|
ফলো করুন |
|
|---|---|
এনজাইম বা জারকরস খাদ্যের মধ্যে যেমন থাকে, তেমনি প্রাণী দেহেও এর উপস্থিতি বিদ্যমান। ফল পাকার জন্য এনজাইম প্রয়োজন। আবার এর কাজ কয়েকদিন বেশি চললে ফল পেকে নষ্ট হয়ে যায়।
এনজাইম আমাদের হজমক্রিয়ার অন্যতম অনুসঙ্গ। এটা খাবারের ভিটামিন, খনিজ লবণ ও এমাইনো এডিসকে সম্পূর্ণ রূপে শরীরে ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। এটি তাপে অনেকটা ধ্বংস হয়ে যায়। এনজাইম বেশি থাকে কাঁচা ও অসংরক্ষিত খাবারের মধ্যে। যেমন-ফল, সবজি, ডিম, মাংস ও মাছের মধ্যে।
প্রতিটি এনজাইম প্রাকৃতিকভাবে পৃথক। একটির বিকল্প অন্যটি হয় না। অসুস্থতা ও স্বাস্থ্যের বিভিন্ন অর্থ বহন করে এনজাইমের অভাব ও সংরক্ষণের প্রস্তুতির ওপর। আবার এগুলো বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করা হয়। যেমন-ফসফরাসের এনজাইম হলো ফসফোটেজ, চিনি বা সুক্রোজের এনজাইম হলো সুক্রোজ। কাঁচা পেঁপের মধ্যে থাকে পেপসিন নামক এনজাইম। এটি খাবার হজমে যেমন সাহায্য করে, তেমনি প্রোটিনকে অর্থাৎ এমাইনো এসিডকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণায় রূপন্তরিত করে। এ কারণেই মাংস সিদ্ধ করার কাজে কাঁচা পেঁপে ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া পেপসিনের কাজ হলো দেহের ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখা, শারীরিক গঠন মবজুত করা, রক্ত সরবরাহ ঠিক রাখা, মাংসপেশি দৃঢ় করা।
রেনিন-এই এনজাইম হলো দুধকে জমাট বাঁধানো। এটা দুধের প্রোটিনের প্রকৃতি বদলে দিয়ে কেজিনে রূপান্তরিত হয়। যাতে দুধ শরীরে ভালোভাবে আত্মস্থ হয় বা হজম হয়। এ রেনিন থেকেই আমরা পাই ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাশিয়াম। রেনিন দেহে পানির সমতা বজায় রাখে, স্নায়ুতন্ত্রকে সবল করে এবং দাঁত ও হাড়কে শক্তিশালী করে।
লাইপেজ নামক এনজাইম চর্বিকে ভেঙে দেয়। যা ব্যবহারের মাধ্যমে দেহের ত্বক মসৃণ থাকে। শরীরের আঘাত পাওয়া, হাড় ভেঙে যাওয়া, ভাইরাসের আক্রমণ, বিভিন্ন সংক্রমণ ও অ্যালার্জির বিরুদ্ধে লাইপেজ শরীরেকে রক্ষা করে। হাইড্রোক্লোরিক এসিড নামক এনজাইম মানুষের পাকস্থলিতে থাকে। এ এসিডের অভাবে পার্নিসিয়াস এনিমিয়া, গ্যাসট্রিক কাসিনোমা, অ্যালার্জির ক্ষেত্রে অসুস্থতা বেড়ে যায়। সাধারণত দেখা যায় কোনো কিছু খাওয়ার আগে কারও কারও মধ্যে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, রাগ, ভয় ইত্যাদি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও খনিজ পদার্থের অভাবের ফলে দেখা যায়। অথচ এর পেছনে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের অভাব অনেকটা দায়ী। এ ছাড়া এর অভাবে এসিডিটি অথবা হার্টের জ্বালাপোড়া হতে দেখা যায়।
লেখক : চিফ নিউট্রিশন অফিসার ও বিভাগীয় প্রধান (অব.), বারডেম। সভাপতি, ডায়াবেটিস নিউট্রিশনিস্ট সোসাইটি অব বাংলাদেশ, পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী ও অ্যাডভান্স হাসপাতাল, ঢাকা।
