Logo
Logo
×

দশ দিগন্ত

গাজার জ্ঞান-বিজ্ঞানের বাতিঘর এখন শরণার্থী শিবির

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০১ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চলতি বছরের ২২ মার্চ। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই তুমুল ঝড় শুরু হয় গাজার বেইত হানুনে। এ বিপর্যয়ের মধ্যেই বাড়ি থেকে তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে পড়েন ৬০ বছর বয়সী ওমর আল-জা’আনিন। একা নন, সঙ্গে নেন পরিবারের বাকি ছয় সদস্যকেও। স্ব-পরিবারেই ছুটে যান ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে। একটু আশ্রয়ের খোঁজে। শুধু আল-জা’আনিনই নন, ইসরাইলের ভয়ঙ্কর থাবা থেকে বাঁচতে বেইত হানুন থেকে পালিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন গাজার পশ্চিমের ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। এক সময় শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকা গাজার সেই জ্ঞান-বিজ্ঞানের বাতিঘর এখন শরণার্থী শিবির।

ইসরাইলি তাণ্ডব থেকে রক্ষা পায়নি বিশ্ববিদ্যালয়টি। ধ্বংস হয়ে গেছে ভবনগুলো। দুমড়ে-মুচড়ে গেছে শিক্ষার্থীদের পড়ার টেবিলগুলোও। সেই ধ্বংস স্তূপেই মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে নিয়েছেন গাজার বাসিন্দারা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের জন্য কিছুটা নিরাপদ বিকল্প বলে মনে করেন আল-জা’আনিন। তবে সেখানে খাদ্য পানির চরম সংকটে দিন পার করছেন তারা। আল-জা’আনিন বলেছেন, ‘প্রতিটি দিন শুরু হয় কীভাবে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা যায় এবং রুটি তৈরি করা যায় সেই চিন্তাভাবনা দিয়ে। আমরা সাহায্যের উপর বেঁচে আছি। আমাদের কোনো আয় নেই। যা কিছু আছে সবকিছুই অত্যন্ত ব্যয়বহুল।’ তিনি আরও বলেছেন, আমাদের চারপাশে বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে আমাদের মৃত্যু হতে পারে। আমি বিশ্বকে মানবিক দৃষ্টিতে আমাদের দিকে তাকাতে, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এবং আমাদের সন্তানদের সঙ্গে বসবাসের সুযোগ করে দিতে অনুরোধ করছি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে আল-জা’আনিন বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আমাদের সন্তানদের শিক্ষিত করার জায়গা। বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়স্থল নয়। কিন্তু কিছু করার নেই। দেড় বছর ধরে যথাযথ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত গাজার তরুণরা। বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলো ধসে পড়া লেকচার হলো এবং শ্রেণিকক্ষে তাঁবু টাঙিয়ে থাকার ব্যবস্থা করেছে। জ্বালানি না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি থেকে বই নিয়ে রান্নার কাজে ব্যবহার করছে। ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া আট সন্তানের জননী সুহাম নাসির বলেছেন, সেখানে জ্বালানি সংকট থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরা খাবার গরম করতে ও পানি ফুটাতে একাডেমিক বই সংগ্রহ করে তা পুড়িয়ে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন।

যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবারও হামলা শুরু করে ইসরাইল। বুধবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গাজার বিভিন্ন স্থানে হামলায় নিহত হয়েছেন ২৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৯ জনে। বুধবারের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলাটি ছিল নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে। ইসরাইলের বোমা হামলায় ভূমিকম্পের মতো কেঁপে ওঠে নুসেইরাত। মুহূর্তে ধসে যায় এক ভবন। নিহত হয় ৮ জন। বেইত হানুনে এলোপাতাড়ি গুলি ও ট্যাংক হামলা চালায়। পশ্চিম গাজার শুজাইয়াতে চালায় ড্রোন হামলা।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম