Logo
Logo
×

খেলা

ওয়ানডে সিরিজ

কুৎসিত ব্যাটিং জঘন্য হার

Icon

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

এটাকে কী বলবেন? ব্যাটিং বিপর্যয়। জঘন্য ব্যাটিং। শোচনীয় ধস। ১৫ মিনিট। মাত্র ১৫ মিনিটে সব শেষ। এভাবে কেউ হারে। হ্যাঁ, হারে। যদি দলটা হয় বাংলাদেশ। একটা সাজানো বাগান। সুরভি ছড়াবে বাহারি সব ফুল। কলম্বোর রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ছিল তারই অপেক্ষা। হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়। সেই ঝড়ে লন্ডভন্ড সুন্দর উদ্যান। ২৪৫ তাড়া

করতে নেমে কী মসৃণ সূচনাই না হয়েছিল। এক উইকেটে ১০০। দারুণ মনোরম দেখাচ্ছিল স্কোর বোর্ড। সেখান থেকে ২০ বলের ব্যবধানে ১০৫/৮। পাঁচ রানে সাত উইকেট উধাও। দ্বিতীয় থেকে অস্টম উইকেটে এত কম রানের নজির আর নেই। এমন অমার্জনীয় ব্যাটিং ব্যর্থতা, কুৎসিত বিপর্যয় ওয়ানডে ইতিহাসে খুব কমই দেখা গেছে। ফলশ্রুতিতে ৭৭ রানের অবাক করা জয়ে শ্রীলংকা ১-০ তে এগিয়ে গেল তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে। সফরকারীদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছেন দুই লংকান বোলার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও কামিন্দু মেন্ডিস। এ দুজন মিলে আসলে তিনজন বোলার। কামিন্দু দুই হাতেই বল করতে পারেন। বাঁ-হাতি অর্থোডক্স ও ডান-হাতি অফব্রেক। দুজন সাত উইকেট ভাগ করে নেন। কৃতিত্ব লংকান ফিল্ডারদেরও প্রাপ্য। অথচ, উইকেটে তেমন জুজুর ভয় ছিল না। ৩৫.৫ ওভারে ১৬৭ রানে গুটিয়ে যাওয়ার মধ্যেও যদি সান্ত্বনা খুঁজতে চান, সেটি পাবেন দুই হাফ সেঞ্চুরিয়ান তানজিদ হাসান (৬২) ও জাকের আলীর (৫১) কাছ থেকে।

এর আগে পুরোপুরি ব্যাটিং সহায়ক উইকেট ভেবে শ্রীলংকা টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের ভুলটা বুঝতে পারে। উইকেট যতটা ব্যাটিং উপযোগী মনে করেছিল তারা, ততটা প্রথমদিকে ছিল না। সাত ওভারের মধ্যে ২৯ রানে তিন উইকেট হারিয়ে লংকানরা বুঝতে পারে, ভুল হয়ে গেছে। পাতুম নিশাঙ্কা শূন্য। নিশান মাদুশকা ছয়। কুশাল মেন্ডিসকে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে দেননি অভিষিক্ত বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। ৪৩ বলে ৪৫ রান করে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন নিশান। কামিন্দু মেন্ডিসও রানের খাতা খুলতে পারেননি। এরপরও স্বাগতিকরা যে চার বল বাকি থাকতে ২৪৪ রান অবধি পৌঁছল, এর মূলে রয়েছে অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কার সব মিলিয়ে পঞ্চম এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি (১২৩ বলে ১০৬)। এই শতকে রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ১,০০০ রান টপকালেন আসালাঙ্কা। পাঁচ সেঞ্চুরির মধ্যে এই ভেন্যুতেই চারটি শতক আসালাঙ্কার।

কুশালের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৬০ এবং পঞ্চম উইকেটে জানিথ লিয়ানাগের (৪০

