|
ফলো করুন |
|
|---|---|
একেবারে উলটো হয়ে পড়ে আছে একটি বিমান। ভেঙে গেছে ডানা। লেজটিও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জেট ফুয়েলের গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে বাতাসে। কোনো রকমে বিমানের ভেতর থেকে বেরিয়ে জীবন বাঁচানোর জন্য ছুটছেন যাত্রীরা। চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। ভর দুপুরেও হাড়কাঁপানো শীত। শুভ্র তুষারে ঢাকা টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আকাশ থেকে দেখলে পুরো রানওয়েটা যেন বিশাল কাশফুলের মাঠ। এর মধ্যেই দানবের মতো বিকট আওয়াজ তুলে রানওয়ের দিকে নেমে আসে বিমানটি। ঠিকঠাকই চলছিল সবকিছু। গোল বাধল অবতরণের সময়। হঠাৎ রানওয়ের সঙ্গে ধাক্কা খায় ডেলটা ফ্লাইট ডিএল-৪৮১৯ বিমানটি। বিমানের প্রধান ল্যান্ডিং গিয়ার সাপোর্ট ব্যর্থ হয়ে যায়। জেটের বডি রানওয়েতে পিছলে পড়ে। থামার মুহূর্তে এটি পুরোপুরি উলটে যায়। মেঝেটি ছাদে এবং ছাদটি পরিণত হয় মেঝেতে। সিটে উলটো হয়ে ঝুলতে থাকেন যাত্রীরা। সাধারণ ভ্রমণ পরিণত হয় জীবন-মরণ লড়াইয়ে। এই ঘটনায় ৮০ জন যাত্রীর কেউ মারা যাননি। আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে যান তারা। তবে ২১ জন আহত হন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তীব্র শীতকালীন আবহাওয়াই হতে পারে এ দুর্ঘটনার মূল কারণ। বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের শহর মিনিয়াপোলিস থেকে টরন্টো পৌঁছেছিল। এতে ৭৬ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের বিমান চলাচল ও নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার (এফএএ) লাইসেন্সপ্রাপ্ত পাইলট ড্যান রোনান জানান, বিমানটি রানওয়ের সঙ্গে ধাক্কা খায় এবং পরে উলটে যায়। মার্কিন সংবাদ সংস্থা টিএমজেডের প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, ল্যান্ডিংয়ের সময় বিমানের একটি অংশে আগুন ধরে। যা নেভানোর জন্য ফায়ারফাইটাররা দ্রুত ছুটে আসেন। বিমানের যাত্রীরা কীভাবে বেঁচে গেলেন তা সত্যিই আশ্চর্যজনক। ড্যান রোনান বিবিসিকে বলেছেন, বিমানের দেহটি পুরোপুরি অক্ষত থাকার কারণে বেঁচে থাকা সম্ভব হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিবহণ নিরাপত্তা বোর্ডের (এনটিএসবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ১৩০৬টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ২৪৯টি মারাত্মক দুর্ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। আর ১০৫৭টি ছিল কম মারাত্মক। এ বছরের সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা হলো ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১। ১২ জুন ২৪২ জন ক্রু ও যাত্রী নিয়ে আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরেই দুর্ঘটনার শিকার হয়। মাত্র একজন যাত্রী বেঁচে যান -বিবিসি, সিএনএন।
