ইসরাইল সরলেই দায়িত্ব নেবে গাজার পুলিশ
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সংগৃহীত ছবি
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ইসরাইলের সেনারা সরলেই গাজায় দায়িত্ব নেওয়া শুরু করবে পুলিশ। শুক্রবার গাজার পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীর এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন-কর্মকর্তারা ‘নাগরিকদের সেবা ও সহায়তা এবং সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব পালন করবেন’। ফিলিস্তিনিদের সতর্কবার্তা দিয়ে তারা আরও বলেন, ‘আমরা নাগরিকদের তাদের বাড়িঘর এবং আবাসিক এলাকায় ফিরে যাওয়ার সময় সন্দেহজনক বস্তু, বিপজ্জনক বর্জ্য এবং অবিস্ফোরিত বোমার উপস্থিতির জন্য অত্যন্ত সতর্ক থাকার আহ্বান জানাচ্ছি’। আল-জাজিরা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে গাজায় বৃহস্পতিবার ‘প্রথম দফা’ যুদ্ধবিরতির পর আংশিক ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের কথা রয়েছে। এ বিষয়ে ইসরাইলি সরকারের একজন মুখপাত্র শোশ বেদ্রোসিয়ান বলেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম পর্যায়ে ইসরাইল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) গাজার ‘প্রায় ৫৩ শতাংশ’ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতির পর গাজায় নিরাপত্তা চায় ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা। মধ্য গাজার একজন বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি নারী বলেছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে তিনি খুব খুশি। তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ বিষয় হলো-আমাদের জন্মভূমিতে, আমরা যে এলাকাগুলোতে বাস করতাম, সেখানে ফিরে যাওয়া।
আমরা আমাদের ভূমিকে ভালোবাসি।’ এরপর তিনি আরও বলেন, ‘যথেষ্ট হয়েছে। ফিলিস্তিনি জনগণ এখন স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা চায়।’
সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরাইল : সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত ডজনখানেক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বাসিন্দারা ধ্বংসস্তূপের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এবং তাদের আশপাশের এলাকার অবশিষ্ট অংশের ছবি তুলছেন। ভিডিওতে একজন ব্যক্তিকে হতাশা নিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘এটিই শেষ এলাকা যেখানে আমরা পৌঁছাতে পারি। আর একটু সামনেই ইসরাইলি সেনাবাহিনী। আপনারা ধ্বংসের মাত্রা দেখুন, তারা সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে।’ কিছু বাসিন্দাকে সে সময় ধ্বংস্তূপের ছবি তুলতে দেখা যায়।
ইসরাইলি বাহিনী বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে সরে যাওয়ায় পর ঘরে ফিরতে শুরু করেছে গাজার বাসিন্দারা। উত্তর ও পশ্চিম গাজা শহরের ফিলিস্তিনিরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই ফিরে যাচ্ছেন। বাসিন্দারা শেখ রাদওয়ান, আল-কারামা এবং বিচ ক্যাম্প এলাকায় প্রবেশ করার সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু ইসরাইলি হামলায় সম্পূর্ণ আবাসিক ভবনগুলো মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। বেশির ভাগ এলাকার অবকাঠামো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে। অনেকে আবার গাজা সিভিল ডিফেন্স দলকে লাশ উদ্ধারে সাহায্য করছিল। সিভিল ডিফেন্স মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বিবিসিকে জানান, শুক্রবার সকালে উত্তর গাজা থেকে আটটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উদ্ধারকারী দলগুলো ‘খুব সীমিত উপায়ে’ অন্যান্য এলাকায় অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা শহর এবং উত্তর থেকে বাস্তুচ্যুত প্রায় ৭ লাখ মানুষ এখন অধীর আগ্রহে বাড়ি ফেরার অপেক্ষা করছে। আলা সালেহ নামে এক বাস্তচ্যুত শিক্ষক বলেন, ‘আমার বাড়ি এক বছর আগে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমি ধ্বংসস্তূপের ওপর একটি তাঁবুতে থাকছিলাম এবং আমি আবার ফিরে গিয়ে আমার তাঁবু স্থাপন করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কেবল পুনর্নির্মাণ করতে চাই যা আমাদের গ্রীষ্মের তাপ বা শীতের ঠান্ডা থেকে রক্ষা করে। আমরা এখন তাঁবুতে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি।’
হামাসের স্নাইপার হামলায় ইসরাইলি সেনা নিহত : গাজা শহরে হামাসের স্নাইপার হামলায় একজন আইডিএফ রিজার্ভিস্ট সৈনিক নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী (আইডিএফ)। নিহত সৈনিকের নাম সার্জেন্ট ফার্স্ট ক্লাস (রেজি.) মাইকেল মোর্দেচাই নাচমানি। বয়স হয়েছিল ২৬ বছর। তিনি ৬১৪তম কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নের একজন টেকনোলজি অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স কর্পস সৈনিক।