বলে ২৯) সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি গড়েন আসালাঙ্কা। ৩২তম ওভারে খণ্ডকালীন বোলার নাজমুল হোসেন শান্তর শিকার হন লিয়ানাগে। এরপর ষষ্ঠ উইকেটে অভিষিক্ত মিলান রত্নায়েকের (২২) সঙ্গে ৩৯ রান যোগ করেন আসালাঙ্কা। তিন মাস পর প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটে ফেরা পেসার তাসকিন আহমেদ বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল

বোলার। নতুন বল হাতে সপ্তম ওভারে স্বাগতিকদের

২৯/৩-এ পরিণত করা তাসকিন ১০ ওভারে দুটি মেডেনসহ ৪৭ রান দিয়ে চার উইকেট নেন। তিনটি উইকেট পান আরেক পেসার তানজিম হাসান।

স্কোর কার্ড

শ্রীলংকা

রান বল ৪ ৬

নিশাঙ্কা ক লিটন ব তানজিম ০ ৮ ০ ০

মাদুশকা ব তাসকিন ৬ ১৩ ১ ০

কুশাল এলবিডব্লু ব তানভীর ৪৫ ৪৩ ৬ ১

কামিন্দু ক মিরাজ ব তাসকিন ০ ৪ ০ ০

আসালাঙ্কা ক নাজমুল ব তানজিম ১০৬ ১২৩ ৬ ৪

লিয়ানাগে ক তানজিম ব নাজমুল ২৯ ৪০ ৪ ০

রত্নায়েকে ব তানজিম ২২ ৩১ ৩ ০

হাসারাঙ্গা ক বদলি ব তাসকিন ২২ ২২ ৩ ০

তিকশানা ক জাকের ব তাসকিন ১ ২ ০ ০

ইশান রানআউট ৫ ১০ ০ ০

আসিতা নটআউট ১ ১ ০ ০

অতিরিক্ত ৭

মোট (অলআউট, ৪৯.২ ওভারে) ২৪৪

উইকেট পতন : ১/৫, ২/১১, ৩/২৯, ৪/৮৯, ৫/১৫৩, ৬/১৯২, ৭/২২৬, ৮/২২৮, ৯/২৪৩, ১০/২৪৪।

বোলিং : তাসকিন আহমেদ ১০-২-৪৭-৪, তানজিম হাসান ৯.২-০-৪৬-৩, মোস্তাফিজুর রহমান ৬-১-২৪-০, মেহেদী হাসান মিরাজ ১০-০-৪৭-০, তানভীর ইসলাম ১০-০-৪৪-১, নাজমুল হোসেন ৪-০-৩২-১।

বাংলাদেশ

রান বল ৪ ৬

পারভেজ ক কুশাল ব আসিতা ১৩ ১৬ ৩ ০

তানজিদ ক লিয়ানাগে ব হাসারাঙ্গা ৬২ ৬১ ৯ ১

নাজমুল রানআউট ২৩ ২৬ ২ ০

লিটন এলবিডব্লু ব হাসারাঙ্গা ০ ৪ ০ ০

তাওহিদ ব কামিন্দু ১ ৪ ০ ০

মিরাজ এলবিডব্লু ব হাসারাঙ্গা ০ ২ ০ ০

জাকের এলবিডব্লু ব হাসারাঙ্গা ৫১ ৬৪ ৪ ৪

তানজিম ক তিকশানা ব কামিন্দু ১ ৬ ০ ০

তাসকিন এলবিডব্লু ব কামিন্দু ০ ৩ ০ ০

তানভীর ক কুশাল ব তিকশানা ৫ ১৯ ১ ০

মোস্তাফিজ নটআউট ০ ১২ ০ ০

অতিরিক্ত ১১

মোট (অলআউট, ৩৫.৫ ওভারে) ১৬৭

বোলিং : আসিতা ফার্নান্ডো ৫-০-৩৮-১, মহেশ তিকশানা

৯-১-৩২-১, মিলান রত্নায়েকে ১-০-১০-০, চারিত আসালাঙ্কা ৫-০-২৯-০, ইশান মালিঙ্গা ৩-০-২২-০, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ৭.৫-২-১০-৪, কামিন্দু মেন্ডিস ৫-০-১৯-৩।

ফল : শ্রীলংকা ৭৭ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ : চারিত আসালাঙ্কা।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম