কয়েদির স্মৃতিচারণ
পুরো মিসরই এখন একটা কারাগার
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারি ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রায় আড়াই বছর। কারাগারের সঙ্কুচিত নোংরা, জনাকীর্ণ সেলেই হতো নাওয়া-খাওয়া, সব। ৩২ জন লোক ২৫০ বর্গফুটের সেলটিতে কাটিয়েছেন মানবেতর জীবন।
মাটিতে একটি গর্ত, আর মাথার উপরে পানির সরু ফোয়ারা। সেখানেই হতো গোসল আর প্রাকৃতিক গুরু কাজ।
এই দম বন্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়ে প্যারিসে এসেই র্যামি শাথ বললেন, ‘আমরা তো ছিলাম ছোট একটি সেলে। পুরো মিসরই একটি বড় কারাগার’। এএফপি, আলজাজিরা।
মিসরীয়-ফিলিস্তিনি ৫০ বছর বয়সি রামি মিসরে ২০১১ সালে বিদ্রোহের একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে বয়কট ও নিষেধাজ্ঞা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী। একটি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সহায়তা করার অভিযোগে রামি শাথকে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
মুখ বন্ধ রাখার শর্তে মিসরীয় কর্তৃপক্ষ তাকে মুক্তি দেওয়ার পর ফ্রান্সে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি। মুখ খুললে সপরিবারে ‘নিশ্চিহ্ন’ হওয়ার হুমকি সত্ত্বেও মুখ না-খুলে পারেননি তিনি। বলেছেন যতই প্রাণনাশের হুমকি আসুক, ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তিনি। এএফপির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সবিস্তারে শাথ বলেছেন তার জেল-অভিজ্ঞতার গল্প। ‘আক্ষরিক অর্থেই একটি সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে মিসর’ জানান শাথ। বলেন, ‘কারাগারে ঢোকানোর জন্য কোনো কারণের দরকার হবে না। তারা যদি চায় আপনাকে আটকে রাখবে, তাহলেও কারাগারে ঢোকাতে তাদের ইচ্ছাই যথেষ্ট। আর এ কারণেই হাজার হাজার নিরীহ মিসরীয় ওই নরকে পচে মরছে।’ এই প্রতিবাদী বিশ্বাস করেন, ওয়াশিংটনে ট্রাম্প প্রশাসনের মধ্যস্থতায় ইসরাইল এবং আরব দেশগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতার বিরুদ্ধে তার বিরোধিতাই ছিল তাকে গ্রেফতারের চূড়ান্ত ট্রিগার।
মিসরের দমনমূলক ও রক্তাক্ত শাসনকে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেন শাথ। এখনো উন্নত, আরও মানবিক মিসরের প্রত্যাশা করেন-যেখানে তিনি ফিরে যেতে পারেন। এখনো তিনি আশা করেন, মানবাধিকারের বাস্তব প্রতিফলন শুধু তার একার নয়, সব মিসরীয়র জন্য একটি শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করবে।
