পহেলগাঁও হামলা
মোদির বিহার জয়ের নাটক
বন্দি ৫৬ পাকিস্তানিকে ফাঁসানোর ছক * ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো মিথ্যা প্রচারণা ছড়াচ্ছে : অর্চনা তিওয়ারি
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সাম্প্রতিক হামলাকে ঘিরে ভারতজুড়ে উঠেছে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্ক। বিরোধী দলগুলোর অভিযোগ, পহেলগাঁওয়ের হামলাটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পরিকল্পিত একটি ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’। যার উদ্দেশ্য আসন্ন বিহার নির্বাচনে রাজনৈতিক ফায়দা তোলা। দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল ও বিশ্লেষকরাও এ ঘটনার নেপথ্যে সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। যা আরও বাড়িয়ে তুলছে বিতর্কের ঝড়। তাদের সবার একই ভাষ্য-পহেলগাঁওয়ের হামলার ঘটনা মোদির বিহার জয়ের জন্য একটি সাজানো নাটক। এপি।
ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) মোদির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বিহারের পাটনায় মোদি এবং মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে ব্যঙ্গাত্মক ব্যানার টাঙানো হয়েছে। একজন প্রবীণ ভারতীয় সাংবাদিক প্রশ্ন তুলে বলেছেন, পহেলগাঁওয়ে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটার মাত্র ৪৫ ঘণ্টার মধ্যে আপনি (মোদি) বিহারে ভোট চাইতে চলে এলেন, এটা কি মানবিক?’ দেশটির বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, যখন পুরো দেশ পহেলগাঁওয়ের ঘটনার শোক পালনে নিমগ্ন তখন মোদি তার নির্বাচনি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সাধারণ মানুষের মধ্যেও এ ধারণা জোরালো হচ্ছে যে পহেলগাঁওয়ের ঘটনাটি মোদির বিহার নির্বাচনি কৌশলের অংশ। একজন বিশ্লেষক মন্তব্য করেছেন, ‘মোদির বক্তব্য স্পষ্টতই ইঙ্গিত দেয় যে তিনি পহেলগাঁওয়ের ঘটনাকে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার জন্য ব্যবহার করছেন।’ কিছু রাজনৈতিক ভাষ্যকার আরও দাবি করেছেন, পহেলগাঁওয়ের হামলাটি সম্ভবত পূর্বপরিকল্পিতভাবে নির্বাচনি সময়সূচির সঙ্গে মিলিয়ে করা হয়েছে। এদিকে অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে প্রাণঘাতী হামলা নিয়ে ভারতীয় সংবাদ চ্যানেলগুলো নিরলসভাবে মিথ্যা প্রচারণা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশটির সিনিয়র সাংবাদিক অর্চনা তিওয়ারি। কাশ্মীর হামলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে স্থানীয়দের বক্তব্য এবং সরকারি বর্ণনায় আকাশ-পাতাল ফারাক খুঁজে পেয়েছেন বলেও দাবি করেছেন অর্চনা। একজন কাশ্মীরি ড্রাইভার অর্চনা তিওয়ারির কাছে তথ্য প্রকাশ করে বলেছেন, ভারতীয় সংবাদ চ্যানেলগুলো নিরলসভাবে মিথ্যা প্রচারণা ছড়াচ্ছে। সত্য উন্মোচনের জন্য ওই ড্রাইভারের কথা রেকর্ড করেছিলেন অর্চনা।
এদিকে এ হামলায় ৫৬ পাকিস্তানি বন্দিকে ফাঁসানোর ছক কষছে ভারত-এমন বিস্ফোরক তথ্য উঠে এসেছে নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্রে। সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে অন্তত ৫৬ জন পাকিস্তানি নাগরিক ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর বেআইনি হেফাজতে রয়েছেন। যাদের কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই বিভিন্ন কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। এই বন্দিদের ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে সাজানো সংঘর্ষের দায়ে হত্যা করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো, এদের পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশকারী ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে উপস্থাপন করে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সীমান্ত পারাপারের আগ্রাসনকে বৈধতা দেওয়া এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে পাকিস্তানবিরোধী প্রচারণা জোরদার করা। এর আগেও আইএসপিআরের মহাপরিচালক একাধিকবার অবৈধভাবে আটক পাকিস্তানি নাগরিকদের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেছেন। যা এই সাম্প্রতিক অভিযোগগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতাকে আরও জোরালো করে।
ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে সেনা অভিযানের প্রস্তুতির অংশ হিসাবে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। শনিবার ‘আবদালি’ নামের স্বল্পপাল্লার এ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় দেশটি।
