কুমিল্লা থেকে ঢাকা মোহামেডানের রঙিন উৎসব
মোহামেডান ৩ : ৩ ব্রাদার্স
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রধান সড়ক থেকে ক্লাব টেন্ট পর্যন্ত রঙ-বেরঙের আলো। মাইকে বাজছে সাদা-কালোদের গৌরবগাথার গান। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে মোহামেডান ক্লাবে ছিল চ্যাম্পিয়ন ফুটবলারদের বরণের প্রস্তুতি। ক্লাব টেন্টে উৎসব হবে আগেই জানানো হয়েছিল। সন্ধ্যার পর থেকে ক্লাবপ্রাঙ্গণ সমর্থকমুখর হতে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সমর্থকদের ভিড়।
রাত সোয়া ১০টায় কুমিল্লা থেকে খেলোয়াড়দের বহনকারী বাস প্রবেশ করে ক্লাব টেন্টে। ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর কেক কেটে খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের নিজ হাতে খাওয়ান। ট্রফি নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত চলে আনন্দ-উৎসব। শিরোপা আগেই নিশ্চিত হয়েছিল। শুক্রবার বিকালে কুমিল্লায় ট্রফি বুঝে পায় মোহামেডান। স্টেডিয়ামেই একদফা উৎসব হয়। ব্রাদার্স ইউনিয়নের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ম্যাচ ড্র করার পর।
এরআগে কুমিল্লায় ম্যাচ শেষে নতুন টি শার্ট পরলেন ফুটবলাররা। কোচের গায়েও বিশেষ টি শার্ট। তাতে লেখা ‘উই আর দ্য চ্যাম্পিয়ন’। ১৯৫৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত জেতা শিরোপাগুলোর সাল লেখা টি শার্টে। সাদা-কালো পতাকা হাতে ইমানুয়েল ছুটে যান গ্যালারির দিকে। তার সঙ্গে সতীর্থরা। গ্যালারিতে সমর্থকরা স্মোক ফ্লোয়ার ওড়ালেন। ক্লাবের বিদেশি ফুটবলাররা নিজ নিজ দেশের পতাকা হাতে উল্লাসে মেতে ওঠেন। ধর্মসাগর তীরে সাদা-কালোদের রঙিন উৎসব দেখলেন কুমিল্লাবাসী। দেশের পেশাদার ফুটবল পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন মোহামেডানকে।
দুই ম্যাচ আগে শিরোপা নিশ্চিত হয় মোহামেডানের। তাই শুক্রবারের ম্যাচে ছিল ঢিলেঢালা ভাব। আগের ম্যাচে রহমতগঞ্জের কাছে হারার পর কাল জিততে জিততেও ব্রাদার্সের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করে মোহামেডান। তবে ম্যাচ শেষে দর্শকদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে কার্পণ্য করেননি ফুটবলাররা। গলায় পদক ঝুলিয়ে হাতে ট্রফি নিয়ে চ্যাম্পিয়নদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। মোহামেডান অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতের হাতে ট্রফি তুলে দেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সিনিয়র সহসভাপতি ইমরুল হাসান ও সদস্য জাকির হোসেন চৌধুরী।
ম্যাচের ৪৩ মিনিটে অবসরে যান ব্রাদার্সের গোলকিপার আশরাফুল ইসলাম রানা। ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন তেকাঠির নচে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকায় থাকা জাতীয় দলের সাবেক এই গোলকিপার। বিরতিতে রানার হাতে বিদায়ি ক্রেস্ট তুলে দেন মোহামেডানের গোলকিপার কোচ ছাইদ হাসান কানন, ব্রাদার্স ইউনিয়নের ম্যানেজার আমের খান এবং ঢাকা আবাহনীর নজরুল ইসলাম। জাতীয় দলে ২৫টি ম্যাচ খেলেছেন আশরাফুল।
লিগে সর্বাধিক গোলদাতার দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে রয়েছেন মোহামেডানের মালির ফরোয়ার্ড দিয়াবাতে। ১৭ রাউন্ড শেষে তার গোল ১৫টি। দুই গোল বেশি করে তার থেকে এগিয়ে রহমতগঞ্জের ঘানার ফরোয়ার্ড স্যামুয়েল বোয়েটেং। সুলেমানের সামনে আরেকটি ম্যাচ বৃহস্পতিবার ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্সের বিপক্ষে। বোয়েটেংয়ের সামনে দুটি ম্যাচ (আজ ঢাকা আবাহনী ও বৃহস্পতিবার পুলিশ)।
ম্যাচে গাছাড়া ভাব ছিল মোহামেডানের রক্ষণের। তার মাশুল দিতে হয় সাত মিনিটে। সেনেগালের ডিফেন্ডার মুহামেদ দিয়ারার গোলে এগিয়ে যায় ব্রাদার্স। ২৫ মিনিটে মেহেদী হাসান মোহামেডানকে সমতায় ফেরান। পরের ৩০ মিনিটে টানা দুই গোল করে সাদা-কালোদের ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন দিয়াবাতে। লিড ধরে রাখতে পারেনি মোহামেডান। নাইজেরিয়ান এমফন সানডে উদোহ ও মাহবুবুর জুয়েল দুই গোল করে গোপীবাগের দলটিকে এক পয়েন্ট এনে দেন।
