মাদুরোর পাশে পুতিন-লুকাশেঙ্কো
ভেনিজুয়েলার আরও তেলবাহী ট্যাংকার আটকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত চাপের মধ্যেই ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানালেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। ক্রেমলিন জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার ফোনে ভেনিজুয়েলার নেতাকে জানান, তিনি মাদুরো সরকারের নীতিকে সমর্থন করছেন। একই দিনে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ১৭ দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো মস্কোয় নিযুক্ত ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্রদূত হেসুস রাফায়েল সালাজার ভেলাসকেজের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিবিসি।
একাধিক সূত্রের বরাতে রয়টার্সকে জানিয়েছে, মাদুরো গত ২১ নভেম্বর ট্রাম্পকে ফোনে জানিয়েছিলেন, পরিবারসহ তাকে যদি পূর্ণ আইনি দায়মুক্তি দেওয়া হয়, তাহলে তিনি ভেনিজুয়েলা ছাড়তে প্রস্তুত। বেলারুশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বেলটা জানিয়েছে, গত ২৫ নভেম্বর লুকাশেঙ্কো সেই রাষ্ট্রদূতকে বলেছিলেন, মাদুরো বেলারুশে সবসময় স্বাগত এবং এখন তার সফরের উপযুক্ত সময়। লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘আমরা একমত হয়েছিলাম যে কিছু বিষয় সমাধানের পর আপনি (রাষ্ট্রদূত) আবারও আমার সঙ্গে দেখা করবেন, যাতে আমরা আমাদের সক্ষমতার মধ্যে থেকে একটি যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারি। প্রয়োজনে আমরা তখন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্টকেও এর সঙ্গে যুক্ত করব।’ রয়টার্স লুকাশেঙ্কোর দপ্তরের কাছে এসব বৈঠকের তাৎপর্য এবং মাদুরো পদত্যাগ করলে বেলারুশ তাকে আশ্রয় দিতে আগ্রহী হবে কি না-এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়েছিল।
তবে কোনো সাড়া পায়নি বার্তা সংস্থাটি। এ বিষয়ে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে বলা হয়, ফোনালাপে ভেনিজুয়েলার ওপর বাড়তে থাকা বহিরাগত চাপের মুখে ‘জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মাদুরো সরকারের নীতিকে’ পুনরায় সমর্থন জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর আগে বুধবার ভেনিজুয়েলার উপকূল থেকে বিশালাকৃতির একটি ট্যাংকার জাহাজ জব্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্যাংকার জব্দের ব্যাপারে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, ‘আমরা এ মাত্র ভেনিজুয়েলা উপকূলে একটি ট্যাংকার জব্দ করেছি-বড় ট্যাংকার, খুবই বড়, জব্দকৃত ট্যাংকারের মধ্যে সবচেয়ে বড়।’ শুক্রবার রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেনিজুয়েলার তেল পরিবহণকারী আরও ট্যাংকার আটকানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর অংশ হিসাবেই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে দেশটি। আগরে দিন বৃহস্পতিবার, মাদুরোর তিন ভাতিজাসহ আরও কয়েকজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন ঘটনায় ভেনিজুয়েলার সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় শুক্রবার বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা এবং বাজারের সতর্ক মনোভাবে দাম এখনো সাপ্তাহিকভাবে পতনের দিকেই রয়েছে। এদিন ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ৪৩ সেন্ট বা ০.৭০ শতাংশ বেড়ে ৬১.৭১ ডলারে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডও ৪৩ সেন্ট বা ০.৭৫ শতাংশ বেড়ে ব্যারেলপ্রতি ৫৮.০৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসন ২০১৩ সাল থেকে ক্ষমতায় থাকা মাদুরোকে ভেনিজুয়েলার বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসাবে স্বীকৃতি দেয়। গত বছর তিনি যে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা সরকার তা ভুয়া নির্বাচন বলে বাতিল করেছে। তবে স্বাধীন পর্যবেক্ষকদের মতে, বিরোধী প্রার্থীরা বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছিল। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় ট্রাম্প দেশটির ওপর চাপ বাড়িয়েছেন, বিশেষ করে ক্যারিবীয় অঞ্চলে ব্যাপক সামরিক জোরালো উপস্থিতির মাধ্যমে। গত সপ্তাহে পলিটিকোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, মাদুরোর সময় ফুরিয়ে আসছে।
