকেও আমরা স্বাগত জানাই।
আরেকটি দৃশ্যও যোগ করা যায়। তিন ভাগে বাংলাদেশ দল দক্ষিণ আফ্রিকায় উড়াল দেওয়ার পর বোর্ডে সবাই মিলে বসে সাকিব-পাজলের সহজ ও সুন্দর সমাধানসূত্র বের করে ফেলল বিসিবি। ‘তিন উল্লাস’ তাদের জন্য!
সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হচ্ছিল সাকিবের। এটা বুঝতে পেরে নাজমুল হাসান তার প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েছেন। তার পাশে দাঁড়িয়েছেন। খুবই ভালো কথা। অন্যরা অনুপ্রাণিত হতেই পারেন। কাল কেউ যদি বলেন, ছুটি লাগবে। বোর্ড ছুটি দেবে। তারপর তিনি খেলতে চাইলে তাকে খেলতে দেওয়া হবে। তারপর আবার যদি বলেন, আমি ফিট না, বোর্ড বলবে-যথার্থ। তারপর আবার সিদ্ধান্ত বদল-আমি খেলব। বোর্ড অমনি তাকে বিমানে তুলে দেবে। বিসিবির মতো এমন উদার ক্রিকেট বোর্ড বিশ্বে দ্বিতীয়টি আছে কি না সন্দেহ।
খেলা চলছে। সুন্দর খেলছে বিসিবি। খেলা চলবে। খেলারাম খেলে যা ...।
