আন্দোলনের ডাক ইমরান খানের
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
পাকিস্তানজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান। নতুন তোশাখানা (রাষ্ট্রীয় উপহার) মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে এ আন্দোলনের আহ্বান জানান তিনি। একই সঙ্গে এই রায়ের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে আপিল করার ঘোষণাও দিয়েছেন খান। শনিবার পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) একটি বিশেষ আদালত খান ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ওই কারাদণ্ড দেন। ডন।
বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে আছেন খান। কারাগারে থাকায় নিজস্ব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সুযোগ নেই তার। তবে এক্সে খানের আইনজীবী একটি কথোপকথনের বিবরণ প্রকাশ করেছেন। যেখানে খান বলেন, তিনি খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী সোহাইল আফ্রিদিকে রাজপথে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। নিজেদের অধিকার আদায়ে পুরো জাতিকে জেগে ওঠার আহ্বান জানান তিনি। আইনজীবীর মাধ্যমে দেওয়া বার্তায় তিনি আরও বলেন, এই মামলার রায় তাকে অবাক করেনি। তবে তিনি তার আইনি দলকে রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। খানের দাবি, গত তিন বছরে দেওয়া রায়ের মতো তোশাখানা-২ মামলার রায়ও ভিত্তিহীন ও পূর্বপরিকল্পিত। কোনো প্রমাণ ছাড়াই, আইনগত শর্ত পূরণ না করেই তড়িঘড়ি এই রায় দিয়েছেন বিচারক। এমনকি তার আইনজীবীদের কথাও শোনা হয়নি বলেও অভিযোগ করেন খান। এই সাজাকে ‘স্পষ্টতই অসাংবিধানিক, অবৈধ, বিদ্বেষপূর্ণ এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জঘণ্য উদাহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছে পিটিআই। দলটির নেতারা অভিযোগ করেন, খানের কারাবাস দীর্ঘায়িত করতেই এই রায় দেওয়া হয়েছে। যাতে আতঙ্কিত শাসকগোষ্ঠী সাময়িক স্বস্তি পায়। পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা ওমর আইয়ুব এক্সে লিখেছেন, ‘পাকিস্তানে আইনের শাসন বলে কিছুর অস্তিত্ব নেই।’ এদিকে এই রায়ের কড়া সমালোচনা করে খানের বোন আলিমা খান বলেন, তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে দেওয়া সিদ্ধান্তগুলো একটি ‘পূর্বলিখিত চিত্রনাট্য’ অনুযায়ী দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, খান ও তার স্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করার আগে আদালত যথেষ্ট প্রমাণ পর্যালোচনা করেছেন। রায়টি সুষ্ঠু হয়েছে বলে জানান তিনি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ মামলা ইতালির বিখ্যাত ব্র্যান্ড বুলগারির একটি ‘জুয়েলারি সেট’ কেনার সঙ্গে সম্পর্কিত। ২০২১ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন খান সরকারি সফরে সৌদি আরবে গেলে দেশটির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তাকে বহুমূল্যের ওই জুয়েলারি সেট উপহার দেন। দুবাইয়ের এক ব্যবসায়ী দাবি করেন, বিদেশ থেকে ইমরানের উপহার পাওয়া ঘড়ি তিনি ২০ লাখ ডলারে কিনে নিয়েছিলেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খানকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। এখন তাকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দিলেন আদালত। এছাড়া উভয়কে ১ কোটি ৬৪ লাখ রুপি জরিমানাও করেছেন আদালত। এই দণ্ড খানের দীর্ঘ আইনি জটিলতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন খান।
