মামদানি জোয়ারে রমরমা নিউইয়র্কের ধাবা-টং দোকান
শুধু রাজনীতি নয় বদলে যাচ্ছে খাদ্যাভ্যাসও
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জোহরান মামদানি। ছবি: সংগৃহীত
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
দায়িত্ব নেওয়ার আগেই নিউইয়র্কের খাবার সংস্কৃতিতে অনন্য এক আলোড়ন তুলেছেন নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। ৩৪ বছর বয়সি এই রাজনীতিকের জয় মার্কিন রাজনীতিতে যেভাবে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে তেমনই খাবারকেন্দ্রিক ব্যবসাগুলোতে এনে দিয়েছে নতুন প্রাণ। ভোটের আগের ব্যতিক্রমী প্রচারণার জোয়ারে রমরমা হয়ে উঠেছে নিউইয়র্কের ধাবা-টংয়ের
দোকানগুলো। বিবিসি। নিউইয়র্কের অন্য সাবেক মেয়রদের মতো বড় বড় ফাইভ-স্টার হোটেলে প্রচারণা চালাতে যাননি মামদানি। এর বদলে তিনি বেছে নিয়েছেন রাস্তার পাশে গড়ে ওঠা ছোট ছোট দোকানগুলো। অধিকাংশই অভিবাসীদের। প্রচারণায় অভিজাত হোটেলগুলোতে না গিয়ে এসব ছোট দোকানগুলোতে যাওয়া-আসা-খাওয়ায় তাদের তৈরি খাবারগুলোর বিক্রি এখন তুঙ্গে! ঢিমে তালে চলা অনেক ব্যবসায়ী এখন ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন; লাভবান হচ্ছেন। এর আগে শহরটির সাবেক মেয়র এরিক অ্যাডামস যেতেন ‘জিরো বন্ড’ কিংবা ‘ওস্টেরিয়া লা বাইয়া’র মতো ধনী গ্রাহককেন্দ্রিক ক্লাব ও রেস্তোরাঁগুলোতে। মামদানি পুরো উলটোটা। তিনি মাঝরাতে কাবাব কিংবা বিরিয়ানি খেতে অ্যাস্টোরিয়ার সামিস কাবাব হাউজে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আড্ডা দিতেন। আমজনতার প্রতি তার এই আন্তরিকতাই দিনশেষে জয়ী হতে সাহায্য করেছে মামদানিকে। খাবার সমালোচক মেলিসা ম্যাককার্ট বলেন, ‘মামদানি যেন শহরের আড়ালে থাকা রেস্তোরাঁগুলোকে আলোর সামনে তুলে এনেছেন। তার কারণেই গ্রাহক বাড়ছে রেস্তোরাঁগুলোর।’ দ্য নিউইয়র্কারের সঙ্গে এক ভাইরাল সাক্ষাৎকারে মামদানিকে তার প্রিয় তিনটি খাবার রেস্তোরাঁর নাম জানতে চাওয়া হয়। সে সময় তিনি বলেন, কাবাব কিংয়ের বিরিয়ানি ও পান, জায়ারার ল্যাম্ব আদানা লাফা, লেমনেড ও হুমাস এবং পাই বোট নুডলের মশলাদার কোই নুর। সাক্ষাৎকারটি প্রচারের পর পরই এসব রেস্তোরাঁয় গ্রাহক বেড়ে গেছে চোখে পড়ার মতো। পাই বোট নুডলের মালিক চিতফল সিরিবুন বলেন, ‘ভিডিওর পর থেকেই নতুন গ্রাহকের ঢল নেমেছে। আমাদের মতো ছোট দোকানকে এ পর্যন্ত কোনো রাজনীতিবিদ এভাবে তুলে ধরেননি।’ নিউইয়র্কের হাজারো স্ট্রিট ফুড ব্যবসায়ী বিশেষত হালাল কর্মীরা বহুদিন ধরেই সীমিত পারমিট, ব্ল্যাকমার্কেট ফি, আর আইস ইস্যু নিয়ে ভুগছেন। অনেককেই বছরে ২০০ ডলারের পারমিটের বদলে ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত গুনতে হয় কালোবাজারে। এ সমস্যা সমাধানেও মামদানি কাজ করবেন বলে কথা দিয়েছিলেন প্রচারণায়। স্ট্রিট ভেন্ডর প্রজেক্টের উপপরিচালক কারিনা কাউফম্যান গুতিয়েরেজ বলেন, ‘মামদানি প্রথম রাজনীতিবিদ যিনি সরাসরি হালাল কার্টে গিয়ে কথা বলেছেন।
তাকে আমরা সত্যিকার অর্থেই খাবার ব্যবসায়ীদের সহযোগী হিসাবে দেখছি।’ নিউইয়র্কের হসপিটালিটি অ্যালায়েন্সের পরিচালক অ্যান্ড্রু রিজি বলেন, ‘খাবারের প্রতি তার ভালোবাসা প্রশংসনীয়। তবে বাস্তবে তিনি এখন কী ব্যবস্থা নেবেনে, কত জরুরি নীতি বাস্তবায়ন করতে পারবেন- সেটাই দেখার বিষয়।’
