অচলায়তন
চরাঞ্চলের নারী জীবন
মোছা. আজিজুন নাহার
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
বাংলাদেশের বিশেষ বড় বড় নদী; যেমন-যমুনা, ব্রহ্মপুত্র; পদ্মার চরাঞ্চলে নারীদের জীবনযাপন বড় দুর্দশাগ্রস্ত। এখানে সভ্যতার আলো যেন মরীচিকা। চরাঞ্চলের জীবন যেন শুধুই কষ্ট আর অপ্রাপ্তির। বিশেষ করে এখানকার নারীদের জন্য।
দুর্গম চরাঞ্চলে নারীদের শৈশব : এদের শৈশব বলতে যা জানা যায়, শিশুকাল যেমন ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত খেলাধুলা করেই কাটে। তারপর বিয়ের খবরাখবর হয়ে যায়, বিয়েও হয়ে যায়। সংসারের চিন্তা-ভাবনায় পড়ে মেয়েটির ধীরে ধীরে যখন যৌবন আসে, তখনও জীবনের ভালো-মন্দ চিন্তা করতে পারে না।
চরাঞ্চলের নারীদের শৈশব ও কৈশোরের কাজকর্ম : খুব সকালে ঘুম থেকে উঠে ছাগল, ভেড়া, গরু নিয়ে মাঠে চলে যায়। সারা দিন রান্না করার খড়কুটো খুঁজে বেড়ানো, গবাদিপশুর পেট ভরানোর কাজের পর মাকেও সাহায্য করে। তারপর বিকালে সবাই একসঙ্গে বাড়ি ফিরে। এদের সব চিন্তাভাবনা ওই এলাকাকে ঘিরে। খাওয়া-দাওয়া, কাজকর্ম সব জায়গায়ই এরা বৈষম্যের শিকার।
চরাঞ্চলের মেয়েরা যেন অভিশপ্ত জীবন নিয়ে পৃথিবীতে আসে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার কথা কল্পনায়ও ভাবতে পারে না। সরকারি স্কুল থাকলেও অভিভাবকরা মেয়েদের শিক্ষাদানের বিরুদ্ধাচরণ করেন।
চরাঞ্চলের নারীদের সংসার জীবন : মানুষ যখন জীবনের সুন্দর সময়ে সুন্দর স্বপ্ন দেখতে শুরু করে, ঠিক তখনই এদের জীবন সংসারে যেতে হয়। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত, প্রকৃতি, সমাজ-সংসারের অনুশাসন, যা তাদের মানতেই হবে। আমরা সমাজের বুদ্ধিজীবী মানুষ কি ইচ্ছা করলে এ চরাঞ্চলের কিশোরীদের জন্য কিছু করতে পারি না? রাষ্ট্রের তো অনেক শক্তি। রাষ্ট্র তো অনেক রকম উদ্যোগ নিতে পারে; যাতে সমাজের মূল স্রোতে পা বাড়াতে পারে আমাদের চরাঞ্চলের প্রান্তিক নারী।
লেখক : সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, ইসলামপুর, জামালপুর
