Logo
Logo
×

খেলা

শততম টেস্টে স্টার্কের গোলাপি জাদু

২৭ রানে অলআউট ওয়েস্ট ইন্ডিজ

Icon

পারভেজ আলম চৌধুরী

প্রকাশ: ১৬ জুলাই ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

২৮ মার্চ ১৯৫৫। অকল্যান্ডের ইডেন পার্ক। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ড ২৬ রানে অলআউট। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর।

১৪ জুলাই ২০২৫। কিংসটনের স্যাবাইনা পার্ক। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তৃতীয় টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৭ রানে অলআউট।

মাঝখানে ৭০ বছর। কিউইদের লজ্জা কিউইদেরই রইল। ক্রিকেট-বিধাতা সেটি ছুঁতে দিলেন না ক্যারিবীয়দের। ৫৫-তে ইংল্যান্ড বোলার বব অ্যাপেলইয়ার্ড সাত রানে চার উইকেট নিয়েছিলেন। ’২৫-এ মিচেল স্টার্ক ছয় উইকেট নিলেন নয় রান দিয়ে। ৭০ বছর আগে ইংল্যান্ড ইনিংস ও ২০ রানে জিতে দুই টেস্টের সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছিল ২-০তে। আর গত পরশু অস্ট্রেলিয়া ১৭৬ রানে জিতে তিন টেস্টের সিরিজ নিজেদের করে নিল ৩-০তে।

আশ্চর্যজনক একটি মিলের কথা না বললেই নয়। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটারদের মধ্যে একমাত্র বার্ট সাটক্লিফ দুই অঙ্ক স্পর্শ করেছিলেন ১১ রান করে। এই ম্যাচেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের একমাত্র জাস্টিন গ্রিভস ১১ রান করেছেন। সবচেয়ে বড় অমিল হলো, ৭০ বছর আগে দিবা-রাত্রির টেস্ট ক্রিকেট হতো না। গোলাপি বলও ছিল না।

ক্রিকেটের বনেদি সংস্করণের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে ১৯৫৫-র একেবারে কাছে গিয়ে থেমেছে ২০২৫। ৭০ বছরের ব্যবধানে ২৬ ও ২৭-এর এই অদ্ভুতুড়ে চিত্রনাট্যের রচয়িতা নিশ্চয় কোনো রহস্য-পুরুষ। তা না হলে কেন তিনি এমন নিগূঢ় নস্টালজিয়ার বুনটে সাদা পোশাকের গোলাপি ক্রিকেটকে রহস্যময় করে তুলবেন।

নিউজিল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস স্থায়ী হয়েছিল ২৭ ওভার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিকেছে ১৪.৩ ওভার। পাঁচ কিউই ব্যাটার রানের খাতা খুলতে পারেননি। সাত ক্যারিবীয় ব্যাটার শূন্য রানে আউট।

কিংসটনের আকাশে গত পরশু রাতে তারারা কী কারসাজি করেছিল মিচেল স্টার্ককে তার মাইলফলক ছোঁয়া টেস্টে চাঁদের আসনে বসাতে! বাঁ-হাতি অসি পেসার নিজের শততম টেস্টে ৪০০তম উইকেটের কীর্তি গড়ার পথে প্রথম ওভারে নেবেন তিন উইকেট, ইনিংসে দ্রুততম পাঁচ উইকেট- এসব কার ইঙ্গিতে! উইন্ডিজ ব্যটারদের সাজঘরে ফেরানোর কাজটা শুধু স্টার্কের বাঁ হাতের খেলাই নয়, ডান-হাতি পেসার স্কট বোল্যান্ডের জন্যও ডাল-ভাত হয়ে যায়।

স্টার্ক যদি নয়-ছয় (নয় রানে ছয় উইকেট) করেন, বোল্যান্ড করেন হ্যাটট্রিক। পরপর তিন বলে জাস্টিন গ্রিভস, শামার জোসেফ ও জোমেল ওয়ারিকানের হাতে হারিকেন ধরিয়ে (পড়ুন আউট করে) ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৬/৯ বানিয়ে দেন বোল্যান্ড। ওখানেই যদি থেমে যেত স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংস, ১৯৫৫ ফিরে আসত ২০২৫-এ। নিউজিল্যান্ডের লজ্জা অর্ধেক ভাগ করে নিত ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটি হতে দেননি এই ম্যাচের অদৃশ্য নির্মাতা। গালিতে স্যাম কনস্টাসের মিসফিল্ডিংয়ে ভাগ্যপ্রসূত এক রান পেয়ে যায় ক্যারিবীয়রা। পরের বলেই বিয়োগান্তক সমাপ্তি। স্টার্ক ধ্রুবতারা হয়ে ক্যারিয়ারসেরা নয়ে ছয় করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪.৩ ওভারে ২৭।

দ্য কিং ইজ ডেড। লং লিভ দ্য কিং।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস ২২৫। ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস ১৪৩।

অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংস ১২১ (ক্যামেরন গ্রিন ৪২। শামার জোসেফ ৪/৩৪, আলজারি জোসেফ ৫/২৭)। ওয়েস্ট ইন্ডিস দ্বিতীয় ইনিংস ২৭ (জাস্টিন গ্রিভস ১১। মিচেল স্টার্ক ৬/৯, স্কট বোল্যান্ড ৩/২)। ফল : অস্ট্রেলিয়া ১৭৬ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও ম্যান অব দ্য সিরিজ : মিচেল স্টার্ক।

টেস্টে সবচেয়ে কম রানে অলআউট

রান দল প্রতিপক্ষ ভেন্যু সাল

২৬ নিউজিল্যান্ড ইংল্যান্ড অকল্যান্ড ১৯৫৫

২৭ ওয়েস্ট ইন্ডিজ অস্ট্রেলিয়া কিংসটন ২০২৫

৩০ দ. আফ্রিকা ইংল্যান্ড গেবেরহা ১৮৯৬

৩০ দ. আফ্রিকা ইংল্যান্ড বার্মিংহাম ১৯২৪

৩৫ দ. আফ্রিকা ইংল্যান্ড কেপটাউন ১৮৯৯

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম