গভীর রাতে হাতিরঝিলে সংবর্ধনায় সিক্ত আফঈদা-ঋতুপর্ণারা
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাত তখন আড়াইটা। হাতিরঝিল এম্ফিথিয়েটার আলোয় ঝলমল। অনুষ্ঠান শুরু হয় রাত সোয়া ৩টায়। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কজন কর্মকর্তা ও ফুটবল আলট্রাসের সমর্থকরা উপস্থিত। সাত ঘণ্টার দীর্ঘ বিমানযাত্রার পরও ক্লান্তির লেশমাত্র নেই ঋতুপর্ণা, আফঈদাদের। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আফঈদা, ঋতুপর্ণারা শোনালেন নতুন লক্ষ্যের কথা। জানালেন, এশিয়ার পর তাদের চোখ এখন অলিম্পিক ও বিশ্বকাপের মঞ্চে। তারা পাশে চান দেশের সর্বস্তরের মানুষকে। অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার বলেন, ‘এখানে উপস্থিত সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ, এত রাতে আমাদের রিসিভ করার জন্য। এত সুন্দর একটা আয়োজন করার জন্য। আজকের আমাদের এ সাফল্য একদিনে আসেনি।’ ঋতুপর্ণা চাকমা বলেন, ‘বাংলাদেশের মেয়েরা জানে কীভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে ফাইট করতে হয়। আপনারা আমাদের ওপর বিশ্বাস রাখবেন। আমরা আপনাদের নিরাশ করব না। শুধু এশিয়ার না, আমরা বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে নিয়ে যেতে চাই।’ ফরোয়ার্ড তহুরা খাতুন বলেন, ‘এই জয় শুধু আমাদের না, দেশের নারীদের জয়। যারা স্বপ্ন দেখে, তারা যেন আমাদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়, সেই চেষ্টাই আমরা করি।’ ‘কোয়ালিফাইড’ লেখা বিলবোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে ফুটবলাররা তোলেন ছবি।
নারী ফুটবলারদের অর্জন অসামান্য। সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ ও সাবেক তারকা ফুটবলার আমিনুল হকদের মন্তব্য ছিল এমনই। তারা বিশ্বাস করেন, আফঈদা, ঋতুপর্ণারাই একদিন বিশ্বজয় করবেন। মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ‘আমরা যদি প্রোপারলি তাদের সাপোর্ট দিতে পারি, তারা অনেকদূর যাবে। আমি এখনই বিশ্বকাপ বলতে চাই না। কিন্তু তারা সেখানে যাবে।’ জাতীয় দলের সাবেক গোলরক্ষক ও বিএনপি নেতা আমিনুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল যে সাফল্য অর্জন করেছে, তা অনেক বেশি প্রেরণার, অনেক বেশি উৎসাহের।’ অধিনায়ক আফঈদা বলেন, ‘এই মুহূর্ত আমাদের জীবনের অন্যতম সেরা। সবার দোয়া চাই, যেন শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, বিশ্বমঞ্চেও আমরা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে পারি।’
সাফে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সাবিনাদের দেড় কোটি টাকার বোনাস দেওয়ার ঘোষণা করা হলেও তা আজও দিতে পারেনি বাফুফে। এশিয়ান কাপে প্রথমবার সুযোগ পাওয়ায় অনেকেই ভেবেছিলেন আফঈদাদের বোনাস দেওয়া হবে। সেই ঘোষণা দেওয়া হয়নি। বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেছেন, ‘আমরা নারী দলের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকব। আপনাদের ওপর আমাদের আস্থা রয়েছে।’ ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার শুরুতেই ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে মন জিতলেন সবার। মেয়েদের এই সাফল্যের পেছনে পরিশ্রম কতটা হয়েছে, তা তুলে ধরেন তিনি। প্রশংসা করেছেন প্রিয় শিষ্যদের, ‘এই জয় সম্ভব হতো না, যদি মেয়েরা নিজেদের শেষবিন্দু ঢেলে না দিত।’
