Logo
Logo
×

সুস্থ থাকুন

কখন ভিটামিন বি১২ সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ প্রয়োজন

Icon

সৈয়দা শারমিন আক্তার

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ভিটামিন বি১২, কোবালএমিন নামেও পরিচিত। এটি এমন একটি অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান, যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পানিতে দ্রবণীয় এ ভিটামিন প্রধানত প্রাণিজ উৎস; যেমন- মাংস, মাছ, ডিম এবং দুগ্ধজাত খাবারে পাওয়া যায়। কারও কারও দেহে ভিটামিন বি১২-র ঘাটতি দেখা দিতে পারে। তাদের ক্ষেত্রে তখন বি১২ সম্পূরক হিসাবে খাওয়া প্রয়োজন হয়ে থাকে। যেমন-

* যারা নিরামিষভোজী: যারা কোনো ধরনের প্রাণিজ খাবার খান না, তাদের বি১২-র নিশ্চিত ঘাটতি দেখা দেয়। কারণ উদ্ভিজ খাবারে প্রাকৃতিকভাবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন বি১২ থাকে না। তাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় অ্যানিমিয়াসহ বিভিন্ন স্নায়ু সমস্যায় ভুগে থাকেন।

* হজমজনিত সমস্যা বা ম্যালঅ্যাবজর্বশন ডিসঅর্ডার: গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্ট থেকে ভিটামিন বি১২ শোষণে সমস্যা হলে এর অভাব দেখা দিতে পারে। কিছু কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা; যেমন-অ্যানিমিয়া, ক্রোনস ডিজিজ, সিলিয়াক ডিজিজ এবং ক্ষুদ্রান্ত্রের অস্ত্রোপচারে ভিটামিন বি১২-র কার্যকরভাবে শোষণ করার ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ষগ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ডিসঅর্ডার: গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগীদের বিভিন্ন সার্জারি; যেমন- গ্যাস্ট্রাইটিস, গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি বা ছোট অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়াল ওভারগ্রোথ, ভিটামিন বি১২ শোষণ কমিয়ে দিতে পারে।

* প্রাপ্তবয়স্ক: বয়সের সঙ্গে সঙ্গে খাবার থেকে ভিটামিন বি১২ শোষণ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। বিশেষ করে যাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি, তাদের পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা কমে যেতে পারে।

* অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন: দীর্ঘদিন অ্যালকোহল গ্রহণের কারণে ভিটামিন বি১২-র অভাব দেখা দিতে পারে। কারণ অ্যালকোহল গ্রহণকারীদের বেশিরভাগ দুর্বল খাদ্য গ্রহণ, দুর্বল শোষণ এবং বি১২ উৎপাদনের বাধা দেয়।

* স্বাভাবিক বা উচ্চ চাহিদার ক্ষেত্রে: গর্ভবতী এবং বুকের দুধ খাওয়ানো মহিলাদের যথাক্রমে ভ্রুণের বিকাশ এবং দুধ উৎপাদনে সহায়তা করার জন্য ভিটামিন বি১২-র প্রয়োজনীয়তা থাকে। তাছাড়া নির্দিষ্ট কিছু সার্জারি, অসুস্থতা বা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ এবং হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করার জন্য ভিটামিন বি১২ মাত্রা বাড়ানোর প্রয়োজন হয়।

উপরে বর্ণিত সমস্যাগুলো থাকলে চিকিৎসক, অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদ অথবা যারা স্বাস্থ্যসেবা পেশার সঙ্গে যুক্ত, তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা জরুরি। ভিটামিন বি১২ সম্পূরক হিসাবে ব্যবহার নিরাপদ। তবু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে এ ভিটামিন গ্রহণ করবেন না।

* ভিটামিন বি১২-র উৎস: প্রাণিজ কলিজা, বৃক্ক, বিভিন্ন জাতের সামুদ্রিক মাছ, গরুর মাংস, ফর্টিফাইড সিরিয়াল, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, পনির, ইস্ট, দই, কাঁকড়া, মুরগির মাংস ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। কিছু উদ্ভিজ উৎস; যেমন- কাঠবাদাম, আখরোটে বি১২ পাওয়া যায়।

লেখক: প্রিন্সিপাল নিউট্রিশনিস্ট অ্যান্ড ফাউন্ডার, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম