Logo
Logo
×

খেলা

‘হামজাদের নিয়ে গর্ব করা উচিত’

Icon

ক্রীড়া প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরা আশা করেছিলেন, শিষ্যরা জয় ছিনিয়ে আনবেন। কিন্তু তা হয়নি। মঙ্গলবার এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে সিঙ্গাপুরের কাছে ২-১ গোলে হেরে গেছেন হামজারা। এ নিয়ে খুবই হতাশ হাভিয়ের কাবরেরা। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘এই ফল আশা করিনি। যেটা হয়েছে তা চাইনি। ১৫-২০ মিনিটে ছেলেরা কিছু ভুল করেছে। চাপে এবং শক্তি হারিয়েই এটা করেছে তারা।’ কোচ যোগ করেন, ‘বিরতির আগে ছেলেরা যে চেষ্টা করেছে এবং দ্বিতীয়ার্ধে যা খেলেছে আমার মনে হয়, হামজাদের নিয়ে গর্ব করা উচিত। বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধে খুব ভালো সাহসী ফুটবল খেলেছে। আমরা অনেক সুযোগ পেয়েছি। কাজে লাগাতে পারিনি। আমরা হতাশ হলেও বলছি, এই দলটা ভালো। ওরা ম্যাচের মোমেন্টাম ধরতে পেরেছিল। মাঝেমধ্যে এমনটা হয়। যে কারণে আমরা ম্যাচটা হেরেছি। আমাদের এটা মেনে নিতে হবে। শক্তি হারানোর কারণ হতে পারে দর্শকের চাপ। এটা সামলে উঠতে পারেনি ছেলেরা। কিছু সময় মনে হয়েছে আমরা যেমন খেলেছি, সেটা যথেষ্ট ছিল না ওদের হারানোর জন্য। কখনো মনে হয়েছে, ওদের সঙ্গে পেরে ওঠার মতো সামর্থ্য ছিল না আমাদের। কিন্তু এটা ফুটবলে স্বাভাবিক। এটা হতে পারে। তারপরও বলব ভালোমানের ফুটবলার এই দলে আছে। আমরা একসঙ্গে মোমেন্টাম ধরে খেলার চেষ্টা করেছি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে আমরা এক হয়ে কমপ্যাক্ট ফুটবল খেলেছি। আগের চেয়ে অ্যাডজাস্ট করেছি। কিন্তু শেষ সুযোগ কাজে লাগাতে পারিনি।’ দলের একমাত্র গোলদাতা রাকিবকে নিয়ে কোচ বলেন, ‘রাকিবকে অন্য স্ট্রাইকারের সঙ্গে তুলনা করা যাবে না। সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ম্যাচে সে বেশি জায়গা পায়নি খেলার। রাকিবের মতো এমন দ্রুতগতির স্ট্রাইকার নেই আমার। প্রতি ম্যাচে সে চ্যালেঞ্জ নেয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে। এই ম্যাচটা ২-২ স্কোরও হতে পারত। আমি বুঝতে পেরেছি, এই ম্যাচ নিয়ে সবার অনেক উচ্চাশা ছিল। কিন্তু ছেলেদের পারফরম্যান্স তেমন ছিল না।’ হামজার খেলা নিয়ে হাভিয়েরের বক্তব্য, ‘ভারতের ম্যাচের চেয়ে এই ম্যাচটা আরও বেশি কঠিন ছিল হামজার জন্য। কারণ, ভারত আরও উচ্চতায় খেলেছে। আমরা আক্রমণের জন্য বেশ জায়গা পেয়েছিলাম। সিঙ্গাপুর তেমন স্পেস দেয়নি। এখানে পরিস্থিতি যা ছিল সেটা শুধু হামজা কেন্দ্রিক না। এই ম্যাচ আরও কঠিন ছিল আগেরটার চেয়ে। এখানে আক্রমণ করা খুব কঠিন ছিল। আমাদের প্রধান ফুটবলার সেই পারফরম করতে পারছে না। হামজা এবং অন্য যে কেউ খুব এনার্জেটিক। সে তার সেরাটা দিয়ে খেলার চেষ্টা করেছে। আবারও বলছি এটা হতেই পারে।’

এদিকে সিঙ্গাপুরের কোচ সুতোমু ওগুরার কথা, ‘একটা কঠিন ম্যাচ খেললাম। অনেক সাপোর্টার ছিল মাঠে। আমি এটা আগেই বুঝেছিলাম এমনটা হতে পারে। তারপরও আমার ছেলেরা ১০০ মিনিট একই রিদমে খেলেছে। আমি গর্বিত ওদের নিয়ে। ওদের ম্যাচ শুরুর আগে বলেছিলাম এমনকি আমরা এই ম্যাচ জিততে পারি। কোচিং স্টাফসহ আমরা সবাই আমাদের ছেলেদের ওপর আস্থা রেখেছিলাম।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের মিডফিল্ড ও রক্ষণ ভালো ছিল। গোলকিপারকে সাহায্য করেছে ওরা। আবারও বলছি বাংলাদেশ ভালো দল। ওদের সমীহ করি।’

‘দেশের ফুটবলে জোয়ার এসেছে’

গত দুই দশকে দেশের ফুটবল ম্যাচ দেখতে মাঠে আসেননি অনেকে। দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা চালিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। আন্তর্জাতিক অনেক ম্যাচও হয়েছে জাতীয় স্টেডিয়ামে। কিন্তু খেলা দেখা নিয়ে এমন উন্মাদনা দেখা যায়নি, যা দেখা গেল মঙ্গলবার এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের ম্যাচ ঘিরে। কখনো মাঠে এসে খেলা দেখেননি, এমন অনেকেই বহু কাঠখড় পুড়িয়ে মঙ্গলবার স্টেডিয়ামে এসেছেন বাংলাদেশের খেলা দেখতে। ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাসেল কবির সুমন বলেন, ‘জাতীয় স্টেডিয়ামে এসে শেষ কবে ফুটবল ম্যাচ দেখেছি তা আমার মনে নেই। দীর্ঘ দিন পর আবার এলাম ফুটবল দেখতে। এজন্য অবশ্য অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। অনেক কষ্টে দুটি টিকিট জোগাড় করেছি।’ একসময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) কর্মরত ছিলেন আরিফ ইসলাম। আরিফের কথা, ‘হামজাদের জন্য অনেক দিন পর দেশের ফুটবলে জোয়ার এসেছে। তাই আর বসে থাকতে পারলাম না।’

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম